যুক্তরাষ্ট্রে পিপিই সঙ্কট যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’

0
114

বাংলা খবর ডেস্ক:
করোনা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর থাবা বসিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে প্রায় একশ জনের মতো নার্স মৃত্যুবরণ করেছেন। আরো শত শত নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করায় দেশটির স্বাস্থ্যসেবা প্রায় ভেঙে পড়েছে। এই মহামারির সময় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া নার্সরা রয়েছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। এমন অবস্থায় দেশটিতে পিপিই সঙ্কট যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ নার্সরা জানিয়েছেন, তাদের কভিড-১৯ রোগের কোনো পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) পুনরায় ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। কভিড-১৯ রোগীদের যত্ন নেওয়ার সময় ত্বক বা পোশাক উন্মুক্ত করতে হচ্ছে। দেশটিতে করা এক গবেষণায় এই তথ্য জানিয়েছেন তারা।

কভিড-১৯ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এই ধরনের আচরণ বিপজ্জনক স্বাস্থ্যসেবা কর্মক্ষেত্রে এখন প্রথাসিদ্ধ আচরণে পরিণত হয়েছে। গবেষণা পরিচালনা করা সংস্থাটি এই তথ্য জানিয়েছে।

গবেষণা চলাকালে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্য এবং ওয়াশিংটন ডিসির ২৩ হাজারেরও বেশি সেবিকাদের তাদের কাজের পরিস্থিতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়। ১৫ এপ্রিল থেকে ১০ মের মধ্যে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছিল। ন্যাশনাল নার্স ইউনাইটেড পরিচালনা করে এই গবেষণা। গবেষণায় ইউনিয়ন ও নন-ইউনিয়নভুক্ত নার্সদের প্রশ্ন করা হয়েছিল।

গবেষণায় উঠে আসে ভয়ঙ্কর তথ্য। বলা হয়, করোনা আক্রান্তের কি-না তা জানতে ৮৪ শতাংশ নার্সদের পরীক্ষাই করা হয় না। ৮৭ শতাংশ নার্সদের এক জনের ব্যবহারের জন্য নকশা করা পিপিইগুলো বারবার পরতে বাধ্য করা হচ্ছে। আর করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করার সময় ৭২ শতাংশ নারীর ত্বক বা পোশাক উন্মুক্ত করতে হচ্ছে।

গবেষণায় আরো দেখা গেছে, করোনা টেস্ট করিয়েছেন এমন নার্সদের মধ্যে পাঁচ শতাধিক সেবিকার শরীরে করোনা পাওয়া গেছে। আরো পাঁচশজন করোনার টেস্ট করার পর ফলাফলের জন্য অপেক্ষ করছেন।

ন্যাশনাল নার্সেস ইউনাইটেডের নির্বাহী পরিচালক বনি ক্যাস্তিলো বলেন, রোগীদের সেবা করার জন্যই নার্সরা নিবন্ধন করেছেন। মহামারির সময়ে অকারণে মারা যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেননি। নিয়োগকর্তা ও ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে আমাদের স্পষ্ট বার্তা হলো, আমাদের জন্য, জনসাধারণের জন্য পিপিই দিন।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল নার্সেস ইউনাইটেডের প্রেসিডেন্ট জ্যান রস বলেছেন, কয়েক বছর ধরে আমরা জানি, আমরা পিছিয়ে রয়েছি। আমাদের যা প্রয়োজন তা আমরা করতে পারনি বিষয়টা এমন নয়; কারণটা হলো আমরা এই গ্রহের সবচেয়ে ধনী দেশ, আমাদের লোভের কারণে এবং রোগীদের কল্যাণে নিয়ে ভাবে না এমন লাভজনক ব্যবস্থার কারণে উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। এই কারণেই সম্ভবত শ্রমিকদের কল্যাণে নিয়ে ভাবা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরো বলেন, বেশিরভাগ উন্নত দেশগুলোর তুলনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা নেই। মূলত কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত বেসরকারি হাসপাতাল এবং বীমাগুলোর ওপর নির্ভর করা একটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।

সূত্র: গার্ডিয়ান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here