করোনায় ১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়েছে – ডা. ফেরদৌস: অভিযোগ ইলিয়াসের

0
155

বাংলা খবর ডেস্ক:
প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসক ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার জানিয়েছেন, করোনা মোকাবেলা করতে গিয়ে তাঁর এমনও দিন গেছে- ১৮ ঘণ্টার মতো কাজ করতে হয়েছে। গতকাল রবিবার দিবাগত রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ বিষয়টি জানান। পাঠকের জন্য তাঁর স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-

‘একটু বিশ্রাম পেলাম। আমার জীবনটাকে বরাবরই একটা নিয়মের মধ্যে পরিচালিত করেছি। আমি এক জীবনে কখনোই নিয়মের বাইরে যাইনি। তবে সবসময়ই কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। পরিশ্রমকে ভয় পাইনি। পড়াশোনার প্রতি আমার ভালোলাগা সব সময়। সেইসঙ্গে সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত রেখেছি। ছাত্র অবস্থায় যেমন, কর্মজীবনেও তাই। হিসাব করে দেখেছি, দিনে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টার বেশি ঘুম আমার কখনোই হয়নি। কাজ, কাজ আর কাজ। এই বয়সেও নিয়মিত নানা বিষয়ে পড়াশোনা, চিকিৎসা পেশা, সেইসঙ্গে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

তিনি আরও লেখেন, সাধারণত খুব সকালে ঘুম থেকে উঠি আমি। নিয়মিত জিম করি। এরপর ব্যস্ততম এক একটি দিন শুরু হয়। দিনভর কাজে ক্লান্তি ভর করে। বিশ্রামের সময় খুব কমই পেয়েছি। এরপর যখন করোনার সময় এলো, তখন পরিস্থিতি আরও বদলে গেলো। এমনও দিন গেছে, যেখানে ১৮ ঘণ্টার মতো কাজ করতে হয়েছে। এমনও হয়েছে ঘুম কি জিনিস, সেটাই যেনো ভুলে গিয়েছিলাম। জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করেছি, মানুষের জন্যে কাজ করার প্রয়াস থেকে। সবসময়ই মনে হতো, মানুষের জন্যে যদি আর একটু বেশি কিছু করতে পারতাম? এই তৃষ্ণা যেনো মেটে না। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ভালোবাসা নিয়ে বলেছি, আমি আছি। নিজের সাধ্য অনুযায়ী যতটা পেরেছি, করেছি।

ডা. ফেরদৌস খন্দকার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে জানান, বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করতে আসার পর, নিয়ম মেনেই আমাকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আমিও নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই কোয়ারেন্টিনের দিনগুলো কাটিয়ে দিচ্ছি। মনে হচ্ছে, অবশেষে বোধ হয় একটু বিশ্রামের সুযোগ পেলাম। এখানে খুব ভালো দিন কাটছে আমার। আশপাশে থাকা মানুষগুলো অসাধারণ। তাদের মমতা আমাকে মুগ্ধ করছে। দিনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ঘুমাচ্ছি। বন্ধুদের সঙ্গে ডিজিটাল আড্ডা হচ্ছে। প্রচুর পড়াশোনা করছি। খাওয়া-দাওয়া সবকিছু ঠিকঠাক আছে। মনে হচ্ছে, কখনো এমন কোনো উপলক্ষ্ আসে, যেটা হয়তো প্রয়োজন। এই বিশ্রামের সময়টাকে তাই আশির্বাদ বলেই ধরে নিয়েছি। ভবিষ্যত সুস্থ্যতার জন্যে এই বিশ্রামটুকু প্রয়োজন ছিল।

ভয় শুধু একটাই, ওজন যদি বেডে যায়। আমি ভালো আছি। আপনারা সবাই ভালো থাকুন। নিরাপদে থাকুন।’

ডাঃ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে রোগী ইলিয়াসের অভিযোগ

শাহাজাদা ইলিয়াস

ওদিকে নিউইয়র্ক এর জ্যাকসন হাইটস প্রিন্স রেষ্টুরেন্টের মালিক শাহাজাদা ইলিয়াসের গুরুতর অভিযোগ ডাঃ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে। তার এ অভিযোগ উঠে এসেছে নিউইয়র্ক প্রবাসী সাংবাদিক-লেখক দর্পণ কবীরের আজকে দেয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে। হুবহু তুলে ধরা হলো:

‘আজ (১৪ জুন) বিকেলে নিউইয়র্ক শহরের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় গেলে প্রিন্স রেষ্টুরেন্টের মালিক শাহাজাদা ইলিয়াস আমাকে দেখে ধন্যবাদ জানান ডাঃ ফেরদৌস খন্দকারের বিরুদ্ধে ফেসবুকে একটি আলোচিত স্ট্যাটাস পোষ্ট দেয়ার জন্য। আমার এক প্রশ্নের জবাবে ইলিয়াস ক্ষোভের সঙ্গে জানান, গত ১লা এপ্রিল তিনি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হন। এরপর তিনি তার চিকিৎসক ডাঃ ফেরদৌস খন্দকারের সঙ্গে টেলিফোনে অনেকবার যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হন। চিকিৎসকের অফিসে যতবার তিনি ফোন করে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন, ততবার অফিস সহকারী জানিয়েছেন-ডাঃ ফেরদৌস ব্যস্ত আছেন ইউটিউবে নিজের অনুষ্ঠান নিয়ে। ইলিয়াস বলেন, আমার অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছিল। আমার রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে গিয়েছিল। আমার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ নেয়া যাচ্ছিলো না, অথচ ডাঃ ফেরদৌস খন্দকার আমার সঙ্গে কথা বলেননি। তাকে শুধু দেখতাম ফেসবুকে লাইফ অনুষ্ঠান করছেন।ইলিয়াস জানান, চারটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। অনেক ধকল গেছে তার। কিন্তু নিজের চিকিৎসকের কোন সহযোগিতা পাননি সংকটকালে। যা তাকে ভীষণ কষ্ট দিয়েছে, ক্ষুব্ধ করেছে। এমন আরো রোগী আছেন, যারা করোনা পেন্ডামিকের সময় ডাঃ ফেরদৌস খন্দকারের যোগাযোগ করে চিকিৎসা সেবা পাননি বলেও জানান ইলিয়াস। তিনি কয়েকজনের নামও উল্লেখ করেন। অপরদিকে মহিলা রোগীদের বাসায় যেতেন এবং সময় ব্যয় করতেন বলেও তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন।
শাহাজাদা ইলিয়াসের রেষ্টুরেন্ট ডাঃ ফেরদৌস খন্দকারের সন্নিকটে। তিনি অনুরোধ করেন, আমি যেন তার অভিযোগ ফেসবুকে লিখে জানাই। তার ছবি ও সেলফোন নম্বর দিতেও বলেন। যারা এ পোষ্টের সত্যতা জানতে চান, তারা ইলিয়াসকে ফোন করতে পারেন ০০১-৩৪৭-৮২২-৫২০৪ নম্বরে।
শাহাজাদা ইলিয়াসেরও প্রশ্ন-ডাঃ ফেরদৌসকে কারা ‘দেবদূত’ বা ‘সুপার হিরো’ বলেছেন এবং কেন?’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here