বাংলা খবর ডেস্ক:
সরকারি হিসেবে বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস মহামারিতে মারা গেছেন কমপক্ষে ৪ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। কিন্তু এ সংখ্যা কি সত্য? কারণ, এই একই সময়ে মারা গেছেন আরো কমপক্ষে এক লাখ ৩০ হাজার মানুষ। ফলে করোনায় বিশ^জুড়ে কতজন মানুষ মারা গিয়েছেন তার প্রকৃত সংখ্যাটা পাওয়া খুব দুরূহ। তবে এটা বলা যায়, বিভিন্ন দেশের সরকার মৃতের যে সংখ্যা প্রকাশ করছে, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। বিবিসির গবেষণায় এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তারা ২৭টি দেশের স্বাভাবিক সময়ের মৃত্যুহারের সঙ্গে করোনা মহামারিকালের মৃত্যৃর তুলনা করেছেন। তাতে দেখেছেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এসব দেশে সার্বিক মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। গড় মৃত্যুহারের চেয়ে এই তথাকথিত ‘অতিরিক্ত মৃত্যু’ এটাই বলে দেয় যে, করোনা মহামারি সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি।
কারণ, অনেক মানুষ মারা গিয়েছেন। কিন্তু তাদেরকে করোনা রোগী বলে রেকর্ড করা হয় নি। অনেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জটিলতার মধ্যে মারা গেছেন। অনেকে অন্যকোনভাবে মারা গেছেন। ফলে সরকারি হিসাবে এসব মৃত্যু রেকর্ড করা হয় নি।
বিবিসি বলেছে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে মৃত্যুর সরাসরি তুলনা করা খুব কঠিন। করোনা ভাইরাসের ডাটা নির্ভর করে একটি দেশে কি পরিমাণ মানুষকে পরীক্ষা করা হয়েছে তার ওপর। এক্ষেত্রে সরকারগুলো তাদের হাসপাতালের বাইরের মৃত্যুগুলোকে গণনায় আনে কিনা তার ওপরও নির্ভর করে। ফলে বিষয়টি অনেক জটিল।
করোনা ভাইরাস যখন সারা বিশে^ ছড়িয়ে পড়েছে তখন বিভিন্ন সময় এক এক দেশে আক্রান্তের ধরণ এক এক রকম। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সামনের সপ্তাহ ও মাসগুলোতে রেকর্ডেড মৃত্যুর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। আবার কোনো কোনো স্থানে মৃত্যুর মাত্রাটা স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে শুরু করেছে। এতে বলা হয়েছে, ৭ই মার্চ থেকে ৫ই জুন পর্যন্ত বৃটেনে গড় মৃত্যু বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৪৩ ভাগ। স্বাভাবিকের চেয়ে কমপক্ষে ৬৪ হাজার ৫০০ মানুষ বেশি মারা গেছেন। এক্ষেত্রে সরকারি হিসাবে করোনায় মারা গেছেন ৫১ হাজার ৮০৪ জন। অতিরিক্ত মারা গেছেন ১২ হাজার ৭২৯ জন। দীর্ঘ সময় লন্ডন ছিল করোনা ভাইরসের হটস্পট। সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এ সময়ে সর্বাধিক অতিরিক্ত মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে সেখানে। বৃটেনের অন্য অংশগুলোতেও অতিরিক্ত মৃত্যু হয়েছে। ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস এবং নর্থওয়েস্টে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।
১৬ই মার্চ থেকে ১০ ই মের মধ্যে অস্ট্রিয়াতে গড় মৃত্যুহারের চেয়ে শতকরা ১১ ভাগ বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। অর্থাৎ এ সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ১৩০০ মানুষ বেশি মারা গেছেন। ৯ই মার্চ থেকে ১৭ই মে পর্যন্ত বেলজিয়ামে গড় মৃত্যুর হার শতকরা ৩৭ ভাগ বেশি। এ সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৮১০০ মানুষ বেশি মারা গেছেন। ১লা মার্চ থেকে ৩১ শে মের মধ্যে ব্রাজিলে মৃত্যু বেড়েছে শতকরা ৩৮ ভাগ। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এ সময়ে বেশি মারা গেছেন ১৯৩০০ মানুষ।