গাড়ী বিলাস : আমার দেখা ২৫ বছর আর মন্ত্রী মহোদয় যা বললেন

0
84


রেজাউল বায়রন:

প্রকল্প কর্মকর্তাদের গাড়ী বিলাস ,আমার দেখা ২৫ বছর আর মন্ত্রী মহোদয় যা বললেন।
যখন থেকে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ে যাওয়া শুরু করেছি,তা বছর ২৫ তো হবে তখন থেকে দেখে আসছি প্রকল্প মানেই
গাড়ী।
প্রতিবছর ২০০ থেকে ৩০০ নতুন প্রকল্প এডিপি তে ঢুকে পড়ে তার অনন্ত ১০০ যদি সে বছর শুরু হয় ২৫ বছরে কত
গাড়ী কেনা হল?প্রকল্প শেষ হলে সেই গাড়ী গেল কই?
গত কাল মিটিং একজন সচিব মনে হয় প্রশ্ন তোলেন,
প্রকল্প শেষ হলে গাড়ী পরিবহন পুলে জমা হওয়ার কথা,কিন্তু তা হয় না।গাড়ী সব যায় কই?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেলে একটা যুত্সই রিপোর্ট হত, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।তবে পাব কই,কাজটা বেশ কঠিন।
অবশ্য পরিকল্পনা মন্ত্রী গাড়ী বরাদ্দ নিয়ে এডিপি পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বেশ ইন্টারেষ্টিং কথা বলেন ।
তিনি বলেন,ব্রাদার গাড়ীতো থাকবেই ।এটা তো একটা ইন্সট্রুমেন্ট,সরকারের বিধিবিধানে আছে।এটা মুভমেন্ট,পারফরমেন্সের একটা টুল।
তিনি বলেন,একসময় আমাদের ডিসি সাহেবরা ঘোড়ায় চড়ে বা সাইকেলে জেলা শাসন করতেন এখন তো আমরা
উপজেলায় ইউএনও সাহেবদের গাড়ী দেই।
তিনি আরো যেটা বলেন,তবে প্রকল্পের ডিপিপি তে গাড়ীবাবদ বরাদ্দের ক্ষেত্রে ওভার দ্যা ইয়ারস অনেক সংস্কার ও এনেছি।
যেমন একসময় মনে করেন গাড়ী বাবদ ১০ কোটি টাকা
থোক বরাদ্দ রাখা হল।পরে কেনার সময় দেখা গেল টপ বস একাই পাঁচ কোটি টাকার গাড়ী কিনে ফেললেন।
এখন নিয়ম করে দিয়েছি,সেটি চলবে না।কটা গাড়ী ,কোন মডেলের ,সম্ভাব্য দাম কত সবই ডিপিপিতে লিখতে হবে।
আরেক জন কর্মকর্তা তিনি ব্রিফিং এ মন্ত্রীর কথার রেশ ধরে বলেন ,আরো সংস্কার হয়েছে।এখন গাড়ী কেনার পরিবর্তে গাড়ী ভাড়ার অপশনও রাখা হয়েছে।সেটা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী মহোদয়ের এই বক্তব্য নিয়ে আমার খুব বেশী দ্বিমত নেই।
গাড়ী নিয়ে আমাদের টিপ্যিকাল মধ্যবিত্ত মানসে খানিকটা হ্যাপা গোছের ব্যাপার রয়েছে।এই মানসের সেন্টিমেন্টটা এমন যে,গাড়ী হল হরিপদ কেরানির না পাওয়া বেদনার কপালের লাল
টিপ অথবা ঢাকাই শাড়ী অথবা ধনীর দুলালির গলার ২০ ভরি ওজনের সোনার মোকলেস ।
জাপানে আমার ছোট বোন থাকে,ছোট মোট চাকরি করে।সেও গাড়ী চালিয়ে চাকরি করতে ,মার্কেটিং প্রাত্যহিক জীবনের নিত্য কাজে দেদারসে ব্যাবহার করে।এটা কোন বিলাসী মোকলেস নয়,প্রাত্যহিক জীবনের অংশ।রিক্সা বরং সখের অংশ হতে পারে।
তবে প্রকল্প শেষ হওয়ার পর সেই গাড়ীর ম্যানেজমেন্ট নিয়ে
মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন আছে।তার এক্টা এটা কেন ব্যাবহার যোগ্য থাকলে আরেক প্রকল্পে ব্যাবহার করা যাবে না।ব্যাক্তিগত ব্যাবহারে যদি রিকন্ডিশন গাড়ী হরহামেশাই বেচাকেনা হয়,সরকারি প্রকল্পে কেন তা হবে না।তার একটা সমন্বিত মডেল কেন এতদিনে গড়ে তোলা গেল না?
এক সময় প্রকল্পের গাড়ী নিয়ে মিডিয়া বেশ লেখালিখি চোখে পড়ত।এখন আর ততটা চোখে পড়ে না।গাড়ী সমাচার সেই আগের মতই।
সরকার বিশেষ করে আমাদের মত দেশে সরকার ব্যাপারটাই একটু অন্যরকম।সরকার মানে একজন বা ৫০ মন্ত্রি বা সচিব নয়।উপজেলার ইউএনও বা ওসি সাহেব তিনি অংশ।আবার বিধিবিধান তাও সরকারের মস্তবড় অংশ।
সবকিছু মিলে সরকারের চারিপাশে যে আবরন থাকে সেটাও বেশ শ্ক্ত।মানুষ যায় মানুষ আসে,সরকারের আচরন অনেক কিছুই একই থাকে।
সোহেল পারভেজের মত আমাদের তরুন তুর্কি তুহিন শুভ্র অধিকারীর সাথে প্রায় প্রায়ই ঝগড়া হয়।
সে বলে ভাই কিছু হোক আর না হোক আমরা লিখতেই থাকবো ,লিখে যাবো।

লেখক: সাংবাদিক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here