ততটা শক্ত হয়ে ওঠা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না

0
152

সালেহ বিপ্লব:
টুকটাক কথা বলতে শিখেছি, হাঁটতে পারি মোটামুটি। ধপ করে পড়েও যাই যখনতখন। তো পড়ে গেলে বাবা চিৎকার দেন মাকে উদ্দেশ্য করে, এই কই তুমি? বাবুরে ধরো, পইড়া গেছে। বললেই তো আর হয় না! মা তখন হয় রান্নাঘরে, অথবা ঘরের অন্য কাজে ব্যস্ত। ইচ্ছে করলেই তো রান্নাঘর, বাথরুম বা বাগানের কাজ ফেলে আসা যায় না! বাবা বাসায় থাকা মানেই হয় পত্রিকা পড়ছেন, অথবা ফাইলে মুখ গুঁজে কাজ করছেন। বাবার ডাক শুনে মা বলতেন, পড়ুক। পইড়া পইড়া শক্ত হোক।বলতে বলতেই দ্রুত হাতের কাজ সামলে মা চলে আসতেন। কান্না থামে না দেখে বুকে জড়িয়ে বলতেন, আরে বাবা, আপনি কান্দেন ক্যান? আপনি ব্যথা পান নাই তো। মাটি ব্যথা পাইছে। দুষ্ট মাটি, পচা মাটি। ব্যথা পাইছে খুব ভালো হইছে। কান্না থামিয়ে মাকে প্রস্ন করতাম,, থত্তি? আম্মা, থত্তি? মা বলতেন, হ্যাঁ বাবা, সত্যি। আপনি ব্যথা পান নাই। তখন খিল খিল করে হেসে ঘরের মেঝে বা উঠানকে পিটটি লাগাতাম, আর বলতাম, দুত্ত মাতি!! সেই যে পড়ে পড়ে শক্ত হওয়া, এখনও সেটা বন্ধ হয়নি। পড়ে যাই, শক্ত হওয়ার আনন্দে উঠে দাঁড়াই। জীবনের পঞ্চাশতম বর্ষে পা দেয়ার সময় এসেছে। এই সময়ে এসে আজ মনে হচ্ছে, পড়তে পড়তে শক্ত হই, এটা ঠিক। কিন্তু এই পৃথিবীতে যোগ্যা হয়ে বাঁচার জন্য যতোটা শক্ত হওয়া দরকার, ততটা হয়ে ওঠা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না।

লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক আমাদের নতুন সময়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here