আইফেল টাওয়ারের নিচে ২ মুসলিম নারীকে ছুরিকাঘাত

0
85

বাংলা খবর ডেস্ক:
ফাইল ফটোফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারের নিচে এক জাতিবিদ্বেষী হামলায় একাধিকবার ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন দুই মুসলিম নারী। রোববার এ হামলা হয়। এ ঘটনায় দুই শ্বেতাঙ্গ নারীকে হত্যাচেষ্টার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলার সময় তাদের চিৎকার করে ‘নোংরা আরব’ বলতে শোনা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও সিটি প্রসিকিউটরের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে দ্য মেট্রো।

খবরে বলা হয়, গত সপ্তাহের শুক্রবার প্যারিসে এক সন্ত্রাসী হামলায় এক শিক্ষকের শিরশ্ছেদ করে এক মুসলমান যুবক। ওই শিক্ষক এক ক্লাসে তার শিক্ষার্থীদের মহানবী মোহাম্মদ (স.)-এর ব্যঙ্গচিত্র দেখিয়েছিলেন ও এ নিয়ে একাডেমিক আলোচনা করেছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যা করে ওই হামলাকারী। ওই ঘটনার দুই দিনের মধ্যে সন্দেহভাজন জাতিবিদ্বেষী হামলার শিকার হলেন দুই মুসলিম।

ফ্রান্সে মুসলিম অধিবাসীর সংখ্যা ৫০ লাখের বেশি।

তাদের অভিযোগ, সম্প্রতি দেশটির সরকার মসজিদ ও মুসলিম সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এতে সেখানে ইসলামভীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
তদন্তকারী সূত্রের বরাত দিয়ে মেট্রো জানায়, হামলার ভুক্তভোগীরা আলজেরিয়ান বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক। তাদের নাম যথাক্রমে কেনজা (৪৯) ও তার চেয়ে কয়েক বছরের ছোট আমেল। তাদের মধ্যে কেনজাকে ছয় বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। হামলায় তার ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে আমেলের হাতে সার্জারি করতে হয়েছে।

হামলার পর তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনা নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। হামলার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে রোববার রাতে হওয়া ওই হামলার সময়ে ভুক্তভোগীদের আর্তনাদ ও চিৎকার শোনা গেছে। তবে হামলার দুই দিন পর মঙ্গলবার অবধি ঘটনাটি নিয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি প্যারিস পুলিশ। অবশেষে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ১৮ই অক্টোবর রাত ৮টার দিকে একটি জরুরি কল পাওয়ার পর ছুরিকাঘাতের শিকার হওয়া দুই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন বুধবার প্যারিস প্রসিকিউটরের কার্যালয় জানায়, হামলাটি ঘিরে একটি হত্যাচেষ্টার তদন্ত শুরু হয়েছে।

হামলার শিকার হওয়া কেনজা বলেন, আমরা পুরো পরিবার, পাঁচ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও চার জন শিশু মিলে বাইরে হাঁটতে গিয়েছিলাম। আইফেল টাওয়ারের এক জায়গায় একটি ছোট ও কিছুটা অন্ধকার পার্ক রয়েছে। আমরা সেখানে যাই। হাঁটার এক পর্যায়ে দুটি কুকুর আমাদের দিকে আসছিল। এতে শিশুরা ভয় পেয়ে যায়। আমার চাচাতো বোন কুকুরগুলোর মালিক, দুই নারীকে অনুরোধ করেছিল যে, সম্ভব হলে তারা যেন কুকুরগুলোকে তাদের সঙ্গে রাখে। কারণ, এতে শিশুরা ভয় পাচ্ছে।

কেনজা আরো জানান, কিন্তু ওই দুই নারী তাদের অনুরোধ শোনেননি। এতে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা শুরু হয় ও এক পর্যায়ে তাদের বিভিন্ন বর্ণবাদী ভাষায় অপমান করে ওই দুই নারী। আর তারপর তাদের একজন ছুরি বের করে কেনজা ও আমেলকে ছুরিকাঘাত করে। কেনজা বলেন, তাদের একজন আমাকে মাথায়, পাঁজরে ও হাতে আঘাত করে। এরপর আমার বোনের ওপর হামলা চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এ সময় হামলাকারীদের ‘নোংরা আরব’ ও ‘নিজ দেশে ফিরে যাও’ বলতে শোনা গেছে। এছাড়া, অন্যদের মুখে ‘জরুরি সেবায় ফোন দিন, তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে’ ও ‘ছেড়ে দাও, দানব!’ বলতেও শোনা গেছে।
পুলিশ আসা পর্যন্ত দুইজন স্থানীয় দোকানদার একজন হামলাকারীকে পরাস্ত করে আটকে রাখে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here