মহানবীকে অবমাননা: ফ্রান্সের নাম উল্লেখ না করে প্রতিবাদ জানাল সৌদি

0
123
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সৌদির প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: ইন্টারনেট

বাংলা খবর ডেস্ক:
মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লামকে নিয়ে বিদ্রূপাত্মক কার্টুন ও অবমাননার ঘটনায় ফ্রান্সের নাম উল্লেখ না করেই অবশেষে প্রতিবাদ জানিয়েছে সৌদি আরব।

মঙ্গলবার সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানায়।

এক বিবৃতিতে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলছে, মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লামকে নিয়ে আপত্তিজনক কার্টুন প্রকাশ কিংবা সন্ত্রাসের সঙ্গে ইসলামকে জড়ানোর যে কোনও উদ্যোগের নিন্দা জানাচ্ছে রিয়াদ।

কিন্তু সেই বিবৃতিতে অপরাধী কে, তা বিবেচনা না করতে বলা হয়েছে। পাশপাশি প্রতিক্রিয়ায় প্রদর্শনে বাড়াবাড়ি হওয়া থেকে বিরত থাকতেও উৎসাহিত করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো করে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দেয়া হয়নি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের আমরা নিন্দা জানাচ্ছি। সম্মান, সহনশীলতা ও শান্তি এগিয়ে নিতে বৃদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার আহ্বান জানাচ্ছি।

বিবৃতিটি দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্যের পর ফুঁসে উঠেছে মুসলিমবিশ্ব। তুরস্ক, কুয়েত, কাতার, জর্ডান, লিবিয়া, সিরিয়া, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ অনেক দেশে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ চলছে।

সোমবার (২৬ অক্টোবর) তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ফরাসী পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান। এরপর একে একে কুয়েত, কাতার ও জর্ডানসহ অনেক আরব দেশ থেকে ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক আসে। অনেক আরব দেশেই দোকান থেকে ফরাসি মেকআপ সামগ্রী ও সুগন্ধী সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।

কুয়েতে পাইকারি জিনিস বিক্রেতাদের একটি প্রধান ইউনিয়ন ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নিন্দা জানালেও ফরাসি পণ্য বয়কটের কোনো ঘোষণা আসেনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে।

সৌদি কারাগারে নারী মানবাধিকার নেত্রীর আমরণ অনশন:

ওদিকে সৌদি আরবের কারাগারে দেশটির প্রখ্যাত নারী মানবাধিকারকর্মী লুজাইন আল-হাসুল আমরণ অনশন শুরু করেছেন। ২০১৮ সাল থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

কারাগারে বন্দি থাকাবস্থায় তাকে কোনো ফোনকল রিসিভ করতে দেয়া হয় না এবং পরিবারের লোকজন তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। এরই প্রতিবাদে লুজাইন অনশন শুরু করেছেন। খবর এএফপি, রয়টার্স ও ফ্রান্স২৪ডটকমের।

তার বোন লিনা আল-হাসুল গণমাধ্যমকে মঙ্গলবার জানান, সোমবার থেকে লুজাইন অনশন শুরু করেছেন। তাকে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেয়া হয় না, এমনকি দেখাও করতে দেয় না সৌদি কর্তৃপক্ষ। তার সঙ্গে সরকার খুবই বাজে ব্যবহার করছে।

এর আগে গত আগস্ট মাসে লুজাইন ছয় দিনের জন্য অনশন করেন। সে সময় তাকে দিনে পরিবারের লোকজনের একটি মাত্র ফোনকল রিসিভ করার অনুমতি ছিল এবং ছয় মাসে দুজন পারিবারিক সদস্য তার সঙ্গে দেখা করতে পারতেন।

কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট করা ৩১ বছর বয়সী লুজাইনকে আটক করে রাজধানী রিয়াদের আল-হেয়ার কারাগারে রাখা হয়েছে।

তিনি নারীদের ওপর থেকে গাড়ি চালানোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী ছিলেন। ২০১৪ সালেও তিনি ৭০ দিনের জন্য আটক হয়েছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here