বাংলা খবর ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রে বেসরকারি ফলাফলে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন। বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর সবচেয়ে প্রথম যে পদক্ষেপগুলো নেবেন এরই মধ্যে তার পরিকল্পনা ঘোষণা দিয়েছেন। তার শাসনামলে জলবায়ু চুক্তি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যোগ দেওয়া, করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠন, মুসলিমদের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাতিলসহ বর্ণবাদ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিভিন্ন পদক্ষেপে পরিবর্তন আনা হবে যা নিয়ে সমালোচনা আছে। খবর বিবিসি ও সিএনএনের
ট্রাম্পের নীতির পরিবর্তন: ট্রাম্পের নেওয়া নীতিমালাগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার করবেন বাইডেন। মার্কিন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ট্রাম্পের নেওয়া বেশ কিছু বিতর্কিত নির্বাহী আদেশ যার জন্য কংগ্রেসের অনুমোদন দরকার হয় না, সেগুলোকে আগের অবস্থানে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন বাইডেন। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাতে আবারও যোগ দেবে দেশটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে সরে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই সিদ্ধান্ত বদলে দেবেন বাইডেন। যে সাতটি দেশের নাগরিকদের মুসলিমদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা প্রত্যাহার করা হবে। ওবামা আমলের কিছু নীতি পুনর্বহাল হবে। বিশেষ করে শিশু বয়সে যারা বৈধ কাগজ ছাড়া অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া। ভাইস প্রেসিডেন্ট ‘ইলেক্ট’ কমলা হ্যারিসের সঙ্গে মিলে এরই মধ্যে একটি ট্রানজিশন ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন বাইডেন।
মহামারি মোকাবিলায় পরিকল্পনা: করোনা ভাইরাস মহামারি নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনছেন বাইডেন। তার বিজয়ী ভাষণেই বিশেষজ্ঞ দল তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন যারা করোনা মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেবেন। এতে যুক্ত থাকবেন সেরা বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা। এমনকি করোনা নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনার তথ্য ফাঁসকারী হুইসেলব্লাওয়ারও থাকবেন। বাইডেন মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে চান। করোনায় অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে তা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে নানা পদক্ষেপের পরিকল্পনা হচ্ছে।
বর্ণবৈষম্য মোকাবিলা: ট্রাম্পের সময়ে বর্ণভিত্তিক বিভেদ বৃদ্ধি এবং শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের উত্থান হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাইডেন বর্ণভিত্তিক বৈষম্য উচ্ছেদকে তার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভিত হিসেবে তৈরি করতে চান। তিনি সরকারি তহবিল ব্যবহার করে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চান। কৃষ্ণাঙ্গ, ল্যাটিনো ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পদের বৈষম্য দূর করতে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক যাতে আরো জোরালোভাবে কাজ করে সেটি নিশ্চিত করতে চান। পুলিশ বাহিনীর জন্যেও কিছু পরিবর্তন পরিকল্পনা করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনে সংস্কারের জন্য কমিশন করার কথাও ভাবছেন তিনি।
নিজের ক্যাবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও এই সপ্তাহের মধ্যে বাইডেন নির্বাচন করে ফেলতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বাইডেনের মতো সিসনড রাজনীতিক কোনো কাজই চটজলদি করবেন না। শপথ গ্রহণের জন্য এখনো দুই মাস সময় আছে হাতে। তার আগে সাংঘাতিক কোনো সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন না।