যুক্তরাষ্ট্রের লজ্জা এবং অহংকার

0
81


দর্পণ কবীর:

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার অনুসারীরা। ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটাল হিলে জোরপূর্বক প্রবেশ ও ভাংচুরের ঘটনা-নজিরবিহীন এবং অপ্রত্যাশিত। এই অমোচনীয় ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তাই বলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে ঢালাওভাবে নেতিবাচক মন্তব্য করার আগে ভাবতে হবে-এদের গণতন্ত্র ব্যবস্থার কি ইমেজ ক্ষুন্ন হয়েছে কিনা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কতটা ‘স্বৈরাচার মনোভাব’ পোষণ করেন এবং কী-কী পদক্ষেপ নিয়েছেন-তা সকলে জানেন। তার আচরণকে সাধারণ মানুষ সমর্থন করেনি। এর প্রমাণ মেলে ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত-জর্জিয়ায় দুটি সিনেট সদস্যদের আসন রিপাবলিকানরা হারিয়েছেন, জয়লাভ করেছেন ডিমেক্রেট প্রার্থী। যে কথা বলতে চাচ্ছি-ট্রাম্প বিচার বিভাগ, স্থানীয় নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে রিপাবলিকান দলের সমর্থক সরকারি কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি যাদের পছন্দ করে নিয়োগ দিয়েছেন, তারা প্রেসিডেন্টের অন্যায় অনুরোধ রাখেননি। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিক দায়িত্ব পালন করেছে প্রভাবমুক্ত হয়ে-যা যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অহংকার।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সকল চেষ্টা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কাছে অরণ্যে রোদন হয়ে দাঁড়ায়। মিডিয়াও দায়িত্ব পালন করতে কখনও কুণ্ঠিত বা ভীত ছিল না। এ সব বিবেচনায় আনতে হবে। ক্যাপিটাল হিলে দু’শতাধিক লোকের প্রবেশ বা হামলার ঘটনা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে পরিহাস করার অবকাশ নেই। যে কোন পরিস্থিতি বা আক্রমণমূলক ঘটনা অপরাধ হিসাবে রাষ্ট্রের কাছে বিবেচিত হয় এবং তা আইনী পদক্ষেপে সমাধান হবে।
অপরাধ সংগঠিত হওয়ার লজ্জাকে অস্বীকার করা যাবে না, তবে এই রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা’র প্রতি যেন সকলের শ্রদ্ধা অটুট থাকে। এ দেশে মানুষ ভোট দেয়, ভোট গণনা হয়, বিজয় কখনও ছিনিয়ে নেয়া যায় না। প্রেসিডেন্ট হলেও তা পারেন না। এটি বিবেচনা করলে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের জয় হোক।
লেখক: সাংবাদিক ও সাহিত্যিক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here