৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে করোনার টিকাদান শুরু

0
74
ছবি: সংগৃহীত

বাংলা খবর ডেস্ক:
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ যেমন সফল হয়েছে টিকাদানের ক্ষেত্রেও তেমন সফল হবে।’

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গণমাধ্যমকে তিনি এ কথা বলেন।

আজ সকালে ভারতের উপহার দেওয়া করোনার টিকার ২০ লাখ ডোজ ঢাকায় পৌঁছায়। এসময় বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে সেগুলো গ্রহণ করেন স্বাস্থ‌্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ‌্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এর আগে, বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক ব্রিফিয়ে স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান জানিয়েছিলেন- আগামী ২৭ অথবা ২৮ জানুয়ারি ২৫ জনকে করোনা টিকা দিয়ে বাংলাদেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। এই ২৫ জন হবেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এই টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হতে পারে।

তিনি জানান, এরপর ৪০০-৫০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়া হবে। তাদের এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করার পর ৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী টিকা কার্যক্রম শুরু হতে পারে। কুর্মিটোলা, কুয়েত মৈত্রী, মুগদা ঢাকা মেডিক্যালের স্বাস্থ্যকর্মীদের পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়া হবে। কোন বেসরকারি হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে না।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, সরকারি হাসপাতালের বাইরে কোন টিকা কেন্দ্র থাকবে না। সার্বিক কার্যক্রম সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। প্রথম মাসে ৬০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে। কেনা ৫০ লাখ ও উপহারের ২০ লাখ ডোজের মধ্যে থেকে। ২য় মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে। ফেব্রুয়ারিতে যারা টিকার প্রথম ডোজ নিবেন তারা এক মাস পর ২য় ডোজ পাবেন।

ভারতের উপহারের ভ্যাকসিন হস্তান্তর

ভারত থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র ড. একে আবদুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের হাতে এই টিকা হস্তান্তর করেন ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। ভ্যাকসিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি এবং পররাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজকে একটা আনন্দের দিন। কারণ, ৭১-এ বাংলাদেশের দুর্দিনে যেভাবে ভারত পাশে ছিল, আজকে করোনার দুর্দিনেও ভ্যাকসিন দিয়ে তারা পাশে থাকলো। তিনি বলেন, এই ভ্যাকসিন উপহার পাওয়ার কোন আলোচনা ছিল না। এটা হাইকমিশনারের একান্ত চেষ্টাতেই এতো দ্রুত পাওয়া সম্ভব হয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, উপহার হিসেবে পাওয়া ২০ লাখ এবং চুক্তির আওতায় বাণিজ্যিকভাবে আরও ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসার পর ব্যাপকভিত্তিক ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি বলেন, উপহার হিসেবে পাওয়া ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। ইতিমধ্যে তার সময় চাওয়া হয়েছে। তবে মন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে ভ্যাকসিন নিয়ে নানারকম গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এই সমস্ত গুজবে কান না দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ভারতীয় হাই কমিশনার বলেন, নেইবার হুড ফার্স্ট পলিসির আওতায় বাংলাদেশকে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে এই ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার বিষয়টিও এখানে বিবেচনায় এসেছে। ভারতের ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ পাবে- এ ব্যাপারে মোদি সরকারের যে অঙ্গীকার ছিল, এটা তারও প্রতিফলন।

প্রথম টিকাটা জনসমক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নেয়া উচিত : জাফরুল্লাহ

ওদিকে করোনাভাইরাসের প্রথম টিকা জনসমক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেয়া উচিত বলে মনে করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বুধবার (২০ জানুয়ারি) গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মত তুলে ধরেন তিনি।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘টিকার ক্ষেত্রে সরকার সবচেয়ে বড় ভুলটা হচ্ছে, পয়লা টিকাটা নেয়া উচিত প্রধানমন্ত্রীর। পাবলিকলি টেলিভিশনের সামনে টিকা উনি নিলে লোকের আস্থা জন্মাবে। পাশাপাশি প্রত্যেক মন্ত্রীর জেলা শহরে গিয়ে সবার আগে টিকা নেয়া উচিত। তাহলে লোকের আস্থা জন্মাবে এবং তাদের বুঝিয়ে বলা যাবে।’

চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সাংবাদিকদের মধ্য থেকে ২০ থেকে ২৫ জনকে প্রথমে টিকা দেয়া হবে।

টিকাগ্রহণের ক্ষেত্রে যে অগ্রাধিকার জনগোষ্ঠী ঠিক করা হয়েছে, তা ঠিকই আছে বলেও মনে করেন ডা. জাফরুল্লাহ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here