মিরপুর ক্লাবের “১০ বৎসরের পরিকল্পনা বেনসিটি থেকে বেন-ইকোনমি”

0
400

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
মিরপুর ক্লাবের “১০ বৎসরের পরিকল্পনা বেনসিটি থেকে বেন-ইকোনমি” চূড়ান্ত ধাপ খুবই চমৎকার আয়োজনের মাধ্যমে আজ শুক্রবার, জানুয়ারি ২৯, ২০২১ তারিখ সন্ধ্যায় হোটেল ট্রপিকাল ডেইজি, গুলশান এ অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাবের সম্মানিত প্রেসিডেন্ট এস এম মাহাবুব আলম ক্লাবের ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক ও বেনসিটির ধারনা উপস্হিত সদস্যদের মাঝে অত্যন্ত প্রানবন্ধভাবে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, বেনটেনকে বা বেনসিটি এর কোনটাই প্রচলিত ধারনার সাথে যায় না। তাই কেউ বুঝিয়ে না দিলে এর সবই বোঝার বাইরে থেকে যাবে। ধারনার জন্ম ধারাবাহিকতা, উত্তরন এবং বিকশিত হওয়া সবই একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ।

মিরপুর প্রফেশনালস এন্ড এন্টারপ্রেনারস ক্লাব একটি পেশাজীবী এবং উদ্যোক্তাদের সংগঠন।সংগঠনটি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করছে। এটি একটি স্কলারদের সংগঠন। এতে আছে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, আইসিটি বিশেষজ্ঞ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, প্রফেসর, কনসালটেন্ট, গ্রুপ অব কম্পানিজের সিইও, ব্যাংকার, সিএফও, ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তা। এছাড়াও একটি উপদেষ্টা পরিষদ আছে যেখানে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন। মিরপুর ক্লাব সামাজিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সুস্থ বিনোদন চর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলার আয়োজন এবং বিজ্ঞান চর্চা করছে। এছাড়াও ক্লাবের সদস্যদের জন্য বিভিন্ন কমিউনিটি সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে।

মেধাবী ভালো মানুষদের জড়ো করে মেধা, বুদ্ধি, নেটওয়ার্ক আর অভিজ্ঞতার সম্মিলন ঘটিয়ে বড় কিছু করা যেতে পারে। মিরপুর ক্লাবের যাত্রা শুরুই হয়েছে এই ধারনাকে কেন্দ্র করে। প্রশ্ন হলো, কত বড়, আর কী কী করা যেতে পারে? উত্তরটি নিহিত আছে একটি সংখ্যার উপর, কতগুলো ডেডিকেটেড মানুষ আছে তার উপর। আমরা এই সংখাটা নির্ধারণ করেছি, সেটি হলো ১০ হাজার। প্রয়োগধর্মী বিদ্যা ব্যবস্থায় বিদ্যা সবার আগে প্রয়োজন। মিরপুর প্রফেশনালস এন্ড এন্টারপ্রেনারস ক্লাবের প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটির নাম বেনটেনকে (BEN10K)। ভালো মানুষ তার নিজের শক্তি সম্পর্কেই জানে না। মিরপুর ক্লাব এই শক্তিকে টেনে বের করবে। মানুষের সমাজে বসবাসের মূল কারন নেটওয়ার্ক। কোন সমাজ কতটা উন্নত সেটা নির্ভর করে সেখানে থাকা মানুষগুলোর নেটওয়ার্ক কত মাত্রায় শক্তিশালী, তাদের নেটওয়ার্ক তৈরি করার উদ্দেশ্য আর নেটওয়ার্ক তৈরির উপাদানের উপর। বাংলাদেশের বৃহত্তর সমাজের মানুষগুলোর বড় বৈশিষ্ট্য হলো সবচেয়ে সুবিধাভোগী শ্রেণী সবচেয়ে আগে সমাজ ত্যাগ করেছে উন্নত সমাজ প্রাপ্তির প্রত্যাশায়। এক বিশাল সংখ্যক মানুষ শুধু সমাজ না, দেশও ত্যাগ করেছে এই উন্নত সমাজ প্রাপ্তির আশায়। তাই বলা যায় উন্নত সমাজের প্রত্যাশা আমাদের একটি বিশাল অব্যক্ত চাহিদা। মিরপুর ক্লাবের “বেনটেনকে” আসলে কাঙ্খিত সমাজের সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে নির্মিত এক নতুন সমাজ (Community)। দশ হাজার করিৎকর্মা ভালো মানুষের নেটওয়ার্ক বেনটেনকে, যার সম্পূর্ণ নির্মাণের সময় ধরা হয়েছে দশ বছর। আগামী পাঁচ বছরে মূল কাঠামো তৈরি হবে। বেনটেনকে কমিউনিটি ধারনার মূলে আছে মানুষ এবং পরিবার। তাই পুরো বেনটেনকে কমিউনিটি নির্মিত হবে মানুষে মানুষে শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। আর তাই পরিবার কেন্দ্রিক এই মানুষ গুলোর পারিবারিক নেটওয়ার্কও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারই পরিকল্পনার চূড়ান্ত ধাপ পেশ করা হলো আজ।

মিরপুর ক্লাব ২০১৮ সালের ২৬ আগস্ট তারিখে যাত্রারম্ভের প্রথম দিন থেকে ধারাবাহিক উৎকর্ষের মধ্য দিয়ে একটি জায়গায় এসে দাড়িয়েছে। মিরপুর ক্লাব আজ কোভিড-১৯ মহামারিতে সবচেয়ে বেশী ত্রাণ দেয়া ক্লাবের নাম। মহামারির শুরু থেকেই আমরা নিম্ন আয়ের বিপন্ন মানুষের পাশে দাড়িয়েছিলাম। উল্লেখ্য করা যেতে পারে ২৮ মার্চ ২০২০ থেকে আমরা মিরপুর ক্লাব “ফুড ব্যাগ” নামে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। প্রায় ৬ হাজার বিপন্ন মানুষ ফুড ব্যাগ সহায়তা পেয়েছেন। মহামারি ব্যাপক আকার ধারণ করলে ২৪ মে ২০২০ তারিখে বিপন্ন মানুষের ভার্চুয়াল চিকিৎসা সেবা দেবার লক্ষ্যে “এমসিএল ভার্চুয়াল হসপিটাল” শুরু করা হয়েছিল। ১০০’র বেশী মানুষ বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা পেয়েছেন। প্রায় ৫০০ শত মানুষ ভার্চুয়াল চিকিৎসা পরামর্শ সেবা পেয়েছেন। ফলাফল, মিরপুর ক্লাব ব্যাপক মানুষের কাছাকাছি যেতে পেরেছে। এসকল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মিরপুর ক্লাব এবং মিরপুর ক্লাব কেন্দ্রিক কমিউনিটি বেনটেনকে মানুষের মনে তার একটি স্পষ্ট জায়গা করে নিয়েছে। আজ মিরপুর ক্লাবের বৈশিষ্ট্য সবার কাছেই পরিষ্কার।

মিরপুর ক্লাব ধারাবাহিক ভাবে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। “উন্নয়ন ভাবনা”, “এমসিএল স্কুল অব ক্রিয়েটিভিটি”, “ম্যাঙ্গো ফর কমিউনিটি”, “ফিস ফর কমিউনিটি” “কাউ ফর আল্লাহ” এর মত প্রোগ্রাম করেছে। প্রতিটি প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্থাৎ বৃহত্তর পরিবার গঠন। মিরপুর ক্লাব স্বপ্ন দেখে এবং বিশ্বাস করে, তাদের শুরু করা প্রতিটি প্রোগ্রামের কলেবর এবং ব্যাপ্তি সব সময় বাড়তে থাকবে। চেস্টা থাকবে ক্রমাগত উৎকর্ষ সাধন। মিরপুর ক্লাবে বেনটেনকে গঠনের জন্য সকলের মেধা জড়ো করে, কানেকশনগুলোকে জোড়া দেয় ও অভিজ্ঞতার সম্মিলন ঘটায়। মিরপুর ক্লাব তার সকল সদস্যদের নিয়ে একটি অনন্য নজির স্থাপন করতে যাচ্ছে। দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, বেনটেনকে’র এই যাত্রায় সকলের সহযোগিতা পেয়েছে, পাবে এবং পেতে থাকবে। ক্লাবের উদ্দেশ্য কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টে বাংলাদেশর জন্য একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।

মিরপুর ক্লাব তার যাত্রার শুরু থেকেই চিন্তা ভাবনা এবং গবেষণা অব্যাহত রেখেছে। “ভালো থাকা আর ভালো রাখা”র ভিশনকে সামনে রেখে ৭টি সার্ভিস নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১০ হাজার করিৎকর্মা ভালো মানুষের কমিউনিটি “বেনটেনকে” তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে একবারে শুরু থেকেই। যার শুরু হয়েছিল উন্নয়ন ভাবনা’র মাধ্যমে। অর্থাৎ “বেনটেনকে” হবে সার্ভিসড কমিউনিটি যেখানে নিশ্চিত হবে সোশ্যাল সিকিউরিটি, বাড়তি আয়, শিক্ষা ও পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ, ওয়েলফেয়ার, রিটায়ারমেন্ট বেনিফিট, গুড ফ্রেন্ডস এবং পরিকল্পিত স্মার্ট (ফাইভ আইআর) সিটিতে বসবাসের মত সার্ভিস। বেনটেনকে’র গঠন এবং বিকশিত হবার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ বছর। মিরপুর ক্লাব আশা করছে, আগামী ২০৩১ সালের ১৬ ডিসেম্বর হবে ক্লাবের স্বপ্নের
ঠিকানা বেনসিটিতে বেনটেনকের অভিষেকের দিন। মহান রাব্বুল আলআমিনের কৃপায় মিরপুর ক্লাবের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে এই স্বপ্নকে ঘিরে। সকলে মিলে সকলের জন্য আমরা এই স্বপ্ন মিরপুর ক্লাব দেখে অভিরত। স্বপ্নের শহর বেনসিটি বাস্তবায়ন করতে হলে বেন-ইকনোমী একমাত্র পথ। আজ থেকে দশ বছর পর ক্লাবের দশ হাজার সদস্যের সকলেরই অর্থনৈতিক কাঠামো চালিত হতে হবে বেনটেনকে এবং বেনসিটি’কে কেন্দ্র করে। বেন-ইকনোমী নিশ্চিত করবে সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার এবং সর্বনিম্ন খরচে সর্বোচ্চ জীবনমান।

জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে পরিকাঠামোর কেন্দ্রে থাকবে গবেষণা এবং শিক্ষা, যার বাহন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানে বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণাগার। উদ্যোক্তা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে মিরপুর ক্লাব এই পরিকাঠামো গড়ে তুলতে চায়। স্বল্প আয়ুর মানব জীবনে আমাদের উদ্দেশ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিশ্ব দরবারে কাঁধে কাধ মিলিয়ে চলতে পারার মত কিছু করে যাওয়া।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ, সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সচিব ও হাইটেক পার্কের এমডি হোসনে আরা বেগম; দেলওয়ার হোসেইন রাজা, ডাইরেক্টর, গানবাংলা টেলিভিশন। বিশেষ বক্তা সুশান্ত কুমার সাহা (অতিরিক্ত সচিব), ডাইরেক্টর জেনারেল, নিপোর্ট; ডাঃ বিকর্ণ কুমার ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্হিত ছিলেন সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত পরিচালক ড. দৌলোতুন্নাহার খানম, ইসলামী ব্যাংক লিঃ এর ডিএমডি তাহের আহমেদ চৌধুরী সহ ক্লাবের সম্মানিত ভাইস প্রেসিডেন্টগণ, ডিরেক্টরস্ ও সদস্যবৃন্দ। বাফেট ডিনারের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। বিজ্ঞপ্তি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here