গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত, নিহত ৩৫

0
678

বাংলা খবর ডেস্ক:
গাজায় লাগাতার বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আজ বুধবার ভোরে গাজার একাধিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইহুদি সেনারা। হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া বহুতল ভবন ধ্বংস হয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস গাজা থেকে রকেট ছুড়লে পাল্টা বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এ ঘটনায় ৩৫ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ১০ শিশু রয়েছে। আজ বুধবার ভোর থেকে গাজার বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে তেল আল-হাওয়া এলাকায় একটি ভবনে বোমা হামলায় চারমাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তার চার বছর বয়সী শিশু সন্তান নিহত হয়। তার পাশেই হামলায় ভবন ধসে আরও তিন নারী নিহত হন। এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন প্রায় ৭০০ ফিলিস্তিনি।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ভোরে ইসরায়েল আকাশপথে গাজায় কয়েকশ বোমা ফেলেছে। অন্যদিকে গাজা থেকে হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে তেল আবিব ও বিরসেবা এলাকায় রকেট হামলা চালাচ্ছে। এতে ইহুদিবাদী দেশটিতে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন ভারতীয় নারীও রয়েছেন বলে জানা গেছে।

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় একটি বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। অপর একটি ভবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা রকেট হামলার উৎসস্থলে এবং হামাসের স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। ‘হানাদি টাওয়ার’ নামের একটি ভবনটি বোমার আঘাতে ধসে পড়েছে। ভবনে হামাস নেতাদের রাজনৈতিক কার্যালয় ছিল বলে জানা গেছে।

এছাড়া হামাসের গোয়েন্দা নেতাদের হত্যা করতে পেরেছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।

এদিকে হামাস যোদ্ধাদের লাগাতর রকেট হামলার মুখে ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ‘বেন গুরিওন’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই বিমানবন্দর তেল আবিবের ঠিক পাশেই অবস্থিত। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তেল আবিবে সতর্কতা সাইরেন বাজানো হয়েছে। সেখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

গত সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে গাজা উপত্যকায় সিরিজ বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী। ভোররাত থেকে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ঢুকে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর তাণ্ডব চালায় তারা। ফিলিস্তিনিদের ওপর রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি পুলিশ ও সেনারা। হামলার প্রথম দিনে তিন শিশুসহ অন্তত ২০ জন নিহত হয়। দ্বিতীয় দিনে তা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়ায়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

পবিত্র রমজানের জুমাতুল বিদা এবং পবিত্র রাত শবে কদরেও আল-আকসায় তাণ্ডব চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা এর প্রতিবাদ করে আসছেন। এরমধ্যেই গত সোমবার প্রতিশোধ হিসেবে হামাস ইসরায়েলে দিকে রকেট হামলা চালায়। তারপর থেকে অব্যাহত বিমান হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।

ইসরাইলের নৃশংসতা : বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ

নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডন। করাচি থেকে রাবাত। ফিলিস্তিনে রক্তস্রোত বইয়ে দেয়ার প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। আজ বুধবার ভোরে ইসরাইলের বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পক্ষান্তরে হামাসের রকেট হামলায় ৫ ইসরাইলি নিহত হয়েছে।

সর্বশেষ যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তা ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের হামাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ একটি যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এমনকি মুসলিমদের কাছে তৃতীয় পবিত্র আল আকসা মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের বিরুদ্ধেও কয়েকদিনে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট, স্টান গ্রেনেড ছুড়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এর বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হয়েছে।
এ সময় বিক্ষোভকারীদের হাতে দেখা গেছে ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’ ‘ইসরাইল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ এবং ‘দখলদারিত্ব আর নয়’ লেখা ব্যানার। উল্লেখ্য, শেখ জারাহ থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করেছে ইসরাইলিরা। কয়েক দশক ধরে সেখান থেকে ফিলিস্তিনিদের বহিষ্কার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা। এর প্রতিবাদ হচ্ছিল। কিন্তু জেরুজালেমের ওল্ড সিটিতে অবস্থিত আল আকসা মসজিদে ইসরাইলি পুলিশের ঝড়ো গতিতে প্রবেশ এবং দমনপীড়নের ফলে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। কয়েকদিনে তাদের নৃশংসতায় নামাজ আদায়রত কয়েক শত ফিলিস্তিনি ওই মসজিদে আহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে দখলীকৃত ভূখণ্ড এবং ইসরাইলের ভিতরেও বিক্ষোভ হয়েছে। এখানে ছবিতে ইসরাইলের নৃশংসতার প্রতিবাদ তুলে ধরা হলো-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here