রানা হাসান:
আহ! কি সুন্দর। ইচ্ছে পুরনের আনন্দটাই অন্যরকম । বাগান বাড়িতে সারাদিন কাটানোর পর আছি যেন স্বপ্নের মাঝেই।
বাবার কল্যানে ঢাকাতে বসতবাড়ী ছিল আগেই। বগুড়া শহরেও তাই। দাদার বাড়ির সারিয়াকান্দিতে সখের বসে কাজিনদের সাথে রিসোর্টের মতো কিছু একটা করা প্রায় শেষ হয়েছিল, কিন্তু বিধিবাম। একরাতে ভাঙ্গনের তোড়ে যমুনায় ভেসে গেল স্বপ্নপুরুনের সেই ইচ্ছে। তবে যাই হোক না কেন, ভেসে যায়নি স্বপ্ন পূরুনের ইচ্ছে।
এরপর বছর তিনেক আগে বন্ধু আলমগীরের স্বপ্ন পুরুনের আহ্বান। সাড়া দিলাম দ্রুত। সবাই মিলে সোনারগাঁও পানাম সিটি লাগোয়া হামছাঁদি গ্রামে আমরা সমমনা ১৪ ভাই মিলে কিনে ফেললাম প্রায় দেড় বিঘা জমি। পাশে থাকা বন্ধু আলমগীরের জমির কিছু অংশ কিনে সেটা এখন ৩ বিঘা। এল প্যাটানের জমিতে আছে নতুন দুটি টিনের ঘর। চারিদিকে সবুজ আর সবুজ। পাশে দেবব্রত সম্পতির বিশাল দিঘি। সব মিলিয়ে কি যে সুন্দর, অবিশ্বাস্য। কড়া রোদ, কিন্তু দুই ঘরের বারান্দায় বসলে শরীর জুড়ে যায় দিঘির পাশে থাকা হিজল গাছের ফুরফুরে বাতাসে।
জুম্বার নামাজ শেষে খানিকটা হামছাঁদি গ্রাম ঘুরে দেখা। আহ! বর্ষা না আসতেই কি সন্দুর গ্রামটা। চোখ~প্রাণ দুটোই জুড়িয়ে যায় এই গরমেও। সহজেই অনুময়ে, বর্ষায় চারিদিকে সবুজ যখন তার আভা ছড়াবে, দিঘির পানি যখন ছলছল করবে, তখন সুন্দরের মাত্রাটা কোন পর্যায়ে থাকবে।
আজ গিয়েছিলাম, স্বপ্নের সেই বাগান বাড়িতে। সবাই কেয়ারটেকারদের বানানো বাটা মসল্লার রান্না করা নানা মজাদার খাবার খেলাম পেটপুড়ে। ছোটখাট সভাও করে নিলাম, বাগানবাড়িটির উন্নয়ন কাজ নিয়ে। সবাই একমত হলাম, তিন বিঘা জমি আর বিশাল দিঘির সমন্বয় করে অচিরেই আরও দৃষ্টি নন্দন করে জায়গাটা প্রস্তুত করতে। আশা করছি, একবছরের মাঝেই আমাদের বাগানবাড়িটি আমার স্বপ্নের পূর্নতা দেবে।
এতো কিছু বলা দুই কারণে। প্রথমটি হচ্ছে, নিজের স্বপ্ন বলে যা থাকে, তা পূরুন হলে কিন্তু রাজ্যে স্বস্তি এনে দেয় সেই স্বপ্নবাজের মনে। বাগানবাড়িটি আমার কাছে তাই। আরেকটি হলো, সবার জীবনে বন্ধু আসলেই খুব দরকার। স্বপ্ন পুরুনের কাজ সহজ হয়, যেমন হয়েছে আমার। অনেকের কাছে হয়ত কিছুই না, আমার কাছে এটি কিন্তু অনেক কিছু। আর অনেক কিছুর এই স্বপ্ন কিন্তু পুরুন হয়েছে বন্ধু আলমগীরের জন্য। ধন্যবাদ আলমগীর। ধন্যবাদ, বাগানবাড়ির গর্বিত ১৪ মালিক।
ছবিগুলো দেখলে আমি নিশ্চিত সবাই গ্রামটি, আমাদের বাগানবাড়িটি নিয়ে বলা আমার কথাগুলো শতভাগ সত্য বলে মত দেবেন।
লেখক: ক্রীড়া সাংবাদিক