ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগ বন্ধ হচ্ছে

0
559

বাংলা খবর ডেস্ক:
১৯৫৮ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া সম্প্রচার দিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের বাংলা ভাষাভাষীদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিল ভয়েস অব আমেরিকার (ভিওএ) বাংলা রেডিও সার্ভিস। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (অধুনা বাংলাদেশ), ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরার বাঙালিরা ভিওএর শর্টওয়েভ রেডিওতে সম্প্রচারিত স্বাধীন সংবাদ ও তথ্যের ওপর নির্ভর করত। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ নানা সংকটে ভিওএ বাংলা রেডিও সার্ভিস হয়ে উঠেছিল বাঙালির আস্থার নাম। কিন্তু শ্রোতাদের সঙ্গে ৬৩ বছরের এই সম্পর্কের অবসান হতে যাচ্ছে। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ভিওএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাংলায় তাদের এফএম ও শর্টওয়েভ রেডিও সম্প্রচারের আনুষ্ঠানিকতা ৬৩ বছর পর আগামী ১৭ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে। তবে ভিওএর বাংলা বিভাগের টেলিভিশন ও সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্টের পরিধি বাড়বে। কারণ এই প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের ১ কোটি ৬০ লাখ সাপ্তাহিক শ্রোতার দ্বারা বেশি ব্যবহৃত হয়।

ভিওএ প্রোগ্রামিংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জন লিপম্যান বলেন, ভিওএ বাংলা ১৯৫৮ সালের জানুয়ারিতে যখন চালু হয়েছিল, বাংলাদেশ তখন পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে পরিচিত ছিল। এ অঞ্চল তখন সামরিক আইনের অধীনে ছিল, যেখানে কোনো টেলিভিশন বা বেসরকারি রেডিও ছিল না। তখন সীমান্তের বাইরে থেকে ভিওএর শর্টওয়েভ রেডিওতে সম্প্রচারিত স্বাধীন সংবাদ এবং তথ্যের ওপর নির্ভর করত বাংলাভাষী জনগণ। যদিও শর্টওয়েভ রেডিওর শ্রোতা এখন ১ শতাংশেরও কম, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিওএ বাংলার শ্রোতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। টুইটার অ্যাকাউন্টে সম্পৃক্ততা বেড়েছে আগের বছরের তুলনায় ৫৪ শতাংশ। একই সময়ে ইনস্টাগ্রামে ভিডিও দেখা ২৭৪ শতাংশ বেড়েছে। আবার কয়েক ডজন দেশীয় টেলিভিশন ও রেডিও স্টেশন বাংলাভাষী শ্রোতা ধরতে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, পাশাপাশি বেড়েছে ডিজিটাল মাধ্যমের সংখ্যাও। এমন প্রেক্ষাপটে ভিওএ বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠান সেসব প্ল্যাটফর্মে পরিবেশন করা দরকার, যেখানে শ্রোতারা ইতোমধ্যেই সক্রিয়।

এর আগে গত জুনে বিভাগীয় কর্মীদের এক সভায় ভিওএ বাংলা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শতরূপা বড়ুয়া বলেছিলেন, রেডিও যখন প্রাথমিক সংবাদমাধ্যম ছিল, সে সময় ভিওএ বাংলা তার শ্রোতাদের কাছে বিশ্বসংবাদ পরিবেশন করেছে। সবার মুখে মুখে ছিল এর নাম। শর্টওয়েভ ও মিডিয়ামওয়েভ রেডিওর চেয়ে এখন যেসব মিডিয়ায় আমাদের উপস্থিতি বেশি জনপ্রিয়, সেসব জায়গায় আমাদের সেই খ্যাতিকে ভিত্তি করে এগিয়ে যাব। বাংলাদেশে আমাদের এমন ইতিহাসের কারণে ভিওএতে কাজ করা অনেকের জন্য স্বপ্নের চাকরি। আসন্ন পরিবর্তনগুলোর পরও তা অব্যাহত থাকবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here