জয় দিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করেছে বাংলাদেশ

0
74

বাংলা খবর ডেস্ক:
জয় দিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করেছে বাংলাদেশ। গতকাল শ্রীলঙ্কাকে হারায় বাংলাদেশ। দশ মাস ও সাত ম্যাচ পর পাওয়া জয়টি এসেছে এক গোলে।
পেনাল্টি থেকে গোলটি করেছেন ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। ম্যাচ সেরাও হয়েছেন এই ডিফেন্ডার। আগামী ৪ঠা অক্টোবর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ওই লাল সবুজের প্রতিনিধিদের প্রতিপক্ষ এই টুর্নামেন্টে র‌্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা ভারত।
সাফের দলগুলোর মধ্যে লঙ্কানদের (২০৫) র‌্যাঙ্কিং সবচেয়ে বাজে। বিপরীতে লাল সবুজদের বাংলাদেশের র‌্যাঙ্কিং ১৮৮। দুই দলের আগের পরিসংখ্যানে ১৬ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ছিল ১২টিতে। লঙ্কানদের জয় ৪টি। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে দুই দলের সর্বশেষ ম্যাচেও ৩-০ গোলে জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। মালেতে গতকাল এসব অনুপ্রেরণা নিয়ে লঙ্কানদের মুখোমুখি হয় জামালরা। দর্শকদের সমর্থন তো ছিলই। ম্যাচ শুরুর আগেই গ্যালারির নিয়ন্ত্রণ নেয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা। হাজার পাঁচেক প্রবাসী মাতিয়ে তোলেন গ্যালারি। জামাল-তপু স্লোগানে মুখরিত হয় মালের আকাশ বাতাস। গ্যালারির পূর্ণ সমর্থনের পরেও প্রথমার্ধে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না বাংলাদেশকে। বলার মতো কোনো সুযোগও তৈরি করতে পারেনি রাকিব-জুয়েলররা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে খেলার ধরনে পরিবর্তন আনেন জাতীয় দলের অভিষিক্ত কোচ অস্কার ব্রুজন। জুয়েল রানাকে উঠিয়ে সাদ উদ্দিনকে মাঠে নামান এই স্প্যানিশ কোচ। ডানদিকে সাদের অন্তর্ভুক্তিতে আক্রমণের ধার বাড়ে বাংলাদেশের, তার ফলও আসে ১১ মিনিটের মধ্যে। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে পেনাল্টি পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বক্সের ভেতরে হ্যান্ডবল করেন ডাকসন পাসলাস। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। আর তপুর লক্ষ্যভেদে কাঙ্ক্ষিত লিড পায় বাংলাদেশ (১-০)। দশজনের শ্রীলঙ্কার জন্য এরপর ম্যাচে ফেরাটাই কঠিন হয়ে পড়ে। এরপরেই লঙ্কান কোচ আমির আলাগিক তার তুরুপের তাস ইংল্যান্ডের সেকেন্ড টায়ারে ক্লাব কিউপিআরএ খেলা ডিলন ডি সিলভাকে মাঠে নামান। তাতে আক্রমণের ধার কিছুটা বাড়লেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশের হাতে। বিশেষ করে মতিন, সুফিল মাঠে নামার পর ম্যাচের চিত্রই পাল্টে যায়। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে জামালের নেয়া ফ্রিকিকে মতিনের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৮৪ মিনিটে মতিনের ক্রস ফাঁকা পোস্ট পেয়ে বাইরে মারেন রাকিব। ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে দারুণ এক গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন রাকিব। মতিনের ক্রসে রাকিব শট নেয়ার ঠিক আগে তা ক্লিয়ার করেন এক লঙ্কান ডিফেন্ডার। ম্যাচের একেবারে শেষদিকে লঙ্কান গোলরক্ষকের ভুলে দুটি ফ্রিকিক পেয়েছিলো বাংলাদেশ। একটি জামাল অপরটিতে গোল করার সুযোগ হাতছাড়া করেন তপু।

র‌্যাঙ্কিংয়ে একশ’র ঘরে ঘোরাফেরা করা ভারত এবার সাফে এসেছে পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে। পরম্পরা মেনে এটা যে তাদের শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন! সেই লক্ষ্যে দলটির অভিযানের শুরুটা আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে। তাইতো বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ম্যাচ দেখতে ৪০ মিনিট স্পিডবোডে পাড়ি দিয়ে মালের স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন ভারতের কোচ ইগার ইস্টিমাচ। প্রথমার্ধ দেখে হয়তো নাক সিটকিয়েছেন এই ক্রোয়েশিয়ান কোচ।

এদিন ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে সুমন রেজাকে বাজেভাবে ট্যাকেল করে হলুদ কার্ড দেখেন লঙ্কান ডিফেন্ডার ডাকসন পালস। যা পরবর্তীতে লাল কার্ডে পরিণত হয়। ম্যাচের ৯ মিনিটে বিশ্বনাথের থ্রো তপুর শট এক ডিফেন্ডার প্রতিহত করলে সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। ম্যাচের ১৬তম মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন ইয়াসিন আরাফাত। ৩৯তম মিনিটে অসাধারণভাবে বাম দিক দিয়ে বল নিয়ে ঢুকে তপু স্কয়ার পাস দেন জুয়েলকে। কিন্তু তালগোল পাকিয়ে বল হারান জুয়েল। যোগ করা সময়ে আক্রমণে উঠে গোলের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করেছিলেন তপু। ইয়াসিন আরাফাতের ক্রসে তপুর হেড শ্রীলঙ্কার গোলরক্ষক সুজন পেরেরা বাম দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে সেভ করেন।

বাংলাদেশের জয়টা এলো এক ডিফেন্ডারের গোলে। আর ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় কপালে ভাঁজ থেকেই যাচ্ছে বাংলাদেশ কোচের।

বাংলাদেশ দল: আনিসুর রহমান জিকু (গোলরক্ষক) তপু বর্মণ, তারিক কাজী, ইয়াসিন আরাফাত, বিশ্বনাথ ঘোষ, জামাল ভূঁইয়া, বিপলু আহমেদ (আতিকুর রহমান ফাহাদ), জুয়েল রানা (সাদউদ্দিন, ইব্রাহিম (সুফিল), রাকিব হোসেন, সুমন রেজা (মতিন)।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here