দলের এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সে হতাশ সাবেকরা

0
61

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
বড় স্বপ্ন নিয়ে টি ২০ বিশ্বকাপে যাওয়া বাংলাদেশের অভিযান শেষ হলো বিব্রতকর হার দিয়ে। টানা তিনটি সিরিজ জয়ের পর বিশ্বকাপে দলের এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সে হতাশ সাবেকরা। কেউ মনে করছেন ক্রিকেটার ও কোচদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো ছিল না। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হতাশার হারে শুরু। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিধ্বস্ত হয়ে শেষ বাংলাদেশের বিশ্বকাপ।

কারও ধারণা-প্রথম হারের পরই এলোমেলো হয়ে যায় দল। ২০১৬ টি ২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়া মাশরাফি মুর্তজা জানালেন, ক্রিকেটারদের সঙ্গে দায়টা বিসিবিকেও নিতে হবে। এছাড়া সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাহমুদ, জাবেদ ওমর বেলিম, হাসিবুল হাসান ও আফতাব আহমেদ দলের ভরাডুবির কারণ খুঁজে বের করলেন-

মাশরাফি মুর্তজা : এমন পারফরম্যান্সে ক্রিকেটারদের দায় কোনোভাবেই এড়ানোর উপায় নেই। বিশেষ করে যেভাবে আমরা হেরেছি। এত বাজে খেলার পর ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়ানো কঠিন। তবে আমি বিশ্বাস করি, ওরা দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে। ঠিক এই মুহূর্তে ক্রিকেটারদের উচিত ধৈর্য ধরা এবং সঠিক প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা। কোনো সমালোচনার জবাব দেওয়া উচিত নয়।

প্রথম দায় অবশ্যই ক্রিকেটারদের। এরপর আর কি কারও দায় নেই? তাহলে মনে রাখবেন, আরও খারাপ সময় অপেক্ষা করছে। প্রমাণ তো আগেও অহরহ দেখা গেছে! এখন সামনে কী হবে। হয়তো কাউকে বাদ দেওয়া হবে, কারও ওপর অদৃশ্য রাগ ঝাড়া হবে, রিয়াদকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করা হবে। সমর্থকরা যে ক্রিকেটারকে পছন্দ করছে না, তার ওপর ঝাল মিটিয়ে সমর্থকদের শান্ত করা হবে। সাংবাদিক ভাইদের নানা কিছু বোঝানোর চেষ্টা করা হবে। এরপর বিশ্বকাপ আসবে, দেখা যাবে একই ফলের পুনরাবৃত্তি!

আপনারা (বিসিবি) অন্যবারের মতো বলতেই পারেন, ‘অমুকের জন্য পারিনি, তমুক ব্যর্থ হয়েছে, এজন্যই পারলাম না।’ সেক্ষেত্রে তো দায়টা আপনাদেরও। কারণ, উপযুক্ত বিকল্প আপনারা তৈরি করতে পারেননি। তাই দয়া করে সত্যকে আলিঙ্গন করুন এবং নতুনভাবে কাজ শুরু করুন। সামনে আরেকটি বিশ্বকাপের দোহাই দিয়ে ক্রিকেটারদের ক্ষতি না করে প্রক্রিয়াটা ঠিক করুন। দেখবেন, তখন দল আপনাআপনি ভালো খেলবে।

সবচেয়ে বড় শঙ্কা আমি যা দেখছি, ক্রিকেটারদের বলির পাঁঠা বানিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দেওয়া হবে। এগুলো না করে তাদেরকে যত্ন করুন, হয়তো তারা সামনের পথচলায় আমাদের দারুণ সব মুহূর্ত উপহার দেবে। একজন ভালো খেলোয়াড় তৈরি করতে অনেক সময় লাগে। আমরা আপনাদের (বিসিবি) সঙ্গেই আছি। কারণ, আমাদের শরীরের প্রতিটি রক্তকণিকায় শুধু ক্রিকেটই বসবাস করে।

খালেদ মাহমুদ : আমরা তো ভেবেছিলাম আরও ভালো করব। এটা কেউই আশা করে না। এখান থেকে শেখার অনেক কিছুই আছে। শুধু বোর্ডের জন্য না, খেলোয়াড়, কোচ-সবার জন্য শেখার আছে।

সব বিষয় হয়তো আমরা হালকাভাবে নিচ্ছিলাম। আমি বলব, এটা আমাদের জন্য ভালো শিক্ষা। পরিকল্পনা, অনুশীলন, খেলোয়াড় বাছাই-অনেক কিছুতে ভুল থাকতে পারে। এটা অবশ্যই বড় ধাক্কা। এখানে বসে থাকলে হবে না। ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এজন্য যা যা করার অবশ্যই করব।

প্রথম ধাক্কাটাই সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলেছে। স্কটল্যান্ডের কাছে হার মানা যায় না। শ্রীলংকার বিপক্ষে জিতলে হয়তো পরিস্থিতি একটু ভালো হতো। আমরা সুপার টুয়েলভে দুটি জেতা ম্যাচ হেরেছি খুব কাছে গিয়ে।

জাভেদ ওমর বেলিম : খারাপ খেলতেই পারে দল। কিন্তু এত খারাপ করবে তারা, সেটা ভাবতে পারেনি কেউই। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ অনেক ক্যাচ মিস করেছে। প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পরই সব এলোমেলো হয়ে যায়। ওই হারের পর মনে হয় জীবন বুঝি শেষ হয়ে গেছে। ওই হারটা ওরা নিতে পারেনি। দলের মধ্যে একটা সমস্যা ছিল বলে মনে হয়েছে। টিম ম্যানেজমেন্ট ও খেলোয়াড়দের মধ্যে। এছাড়া বাইরের সমালোচনা ক্রিকেটাররা নিতে পারেনি। তারাও দু-এক কথা শুনিয়েছে। এগুলো দলের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করেছে। এই বিশ্বকাপে ভারত সেরা দলের একটি। তারাও কিন্তু খারাপ খেলেছে দুটি ম্যাচে। কিন্তু আমি বাংলাদেশকে তাদের সঙ্গে তুলনা করছি না। আরও ভালো কিছু আশা করেছিলাম। তবে মাথায় রাখতে হবে, এটাই শেষ না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here