বাংলা খবর ডেস্ক:
কলম্বিয়ায় ল্যান্ডমাইন বা স্থলবোমা শনাক্ত করার ক্ষেত্রে বীরের মর্যাদা পেয়েছিল একটি ইঁদুর। ৫ বছরের ক্যারিয়ারে মাগাওয়া নামের ওই ইঁদুরটি কমপক্ষে ১০০ স্থলমাইন ও বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে। বীরোচিত ক্যারিয়ারের জন্য তাকে দেয়া হয় মেডেল। কিন্তু সেই বীর ইঁদুর আট বছর বয়সে মারা গেছে। গত বছর জুনে দায়িত্ব থেকে অবসরে পাঠানো হয়েছিল মাগাওয়াকে। তাকে এ কাজে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংগঠন এপিওপিও। মঙ্গলবার তারা বলেছে, গত সপ্তাহান্তে মারা গেছে মাগাওয়া। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, মাগাওয়া সুস্থ ছিল।
গত সপ্তাহের বেশির ভাগ সময় তার নিজস্ব নিয়মে উদ্দামের সঙ্গে খেলাধুলা করে কাটিয়েছে। কিন্তু সপ্তাহান্তে হঠাৎ সে ধীরস্থির হয়ে পড়ে। বেশি থেকে বেশি ঘুমাতে থাকে। শেষ দিন পর্যন্ত খাদ্যের প্রতি আগ্রহ কমতে থাকে তার।
কম্বোডিয়া হলো বিশ্বে সবচেয়ে বেশি স্থলবোমা স্থাপন করা দেশের অন্যতম। সেখানে কয়েক দশকের গৃহযুদ্ধের ফলে এখনও কমপক্ষে এক হাজারের বেশি বর্গকিলোমিটার এলাকায় রয়েছে স্থলবোমা। এসব বোমা শনাক্ত করতে আফ্রিকার কিছু ইঁদুরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল বেলজিয়ামভিত্তিক সংগঠন এপিওপিও। তাদেরকে ‘হিরো র্যাট’ হিসেবে খেতাব দেয়া হয়েছিল। এসব ইঁদুর দিয়ে ভূমিতে পেতে রাখা বোমা উদ্ধার করা হয়। তারপর তা নিষ্ক্রিয় করে মানুষকে করা হয় কম ঝুঁকিপূর্ণ। ২০২০ সালে বৃটেনভিত্তিক পিপলস ডিসপেনসারি ফর সিক এনিম্যালস গোল্ড মেডেল দিয়ে সম্মানিত করে। তাঞ্জানিয়ায় শঙ্কর পদ্ধতিতে জন্ম হয়েছিল মাগাওয়ার। ২০১৬ সালে তাকে কম্বোডিয়ার সিয়েম রিপে নিয়ে যাওয়া হয় মাইন শনাক্ত করাতে। সেই থেকে তার কাজ শুরু।
মাগাওয়ার মৃত্যুতে এপিওপিও বিবৃতিতে বলেছে, এপিওপিও’র আমরা সবাই মাগাওয়ার মৃত্যুতে বেদনাহত। সে যে অবিশ্বাস্য কাজ করেছে তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তার অবদানের কারণে কম্বোডিয়ার মানুষ ভীতিহীনভাবে বসবাস করার, কাজ করার এবং খেলাধুলার সুযোগ পেয়েছে।
ওদিকে কম্বোডিয়ায় মাইন পরিষ্কার করার কাজ করার সময় তিন কম্বোডিয়ান সোমবার থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছের প্রদেশে মারা গেছেন। তারা ছিলেন কম্বোডিয়া সেলফ-হেল্প ডিমাইনিং গ্রুপের সদস্য। এন্টি ট্যাঙ্ক মাইন বিস্ফোরণে তারা মারা যান। এতে আরো দু’জন আহত হয়েছেন।