বাঁচানো গেল না মরক্কোর কুয়ায় আটকে পড়া শিশু রায়ানকে

0
68
ছবি : সংগৃহীত

বাংলা খবর ডেস্ক:
উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোতে পাঁচ বছরের ছোট্ট শিশু রায়ান গত মঙ্গলবার ১০৪ ফুট গভীর একটি কূপের মধ্যে পড়ে যায়। এরপর থেকে তাকে উদ্ধারের আপ্রাণ চেষ্টা চালায় দেশটির উদ্ধারকর্মীরা। কিন্তু টানা পাঁচদিন উদ্ধারকর্মীদের আপ্রাণ চেষ্টাতেও বাঁচানো গেলো না শিশুটিকে। বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় তার নিথর দেহ কুয়া থেকে বের করে আনেন উদ্ধারকর্মীরা।

মরক্কোর রাজার বরাত দিয়ে এ খবর নিশ্চিত করেছে এপি, আরব নিউজ ও আল জাজিরা। রায়ানের মৃত্যুর সংবাদ দিয়ে মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ তার পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে মরক্কোর চেফচাওয়েন প্রদেশের ইঘরান গ্রামে নিজেদের বাড়ির কাছে একটি গভীর কুয়ায় পড়ে যায় রায়ান। ওইদিন সন্ধ্যা থেকেই উদ্ধার তৎপরতা চলছিল। তবে এ কাজে বেশ বাধার মুখে পড়েছেন উদ্ধারকারীরা।

কুয়ার মুখ দিয়ে প্রবেশ করে রায়ানের কাছে পৌঁছানোর উপায় ছিল না। কারণ মাটিতে পাথর ও বালুর সংমিশ্রণ ছিল। এর ফলে কুয়ার সংকীর্ণ মুখে খোঁড়াখুঁড়ি বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। যেকোনো সময় ধসের ঘটনা ঘটতে পারতো।

তবে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে কৌশলে শিশুটিকে উদ্ধারের পথ বেছে নেওয়া হয়। কুয়ার কাছে বুলডোজার দিয়ে খোঁড়া হয় নালা। সেটি ব্যবহার করে আড়াআড়িভাবে শিশুটির কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হয়।

শনিবার স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যম জানিয়েছিল, শিশুটির থেকে আর মাত্র ১ দশমিক ৮ মিটার দূরে রয়েছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রায়ানকে উদ্ধার করা হলেও ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়েছে।

রায়ানের মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে তোলার পর ঘটনাস্থল ত্যাগ করছেন তার মা-বাবা

একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ঘটনার প্রথম থেকেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের চোখ ছিল মরক্কোর উদ্ধার তৎপরতার দিকে। পরিকল্পনা মোতাবেক গতকাল শনিবার শিশুটিকে বের করে আনতে জোরেসোরে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন জরুরি বিভাগের কর্মীরা। বুলডোজার, ক্রেনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। এর আগে, দড়ি দিয়ে কিছু শুকনো খাবার, পানি এবং অক্সিজেনের মাস্ক পৌঁছানো হয় শিশুটির কাছে।

উদ্ধার কাজের নেতৃত্বে থাকা আবদেলহাদি টেমরানি এর আগে জানিয়েছিলেন, ‌ছেলেটির অবস্থা সম্পর্কে জানা খুব কঠিন। কিন্তু তারা খুব আশাবাদী। কুয়ায় পাঠানো ক্যামেরায় দেখা গেছে সে একপাশে শুয়ে আছে।

বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছিল, উদ্ধারকর্মীরা শিশুটিকে মাত্র দুই মিটার দূরে আছেন। টেমরানি বলেন, ‌‘রায়ানের কাছে পৌঁছাতে আর মাত্র দুই মিটার খনন করতে হবে। আশা করি, আমরা কোনো পাথরের মুখে পড়বো না।’

কুয়ার গর্তের প্রস্থ ছিল মাত্র ৯ দশমিক ৮ ইঞ্চি। ফলে কাজে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীনে পড়তে হয়। এজন্য পাশেই বিশাল গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। গভীরতার কারণে অন্ধকারের আলো জ্বালিয়ে দিন-রাত কাজ করেন উদ্ধারকর্মীরা। এতে নেতৃত্বে দেয় মরক্কোর বেসামরিক সুরক্ষা অধিদপ্তর।

প্রসঙ্গত, পাঁচদিন আগে শিশু রায়ানের বাবা কুয়াটির মেরামত কাজ করছিলেন। সে সময় রায়ান হঠাৎ করে কুয়ায় পড়ে যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here