ঈদের সময় সড়কে ঝড়ল ৩১১ প্রাণ

0
231

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
ঈদুল আজহার আগে-পরে ১২ দিনে সারা দেশে ২৭৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১১ জন মারা গেছে। আহত হয়েছে এক হাজার ১৯৭ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৪৩ জন, শিশু ৫৮ জন। ১৫৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে ১২৩ জন, যা মোট নিহতের ৩৯.৫৪ শতাংশ।

এসব দুর্ঘটনায় ৪৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৩ জন, যা দুর্ঘটনায় মোট নিহতের ১৭.০৪ শতাংশ।
গত ৫ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য পর্যবেক্ষণ করে এসব তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করে। এই সময়ে ৯টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছে এবং ছয়জন নিখোঁজ রয়েছে। ১৪টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১২৩ জন, বাস যাত্রী ৩৩ জন, ট্রাক-পিকআপ-লরি আরোহী ১৬ জন, মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার যাত্রী ১৮ জন, তিন চাকার যানে ৫৭ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-আলমসাধু-টমটম-মাহিন্দ্রা-পাওয়ারটিলার) ১০ জন এবং বাইসাইকেল-পেডেল রিকশা আরোহী আটজন নিহত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১০৯টি জাতীয় মহাসড়কে, ৭৭টি আঞ্চলিক সড়কে, ৬১টি গ্রামীণ সড়কে এবং ২৭টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ৭৬টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৯৯টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৫১টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৪২টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ছয়টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

সবচেয়ে বেশি ১৫৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১২৩ জন নিহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ৩১.১৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২২.০৭ শতাংশ। অন্য যানবাহন দ্বারা মোটরসাইকেল ধাক্কা/চাপায় আক্রান্ত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৬.৭৫ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত চালক ও আরোহীদের মধ্যে ৫৯.৩৪ শতাংশের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছর এবং নিহত পথচারীদের ৩২.৬০ শতাংশ বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত হয়েছে।

২০২১ সালের ঈদুল আজহা উদযাপনকালে ৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৯৫ জন নিহত হয়েছিল। এই হিসাবে এ বছর ঈদুল আজহায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ৮৫.৫৪ শতাংশ, প্রাণহানি বেড়েছে ১৯.৪৭ শতাংশ।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত অন্য যানবাহনের মধ্যে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-লরি ১৬.৪২ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার-জিপ ৩.৭৪ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১৭.৪৬ শতাংশ, তিন চাকার যান ১৯.৯৫ শতাংশ রয়েছে। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৪৮১টি। এর মধ্যে ট্রাক ৩৬, বাস ৮৪, কাভার্ড ভ্যান ৮, পিকআপ ১৬, মোটরসাইকেল ১৬৪, তিন চাকার যান রয়েছে ৯৬টি।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৯৩টি দুর্ঘটনায় ১০৪ জন নিহত হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে সবচেয়ে কম ১৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ১৭ জন নিহত হয়েছে। একক জেলা হিসেবে টাঙ্গাইল জেলায় সবচেয়ে বেশি ২০ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, মাগুরা, ঝালকাঠি, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁও জেলায়। এই ৯ জেলায় স্বল্পমাত্রার কিছু দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। রাজধানীতে ১৯টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here