শেষ হাসি কার, পাকিস্তান না নিউজিল্যান্ডের !

0
44

বাংলা খবর ডেস্ক:
শেষ হাসি কার, পাকিস্তান না নিউজিল্যান্ডের! সিডনি থেকে তিনটি বিমানের টিকিট বুক করে রেখেছে আইসিসি। দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট- পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডগামী আর ডমিস্টিক ফ্লাইটটি মেলবোর্নের। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যে রুটের টিকিট বাতিল করা হবে, সেই দলের গন্তব্য মেলবোর্ন। পাকিস্তান বা নিউজিল্যান্ডের কোন দল দেশে ফেরার বিমান ধরবে, সেটা নির্ধারণ হবে আজকের সেমিফাইনালে; যে ম্যাচ বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শুরু হবে, বৃষ্টি বাগড়া না দিলে। সেমিফাইনাল জিতে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পাকিস্তান না নিউজিল্যান্ড খেলবে, সন্ধ্যার মধ্যেই তা জানা যাবে। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পক্ষে বাজি ধরা লোকই বেশি। কারণ টি২০ বিশ্বকাপের আট আসরে ষষ্ঠবারের মতো সেমিফাইনাল খেলবে তারা। প্রথম দুই আসরে ফাইনাল খেলে শিরোপাও জিতেছে একবার। নিউজিল্যান্ড সে তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে, তিনবার সেমিতে ও একবার ফাইনাল খেলে এখনও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। টি২০ বিশ্বকাপের বর্তমান রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড ২০১৫ সাল থেকে চোকারের দুর্নাম ঘুচিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে দারুণ বিনোদন দিয়ে যাচ্ছে। দুটি ওয়ানডে এবং একটি টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরে যাওয়া কিউইরা এবার শিরোপার দাবিদার। সেদিক থেকে সেমিফাইনাল রেস জিতে মেলবোর্নে ১৩ নভেম্বরের ফাইনালের টিকিট পেতে মরিয়া হয়ে খেলবেন কেন উইলিয়ামসনরা। আবার পাকিস্তান ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি টি২০ বিশ্বকাপে ঘটালে, অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ ইমরান খানের পাকিস্তান দলের ছায়া বাবরের দলে দেখতে পাচ্ছেন অনেকে।

বিশ্বকাপে পাকিস্তান বরাবরই একটা পর্যায় পর্যন্ত যায়। সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল খেলার মতো দলও তারা। যদিও এবারের টি২০ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে খুব একটা ভালো করতে পারেনি। ভারত আর জিম্বাবুয়ের কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল। অনেকটা ভাগ্যের ছোঁয়ায় পাকিস্তানের সেমিফাইনাল খেলা। মোট কথা দক্ষিণ আফ্রিকা নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে পাকিস্তানকে সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে শেষ ম্যাচে হারিয়ে সিডনির টিকিট কেটেছে তারা। এই যে অনিশ্চয়তার দোলাচলে থেকে সেমিফাইনাল খেলা পাকিস্তানই ভয়ংকর। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর একবার সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারলে পাকিস্তানকে ঠেকানো কঠিন। গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে দলটির কোচ ম্যাথু হেইডেনকে ১৯৯২ এর পুনরাবৃত্তি নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে রোমাঞ্চিত হন তিনি। পাকিস্তানের অস্ট্রেলিয়ান এ কোচের কথায় বোঝা গেল, তিনিও চান এবার তেমন কিছু হোক।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের টি২০ রেকর্ড বেশ ভালো। মোট ২৮ বারের দেখায় ১৭টি ম্যাচে জিতেছেন বাবর আজমরা। বিশ্বকাপের ঠিক আগে নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে যে ত্রিদেশীয় সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়েছে, সে টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েই শিরোপা জিতেছে দলটি। সে কারণেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সেমিফাইনালে উঠলেও সিডনির আজকের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফেভারিটের তকমা পাকিস্তানের। যদিও ম্যাথু হেইডেন নিজেদের ফেভারিট মনে করেন না। তিনি দুই দলের জন্যই সমান সুযোগ দেখছেন। তাঁর মতে, ‘নিউজিল্যান্ড এই মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০০ রান করেছিল। ডেভিড কনওয়ে অবিশ্বাস্য রকম বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিল। অস্ট্রেলিয়াকে ১১১ রানে গুটিয়ে দিয়ে বড় জয় পায় তারা। তাদের বোলিং লাইনআপও খুবই শক্তিশালী। সেদিক থেকে দুই দলের জন্যই সামন সুযোগ থাকছে সেমিফাইনাল জেতার।’ পাকিস্তান কোচ আরও একটি জায়গায় স্মার্টনেস দেখালেন, নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল জয়ের সঙ্গে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালকে মেলাতে চাননি তিনি। এর পরও কথা থাকে, বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের রেকর্ড ভালো। গ্রুপ ও নকআউট ম্যাচ মিলিয়ে দুই দলের ছয় দেখায় চারবার জিতেছে পাকিস্তান। প্রথম টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কিউইদের হারিয়েই জোহানেসবার্গে ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল খেলেছিলেন মিসবাহ উল হকরা।

সব পরিসংখ্যান পাকিস্তানের পক্ষে গেলেও টি২০ ক্রিকেট নির্দিষ্ট দিনের খেলা। নার্ভ ধরে রেখে তিন বিভাগে ভালো খেলা দলই জেতে। ২০১৫ সাল থেকে ওয়ানডে এবং টি২০ বিশ্বকাপে যেটা করে দেখাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। মিস্টার কুল কেন উইলিয়ামসনের নেতৃত্বগুণ এবং পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিলে নিউজিল্যান্ডের জয়ের পাল্লা ভারি। সবচেয়ে বড় কথা কিউইরা দল হিসেবে ছন্দ দেখাচ্ছে। বিধ্বংসী ব্যাটার এবং বোলার দুটোই রয়েছে দলটিতে। কেন উইলিয়ামসন নিজেদের ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী। সিডনির ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা শক্তিশালী একটি দল। জানি কঠিন একটি ম্যাচ হতে চলেছে। দুই দলই ভালো ক্রিকেট খেলে সেমিতে এসেছে। অতীতে কী হয়েছে, তাতে কিছু যায় আসে না। আমি মনে করি, দুই দলই কালকের (আজ) ম্যাচের দিকে তাকিয়ে।’ সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কোনো দলই আসলে নিজেদের ফেভারিট ভাবতে চায় না। প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সেরা ক্রিকেট খেলে ম্যাচ জিততে চায়। পাকিস্তানের কোচ আর নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক সেই প্রক্রিয়ার ভেতরে থেকেই সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডসকে স্মরণীয় করে রাখতে চান। সেদিক থেকে দেখার বিষয়, সিডনি থেকে কোন দল প্রথমে মেলবোর্ন যায়। সিডনিতে আজ বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও আয়োজকরা আশা করছেন, পুরো ৪০ ওভার খেলা হবে। কোনো কারণে কার্টেল ওভারের ম্যাচ হলে আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী নূ্যনতম ১০ ওভারের ইনিংস অর্থাৎ ২০ ওভারের ম্যাচ হতে হবে সেমিফাইনালে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here