কূটনীতিক বহিষ্কার: ব্রিটেন-রাশিয়া সম্পর্ক কোন পথে?

0
100

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ২৩ জন রুশ কূটনীতিককে ব্রিটেন থেকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা দেওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠছে ব্রিটেন কেন এতো কূটনীতিক একসঙ্গে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে?

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওই ২৩ জন কূটনীতিক প্রকৃতপক্ষে গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং তাদেরকে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্রিটেন ছেড়ে যেতে হবে। অন্যদিকে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ অভিযোগ করেছেন, ব্রিটেন এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। ব্রিটেনের এ রকম পদক্ষেপ রাশিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্কে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক জিল্লুর রহমান খান মনে করেন, ব্রিটেন বুঝতে পেরেছে এর মাধ্যমে আমেরিকার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হবে। রাশিয়ার সঙ্গে কোন কাজ হবে না।মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্রিটেনের প্রতি নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

জিল্লুর রহমান খান বলেন, ‘কানাডার সঙ্গে ব্রিটেনের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমেরিকার সঙ্গে যদি ভালো সম্পর্ক বজায় থাকে তাহলে ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা অন্যদের প্রয়োজন নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমার তো মনে হয় পুতিন এবার বলবে যে এদের ব্যাপারে তাঁর কোনো হাত ছিল না। পুতিন ও ট্রাম্প কেউ কারো চেয়ে কম নয়।’

রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কার করার পেছনে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের প্রতি আমেরিকার সমর্থন ছিল বলে তিনি মনে করেন। কূটনীতিক বহিষ্কারের লড়াই নতুন কিছু নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় থেকে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে এক ধরনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নকে মোকাবেলার জন্য আমেরিকার নেতৃত্বে সামরিক জোট ন্যাটো গঠন করা হয়েছিল।

জিল্লুর রহমান খান আরো বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেল।পুতিন চাচ্ছেন সোভিয়েত ইউনিয়ন যে রকম সুপার পাওয়ার ছিল, আবার সে অবস্থায় ফিরে যাক দেশটি।’

এমন অবস্থায় ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে রাশিয়াকে মোকাবেলা করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে রাশিয়ার উপর নানা ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। চীন এবং রাশিয়া থেকে যেসব পণ্য আমেরিকার বাজারে আসে সেগুলোর ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করা আছে।

জিল্লুর রহমান খান মনে করেন, রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তি নিয়ে আমেরিকার উদ্বেগ রয়েছে। সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, এতে আভাস পাওয়া যায় – রুশ-মার্কিন সম্পর্ক উষ্ণ হবার কোনো আশু সম্ভাবনা এখন আর নেই।

যেভাবে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার আধুনিকায়নের কথা বলছে, তাতে অনেকেই স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের কথা মনে করে উদ্বিগ্ন বোধ করবেন।

জিল্লুর রহমান খান বলেন, দেশের ভেতর পুতিনের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাঁর রাশিয়া সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ রাশানরা পুতিনকে যে সাপোর্ট দেয় সেটা আপনারা চিন্তাও করতে পারবেন না। কারণ রাশিয়ার অধিকাংশ মানুষ মনে করে পুতিনের মাধ্যমে তারা আবার সুপার পাওয়ারে যেতে পারবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here