নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ, সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশও থেমে নেই এই অপরাধ। এদিকে যেমন বাড়ছে মানুষ তেমনি বাড়ছে অপরাধ। আর কোনো অপরাধই চিরতরে নির্মূল করা যায় না। তবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে কমিয়ে আনার নজির আছে নানা সভ্যতায়।
নারী নির্যাতন বন্ধে সরব দুনিয়ার সব প্রান্তের মানুষ। পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষও সরব হয়েছে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবনের পরিবর্তের মৃত্যুদণ্ড করতে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানেও নানা শ্রেণী পেশার মানুষ সরব হয়েছেন এই আন্দোলনে।
হলিউড থেকে জাতিসংঘ, ইউরোপ কিংবা ভারতবর্ষ সবাই একজোট নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে। নিরবতা ভেঙ্গে নির্যাতন বন্ধ আর বিচার দাবিতে সরব হয়েছে নারীরাও। পাশাপাশি দাবি উঠেছে নারীর জন্য নিরাপদ পৃথিবীর। আর সেই আন্দোলনের ঢেউ উঠেছে বাংলাদেশেও। ঢাকা অথবা সিলেট কিংবা চট্টগ্রাম সবখানেই প্রতিবাদ। দেশে প্রচলিত আইনে নারী নির্যাতনের সর্বোচ্চ দন্ড যাবজ্জীবন। তবে শিশু ও নারী নির্যাতনের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সবাই চান ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
প্রতিবাদকারীরা বলেন, মৃত্যুদণ্ড দিলে আগামীতে যে ধর্ষকরা পরিকল্পনা করছে ধর্ষণের তারা শিউরে উঠবে। প্রতিনিয়ত ধর্ষণের সংখ্যা এতো বেশি বেড়ে যাচ্ছে যে একটি শিশুকে ধর্ষণ করতেও তাদের বুক কাপচ্ছে না। কারণ তারা জানে এটির শাস্তি কিছুই না।
আন্দোলনের শক্তিশালী জায়গা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম। আর সেখানে বার্তা দিয়ে এবং প্রচারণা চালিয়ে সমাবেত হয়েছেন অনেকে। আবার অনেক সাহসী নারী একাই নেমেছে রাজপথে।
সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক নেহাল করিম বলেন, আমাদের দেশে সব ধরণের আইন আছে কিন্তু তার প্রয়োগ নেই। আর প্রয়োগ নেই বলে আমারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না। আর যারা ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে আমি তাদের সাথে একমত।
বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি শতকরা ৪০ ভাগ নারী ধর্ষণের শিকার হয়। আর সেখানে ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন। আর ইউরোপের দেশ সুইডেনে প্রতি ৪ জনে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়। এখানে ধর্ষণের শাস্তি ৭ বছরের জেল। এছাড়া দেশে বছরে প্রায় হাজারখানেক ধর্ষণের ঘটনার খবর পাওয়া যায়। প্রতিবেশী ভারতে এমনকি পাকিস্তানেও ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আর চীনে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা খোজাকরণ।
মানবাধিকার আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার। আর এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।
যেমন মানুষ বেড়েছে তেমনি বেড়েছে অপরাধ। কোনো অপরাধই চিরতরে নির্মূল করা যায় না। তবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে কমিয়ে আনার নজির আছে নানা সভ্যতায়।
সূত্র : যমুনা টিভি