গ্রীষ্মকাল প্রায় এসে গেছে। আর গ্রীষ্ম মানেই গরম। আর এই গরম কালেই বাংলার মাটিতে বেশিরভাগ ফল পাওয়া যায়। গ্রীষ্মের ফল মানেই আম, জাম, লিচু, বাঙি, তরমুজ, কাঠালের কথা উঠে আসে। তবে গরম কালের সবচেয়ে আরামদায়ক ফল যে শসা আর তরমুজ তা যে কেউ এক বাক্যে স্বীকার করবেন। তাই গরমে যদি আপনার দ্রুত ওজন কমানোর তাড়া থাকে তাহলে চোখ বুজে মেনে চলতে পারেন তরমুজ ডায়েট। রোগা যেমন হতে পারবেন, তেমনই শরীর থেকে টক্সিন দূর করতেও সাহায্য করবে তরমুজ ডায়েট।
আপনি দুইভাবে তরমুজ ডায়েট প্ল্যান করতে পারেন। লং টার্ম ও শর্ট টার্ম ডায়েট প্ল্যান। লং টার্ম প্ল্যানের আবার দুটি ধাপ রয়েছে। লং টার্ম প্ল্যানের প্রথম তিন দিন শুধু তরমুজ খেয়েই থাকতে হবে। যদি কোনও শারীরিক সমস্যা না দেখা দেয় তা হলে তরমুজ ডায়েট চালিয়ে যান। সমস্যা দেখা দিলে ডায়েট বন্ধ করুন।
ষষ্ঠ দিনে ব্রেকফাস্টে খান ওটমিল বা টোস্টের সঙ্গে চিজ স্লাইস। লাঞ্চে খান বয়েলড চিকেন ব্রেস্ট বা ফিশের সঙ্গে স্যালাড। দিনের মাঝে স্ন্যাকস হিসেবে ২-৩ টুকরো করে তরমুজ খেতে থাকুন। ডিনারে খান শুধুই তরমুজ।
শর্ট টার্ম প্ল্যানের ক্ষেত্রে ৫ দিন তরমুজ ডায়েট মেনে চলতে হবে। ব্রেকফাস্টে খান এক স্লাইস টোস্ট ও তরমুজ। কিছুক্ষণ পর গ্রিন টি বা ব্ল্যাক কফি। লাঞ্চে বয়েলড চিকেন। ডিনারে ১০০ গ্রাম ভাতের সঙ্গে সবুজ শাক-সব্জি বা ১০০ গ্রাম মাছ। সঙ্গে ২ টুকরো তরমুজ।
তবে সাধারণত পাঁচ দিনের জন্যই এই ডায়েট মেনে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগানোর পাশাপাশি তাড়াতাড়ি মেদ ঝরাতেও সাহায্য করে এই ডায়েট। তরমুজের ৯২ শতাংশ জল, ৬ শতাংশ চিনি ও ২ শতাংশ ফাইবার। তরমুজের জল শরীর থেকে টক্সিন দূর করার পাশাপাশি খিদে কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার পেট ভরা রাখে অনেকক্ষণ।
জার্নাল অব আফ্রিকান ফুড অ্যান্ড কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্লান্ত শরীরে এই ডায়েট খুব ভাল কাজ দেয়। যদিও এই ডায়েট মেনে চলাকালীন শরীরচর্চা করা উচিত নয়। তরমুজের মধ্যে থাকে এল-কোরালিন। যা শরীরে এল-আর্জিনিনে রূপান্তরিত হয়। এই এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে পেশী প্রসারণে সাহায্য করে। ফলে ব্যথা, বেদনা কমাতেও সাহায্য করে এই ডায়েট।
প্রেগন্যান্ট মহিলারা এই ডায়েট এড়িয়ে চলুন। যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ও বাচ্চাদের এই ডায়েট এড়িয়ে চলা উচিত।