কানাডার টরোন্টো শহরের একটি ব্যস্ত রাস্তার ধারে পথচারীদের ওপরে গাড়ি উঠিয়ে দেয়ার ঘটনায় নিহত বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে টরেন্টোর ইয়োনগি সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এতে আরও ১৫ জন আহত হয়েছেন। খবর: রয়টার্স, বিবিসি ও আলজাজিরা।
ঘটনার সময় পথচারীরা রাস্তা পার হওয়ার জন্য একটি ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হামলার পরপরই ক্যাভার্ড ভ্যানটি নিয়ে চালক পালিয়ে যায়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই গাড়িসহ তাকে আটক করে পুলিশ।
পরে পুলিশ সন্দেহভাজন হামলাকারীর নাম প্রকাশ করে। অ্যালেক মিনাসিয়ান (২৫) হামলার পর সড়কে চলার সময় আরও বেশ কয়েকটি স্থানে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ তর্ক করেন। এক পর্যায়ে তাকে আটক করা হয়। কোনো ধরনের গুলির ঘটনা ছাড়াই তাকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
টরেন্টোর ডেপুটি চিফ পিটার ইউয়েন প্রত্যক্ষদর্শীদের ঘটনা সম্পর্কে পুলিশকে জানাতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘এ ঘটনায় একটি বিস্তারিত তদন্ত করা হবে।’
পিটার ইউয়েন আরও বলেন, ‘প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা যাতে বক্তব্য তুলে ধরতে পারেন, সেজন্য পৃথক হটলাইন চালু করা হয়েছে।’
শহর পুলিশের প্রধান মার্ক স্যান্ডার্স সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘চালক ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাটি ঘটাতে পারেন বলে আমরা ধারণা করছি। হামলাকারী কোনো সংগঠিত জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তবে এখন পর্যন্ত হামলার উদ্দেশ্য স্পষ্ট নয়।’
তিনি বলেন, ‘সন্দেহভাজন হামলাকারী অ্যালেক মিনাসিয়ান টরেন্টোর রিচমন্ড হিল থেকে এসেছেন। আগে তার বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো ঘটনা পাওয়া যায়নি।’
কানাডার জননিরাপত্তামন্ত্রী রালফ গোদালে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তদন্ত চলায় এখন আর কোনো বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য দেয়া সম্ভব নয়। পুলিশ অবশ্যই তাদের বিস্তারিত তদন্ত করবে। আসলে কী ঘটেছে আর কেন ঘটেছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে।’
বেশ ক’টি ভিডিওতে দেখা গেছে, আটকের আগে হামলাকারী পুলিশের দিকে কিছু একটা তাক করে আছেন।
এর পরপরই তাকে আটক করা হয়।
এতে আরও দেখা যায়, লাশগুলো ব্যাগে ভরা হচ্ছে এবং পুলিশ আক্রান্ত মানুষজনকে সহায়তা করছে।
হামলাস্থল থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ সাতটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক বৈঠকে বসেছিলেন।
এদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ ঘটনায় হতাহত ও তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
পার্লামেন্টে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, ‘আক্রান্ত সবার জন্য আমাদের হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে।’
ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে একই ধরনের হামলায় বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গতবছরের অক্টোবরে গাড়ি হামলায় ৮ জন নিহত হন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here