টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী নাদিয়া আহমেদ। তবে নিজের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এবার প্রথমবারের মতো তিনি নাম লিখিয়েছেন উপস্থাপনায়। পবিত্র মাহে রমজানের মাসব্যাপী তিনি থাকছেন মাছরাঙা টিভিতে ‘জিরোক্যাল ড্রিঙ্কস ড্রেজার’ শিরোনামের একটি অনুষ্ঠান নিয়ে। এটি রমজানের বিশেষ আয়োজনে বলেই উপস্থাপনা করছেন বলে জানান তিনি। নাদিয়ার ভাষ্য, আমি নাচ ও অভিনয় নিয়ে থাকতে স্বচ্ছন্দ্যবোধ করি। বিভিন্ন সময় উপস্থাপনার জন্য প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু বরাবরই আমি না করেছি। তবে এটি অন্য অনুষ্ঠানগুলো থেকে ভিন্ন মনে হয়েছে। এছাড়া চ্যানেল থেকেও বারবার বলা হয়েছিল। তাই এই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে আমার সঙ্গে বিভিন্ন তারকা থাকছেন প্রতিটি পর্বে। অভিনয়ের বাইরে নাদিয়া একজন নৃত্যশিল্পী। তবে টিভিতে অভিনয়ে তার ব্যস্ততা। তবুও নিজেকে নৃত্যশিল্পী পরিচয় দিতে পছন্দ করেন বলে জানান। আজকাল টিভি চ্যানেলগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন কর্পোরেট অনুষ্ঠানে নাচের চাহিদা বাড়ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। নাদিয়া বলেন, রমজানের আগ মূহূর্তে চট্টগ্রাম, আমেরিকান অ্যাম্বাসির আয়োজনে ও যশোরের ক্যান্টনমেন্টে কয়েকটি শো করেছি। ঈদে টিভিতেও কয়েকটি নাচের অনুষ্ঠানে আমাকে দেখা যেতে পারে। যেকোনো অনুষ্ঠানে নাচ এখন প্রধান আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে আমি মনে করি। এই অভিনেত্রী এখন আসছে ঈদের নাটক-টেলিছবির কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। একইসঙ্গে তিনি ৯টি ধারাবাহিকে কাজ করছেন। বিশেষ দিবসের নাটক-টেলিছবির বাইরে সারা বছরই তাকে ধারাবাহিক নাটক নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় বলেও জানান তিনি। তার অভিনীত ধারাবাহিকগুলো হলো মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘গল্পগুলো আমাদের’, ডিকে আকাশের ‘ক্যাট হাউজ’, জাবির রাসেলের ‘বিড়ম্বনা’, তুষার খানের ‘বহে সমান্তরাল’, ইমরান হাওলাদারের ‘সালিশ মানি তালগাছ আমার’, আল হাজেনের ‘ভবঘুরে’, ফজলুর রহমানের ‘উল্টো পথে উল্টো রথে’, শামিম জামানের ‘সব জান্তা শমসের’ এবং হিমু আকরামের চম্পাকলি’। একসঙ্গে নয়টি ধারাবাহিকে কাজ করা প্রসঙ্গে নাদিয়া বলেন, বিভিন্ন সময় থেকে এই ধারাবাহিকগুলোর কাজ করেছি। তবে প্রতিটি ধারাবাহিক নাটকে আমি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছি। প্রচার চলতি ধারাবাহিকগুলোর জন্য দর্শকের কাছে বেশ সাড়া পাচ্ছি। এই সময়ের ধারাবাহিকগুরো দর্শক ধরে রাখতে পারছে না বলে অনেকে মন্তব্য করেন। কয়েকটি পর্ব প্রচারের পর থেকে ধারাবাহিকের গল্প ও চরিত্রে সমন্বয় থাকে না বলেও অনেক শিল্পী বলেন। এই প্রসঙ্গে নাদিয়া বলেন, একজন শিল্পীর সব কাজ ভালো হবে এমনটা আশা করা যায় না। এখন নাটক নির্মাণের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে কিছু খারাপ কাজ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে সব কাজ খারাপ হচ্ছে বলা যায় না। এখন দর্শকের রুচিরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। দর্শক টিভি চ্যানেলগুলোতে বিনোদন খোঁজে। সেই কারণে নির্মাতা ও চ্যানেলগুলো কমেডি বা হাসির নাটক চায় বেশি। তবে এটি সত্যি একজন নির্মাতা ঈচ্ছে করলে বিভিন্ন মজার মজার ঘটনার মধ্য দিয়ে সমাজের নানা অসঙ্গতি নাটকে তুলে ধরতে পারেন। আজকাল টিভি নাটকের নির্মাতাদের শিল্পীদের সঙ্গে আচরণ, অভিনয় শিল্পীদের শিডিউল ফাঁসানো, স্ক্রিপ্ট না পড়ে স্পটে যাওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। ফলে শিল্পী-নির্মাতা সকলে বিপাকে পড়ছেন। এই প্রসঙ্গে নাদিয়া বলেন, আমরা প্রত্যেকে পেশার প্রতি দায়িত্বশীল হলে কখনো এমনটা হওয়ার কথা নয়। প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গায় নিষ্ঠাবান হতে হবে। কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে। তবেই একটি ভালো কাজ সৃষ্টি হবে। একটি কাজের পেছনে সবার সমান পরিশ্রম থাকে। সেখানে এটিকে দায়সারাভাবে আদায় করলে আমাদের নিজেদেরই ক্ষতি হবে।