বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের সামনে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তি। এ জন্য আমরা আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথের কর্মসূচিতে আছি। আসন বণ্টনের সময় এখন নয়। নির্বাচনের এখনো অনেক সময় বাকি আছে। দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থে বেগম জিয়াকে মুক্ত না করতে পারলে আসন দিয়ে কি হবে। চেয়ারপারসন মুক্তি পেলে আমাদের দাবিগুলোকে সরকার মেনে নিলে অবশ্যই আমরা নির্বাচনে যাব। আমাদের পাশাপাশি ২০ দলও এই সরকারের দুঃশাসনের শিকার। সেক্ষেত্রে নিশ্চয়ই জোটকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। এ নিয়ে কারও হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’ বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, জোটের দুই চারটি ছাড়া অধিকাংশ দলই নামসর্বস্ব ও প্যাডসর্বস্ব। এরমধ্যে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নেই অন্তত ১২টির। জোটের অন্যতম প্রধান শরিক জামায়াতের নিবন্ধনও বাতিল হয়েছে। যদিও বিষয়টি এখন উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। ধানের শীষের প্রতীকের বাইরে নির্বাচন করে কোনো দলের জিতে আসাও কঠিন। বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা যত ভোট পাবেন, অনেক শরিক দলের কোনো কোনো নেতা সেই ভোটও পাবেন না, এটাই বাস্তবতা। বিষয়টি জোটকেও বুঝতে হবে। তারপরও বিএনপি জোটকে অবমূল্যায়ন করছে না। বিএনপি প্রধান এখন জেলে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া এখনো অনিশ্চিত। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই আন্দোলনে জোটের শরিকদের তেমন কোনো গরজ নেই। তারা সবাই এখন চায়, নিজেদের আসনের নিশ্চয়তা। জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা বিএনপির সঙ্গে আসন নিয়ে কথা বলতে চাইলে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। দীর্ঘ সাত বছর শুধু নানাবিধ আশ্বাসেই কাটাতে হচ্ছে শরিকদের। বিএনপির এই দুঃসময়ে কোনো শরিক দল জোট ছেড়ে যায়নি। এ বিষয়টিও বিএনপি স্বীকার পর্যন্ত করে না। তা ছাড়া ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে অনেকাংশে বিএনপির নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো চাপিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে ২০ দল ছাড়াও যুক্তফ্রন্টসহ সরকারবিরোধী অন্যান্য দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়তে কাজ করছে বিএনপি। সেটা সফল হলে তাদেরও আর বেশ কয়েকটি আসন ছেড়ে দিতে হবে। যুক্তফ্রন্টের উদ্যোক্তা অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, তার ছেলে মাহী বি চৌধুরী, মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, অন্য দলের মধ্যে ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীসহ এসব দলের সিনিয়র নেতাদের জন্য অন্তত ২০টি আসন ছেড়ে দিতে হবে বিএনপিকে। বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী বলেন, ‘আমরা একটি জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি নিয়ে কাজ করছি। এখানে আসন সংখ্যা মুখ্য হতে পারে না। আমরা জাতীয় রাজনীতির ভারসাম্য চাই, যাতে এককভাবে কোনো দল ক্ষমতায় না থাকে। বিএনপি একটি বড় দল হিসেবে তাদের আসন সংখ্যা বাড়তেই পারে তবে সেটা যেন ১৫০ এর বেশি না হয়।’

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here