স্পেনের ঘরোয়া ফুটবলে এবার মেসি-রোনালদো দ্বৈরথ মিস করবেন ফুটবলপ্রেমীরা। ৯ বছরের রিয়াল মাদ্রিদ অধ্যায়ের ইতি টেনে গত মাসে জুভেন্টাসে যোগ দেন পর্তুগিজ সুপারস্টার। রোনালদোর বিদায়ে লা-লিগায় বার্সেলোনা সুপারস্টার মেসির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কে হবেন? স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘এএস’ তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানায়, গ্যারেথ বেল কিংবা আন্তোইন গ্রিজম্যান রোনালদোর জায়গা নিতে পারেন। রোনালদো চলে যাওয়ায় রিয়ালের আক্রমণভাগে ভরসার প্রতীক বেল। গ্যালাকটিকোদের পথ দেখাচ্ছেন ওয়েলস তারকা। ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জিতে নতুন মৌসুমে চোখ রাখছেন গ্রিজম্যান। গত জুনে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে পাঁচ বছরের নতুন চুক্তি করে বার্সায় যোগ দেয়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দেন ২৭ বছর বয়সী এই তারকা ফরোয়ার্ড। অ্যাটলেটিকোতে চার মৌসুম শেষ করেছেন সাবেক রিয়াল সোসিয়েদাদ খেলোয়াড় গ্রিজম্যান। রিয়ালে পাঁচ মৌসুম কাটিয়েছেন ২৯ বছর বয়সী উইঙ্গার বেল। ইনজুরির কারণে ২০১৬-১৭ মৌসুমে লা-লিগায় মাত্র ১৯ ম্যাচ খেলেন তিনি। গত মৌসুমে ২৬ ম্যাচে ১৬ গোল করে ছন্দে ফেরেন বেল। রিয়ালের জার্সিতে লা-লিগায় ১২৬ ম্যাচে তার নামের পাশে ৭০ গোল। গ্রিজম্যানও গত মৌসুমে দারুণ খেলেন। ৩২ লীগ ম্যাচে করেন ১৯ গোল। তার আগের মৌসুমে ৩৬ ম্যাচে পান ১৬ গোল। আর প্রথম দুই মৌসুমেই ২২ গোল করতে ম্যাচ খেলেন যথাক্রমে ৩৭ ও ৩৮টি। দলীয় অর্জনে বেলের চেয়ে অনেক পিছিয়ে গ্রিজম্যান। অ্যাটলেটিকোর হয়ে দু’টি শিরোপা জেতেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে গত মৌসুমের ইউয়েফা ইউরোপা লীগ। ২০১৪ সালে রিয়ালকে হারিয়ে জেতেন স্প্যানিশ সুপার কাপ। ২০১৫-১৬ ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনালে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে হার দেখে অ্যাটলেটিকো। রিয়ালের হয়ে টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয় ছাড়াও একটি করে লা-লিগা ও কোপা দেল রে এবং দু’টি উইয়েফা সুপার কাপ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন বেল। আগামীকাল শুরু হচ্ছে লা-লিগার ২০১৮-১৯ মৌসুম। স্প্যানিশ ফুটবলে বেল কিংবা গ্রিজম্যান মেসির প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারবেন কিনা তা সময়েই বলে দেবে।

গত ৯ মৌসুমে মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথ কেমন ছিল তার একটা চিত্র দেখে নিতে পারেন। লা-লিগায় গত ৯ মৌসুমের মধ্যে ৮ বারই সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার যায় এই দু’জনের হাতে। পাঁচবার মেসি ও তিনবার ‘পিচিচি ট্রফি’ জেতেন রোনালদো। মাঝে বার্সার হয়ে ২০১৫-১৬ মৌসুমে লা-লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতা (৪০ গোল) হন লুইস সুয়ারেজ। ইউরোপের ঘরোয়া ক্লাব প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়াতেও মেসি-রোনালদোর দাপট। সর্বাধিক পাঁচবার ‘ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু’ জেতেন মেসি। শুরুটা হয় ২০০৯-১০ মৌসুম থেকে। ৩৪ গোল নিয়ে গত মৌসুমে রোনালদোকে টপকে যান আর্জেন্টাইন আইকন। ম্যানইউর হয়ে একবার এবং রিয়ালের হয়ে তিনবার এই পুরস্কার হাতে নেন রোনালদো। গত ১০ বছর ধরে বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ব্যালন ডি’অর জয়ে মেসি ও রোনালদোর আধিপত্য। দু’জনই পাঁচবার করে এই খেতাবে ভূষিত হন।
২০০৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে রিয়ালে পাড়ি জমান রোনালদো। এর পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। রিয়ালের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে বসেন সিআর সেভেন। রিয়ালের জার্সিতে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৩৮ ম্যাচে ৪৫০ গোল করেন রোনালদো (লা-লিগায় ২৯২ ম্যাচে ৩১১ গোল)। মেসিও তার শৈশবের ক্লাব বার্সার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ২০০৪-০৫ মৌসুম থেকে খেলছেন বার্সার সিনিয়র দলে। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার বিদায়ে ক্লাবের নতুন অধিনায়ক এখন মেসি। বার্সার হয়ে ৬৩৮ ম্যাচে ৫৫২ বার প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠান তিনি। লা-লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতাও মেসি। ঘরোয়া লীগে ৪১৯ ম্যাচে ৩৮৩ গোল করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here