অর্থনীতির কিছু সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো হওয়ায় আগামীতে প্রবৃদ্ধির তেজি ভাব অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তবে বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি অর্থনীতিতে সুশাসন নিশ্চিত করাকে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে প্রতিষ্ঠানটি।
ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি রপ্তানিতে উন্নতির তাগিদ দিয়ে চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করছে বিশ্বব্যাংক। আজ মঙ্গলবার ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন হালনাগাদ’ (বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট) প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বিশ্বব্যাংকের দেওয়া এবারের ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেটে’ উঠে এসেছে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের কথা। রাজস্ব আয় বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারি খরচ সঠিকভাবে করা এবং বিনিয়োগ বাড়ানোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বিশ্বব্যাংক। এ ছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন, ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমানো এবং সুদের হার যৌক্তিক পর্যায়ে আনাকেও চ্যালেঞ্জ মনে করছে সংস্থাটি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর কিমিয়াও ফান বলেন, ‘ভালো প্রবৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি অবকাঠামোর উন্নয়ন জরুরি। এ ছাড়া অর্থনৈতিক বিভিন্ন খাতে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে বাংলাদেশকে।’

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের অবকাঠামো খাতে যে সরকারি বড় বড় প্রকল্প আছে, সেখানে খরচ বাড়বে। রপ্তানিতে গত বছর আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। রেমিট্যান্স ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটা অব্যাহত থাকবে। এবং এগুলো যদি ঘটে, তাহলে প্রবৃদ্ধির যে স্বাস্থ্যকর শক্তিশালী প্রবণতা ইদানীংকালে দেখা গেছে, সেটা চলমান থাকবে।’

ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি রপ্তানিতে উন্নতির তাগিদ দিয়ে চলতি অর্থবছরে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন জাহিদ হোসেন। তবে বড় প্রবৃদ্ধি অর্জন কঠিন হবে জানিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অর্থনীতিবিদরা প্রবৃদ্ধিকে টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমুলক করার তাগিদ দেন।

অর্থনীতিবিদ ড. জিল্লুর রহমান প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘প্রবৃদ্ধির মূল লক্ষ্য আসলে কী? ছয়-সাত-আট কি না, এ রকম শুধু সংখ্যার আলোচনা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। শুধুই কি উপসংহার টানতে হবে? এটা কি টেকসই?’

অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্য সরকার ঠিক করেছে, সেটা সরকারি হিসাবমতে এখন প্রায় ৮ শতাংশের মতো। সমস্যাটা হচ্ছে এখানে আমি দুর্বলতা দেখতে পাচ্ছি। সংখ্যাটা সত্যিও যদি হয়, এটাকে টেকসই করাটা খুব কঠিন কাজ বলে আমার ধারণা।’

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সহায়তা পেতে সমস্যা হলে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হতে পারে বলেও মনে করছে বিশ্বব্যাংক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here