ভারতের কেরালায় শবরীমালা মন্দিরে নারীদের ঢুকতে দেয়াকে কেন্দ্র করে তুমুল সংঘাত ও উত্তেজনা শুরু হয়েছে। নারীদের প্রবেশ ঠেকাতে ওই মন্দিরকে ঘিরে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে ও জোর করে গাড়ি থেকে নারীদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি দেশের সুপ্রিম কোর্ট শবরীমালায় দশ থেকে পঞ্চাশ বছর বয়সী নারীদেরও ঢুকবার অনুমতি দিয়েছে। বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, সে রায়ের বাস্তবায়ন ঠেকাতে কেরালা জুড়ে বিজেপিসহ বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী দলের নেতৃত্বে এখন প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রায় অস্বীকার করে কট্টোর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন শিব সেনা মন্দিরে নারী প্রবেশে সর্বাত্তোক বাঁধা দেয়ার ঘোষনা দিয়েছে। শনিবার সংগঠনটি জানিয়ে দেয়, যদি শবরীমালা মন্দিরে কোনো নারী প্রবেশ করে তাহলে সংগঠনের সদস্যরা গণ- আÍহনন করবে। শিব সেনার এক সদস্য পেরিঙ্গাম্মালা অজি বলেছেন, ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত আমাদের নারী সদস্যরা পাম্বা নদীর তীরে অবস্থান করবে। যদি মন্দিরে কোনো নারী প্রবেশের সাহস দেখায় তাহলে আমরা সবাই সেখানে আÍহুতি দেব। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মন্দিরের আশেপাশে নারী প্রবেশে বাঁধা দিতে নানা কার্যক্রম শুরু করেছে শিব সেনা।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর বুধবারই প্রথম মন্দির খুলছে। যাবতীয় বাধা উপেক্ষা করে মন্দিরে ঢোকার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেক নারী ও অ্যাক্টিভিস্ট। কেরালার প্রাচীন শবরীমালা মন্দিরে ঋতুমতী বয়সের নারীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তা খারিজ হয়ে যায়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর দেশটির আদালত এ রায় প্রদান করে। কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষ ও কেরালার হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো সেই রায় মানতে প্রস্তুত নন। তারা রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন করেই থেমে থাকেননি। শবরীমালা মন্দির যে পাহাড়ের ওপর সেটিকে ঘিরেও তুমুল প্রতিবাদ আন্দোলন চালাচ্ছেন। কেরালায় বিজেপির সভাপতি পি এস শ্রীধরন পিল্লাই বলছেন, রাজ্যে এত বড় আন্দোলন আগে কখনও হয়নি। বিজেপি এখানে মানুষের দাবিকে সমর্থন করছে, কারণ তারা নিজেদের ধর্মবিশ্বাস রক্ষার জন্য লড়ছেন। ভক্তদের দাবি মেনে নারীদের প্রবেশ আটকানো না হলে বিজেপি আরও বড় আন্দোলনের পথে যাবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বিজেপির এ বিক্ষোভে হাজার হাজার নারীও সামিল হয়েছেন। তবে মন্দিরের বাইরে তিরিশজন নারীর একটি দল শবরীমালা পাহাড়ের পাদদেশে গত কয়েকদিন ধরে অবস্থান নিয়ে আছেন। তারা জানিয়েছেন প্রথম দিনেই তারা মন্দিরে ঢুকতে চান। উল্লেখ্য, ভারতে অনেক হিন্দু মন্দিরেই নারীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। কিন্তু এখন মন্দিরে যেতে চাওয়া নারীদের জোর করে আটকানোর জন্য রাজ্য জুড়ে নানা তৎপরতা শুরু হয়েছে।