সৌদি রাজপরিবারের কট্টোর সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার আগের দিন ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ক্যামেরা খুলে ফেলা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান।
পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে মঙ্গলবার তিনি এ কথা বলেছেন।

এরদোয়ান বলেছেন, খাশোগিকে হত্যার দিন ১৫ সদস্যের একটি দল ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করে। ওই দলের তিন সদস্য আগের দিন অর্থাৎ ১ অক্টোবর তারা ইস্তাম্বুলের কাছে একটি জঙ্গলে যায়। এর মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, তারা তিনজন খাশোগির দেহাবশেষ মাটিচাপা দেওয়ার জায়গা খুঁজছিল।

গত ২ অক্টোবর রিয়াদের কট্টোর সমালোচক জামাল খাশোগি ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন। এরপর আর সেখান থেকে বের হননি। তুরস্কের দাবি, খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হত্যার পর তার লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

প্রথমে অস্বীকার করলেও শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সোমবার সৌদি আরব স্বীকার করেছে, সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে খুন করা হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এ ঘটনা ছিল একটি ‘ভয়ানক ভুল’। তবে এর সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কোনোভাবেই জড়িত নন।

রোববার ইস্তাম্বুলের এক সমাবেশে এরদোয়ান বলেছিলেন, তিনি মঙ্গলবার পার্লামেন্টে সৌদি আরবের সব ‘নোংরামি’ তুলে ধরবেন । ‘আমরা সুবিচার খুঁজছি। খাশোগি হত্যায় যেনতেন পদক্ষেপ নয়, নগ্নসত্য প্রকাশে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া হবে’ বলেন তিনি। তবে পার্লামেন্টে মঙ্গলবার এরদোয়ান সেই ‘নগ্নসত্য’ তেমনভাবে প্রকাশ করেননি বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ খাশোগি ইস্যুতে তার ভাষণের অনেকগুলো বিষয় আগে থেকেই তুর্কি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

এরদোয়ান বলেছেন, ‘খুনটি যে পূর্বপরিকল্পিত ছিলো সে ব্যাপারে তুর্কি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রমাণ রয়েছে। তুর্কি ও বিশ্ব তখনই সন্তুষ্ট হবে যখন পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। অন্য দেশগুলোকেও অবশ্যই তদন্তে অংশ নিতে হবে।’

খাশোগি ইস্যুতে সৌদি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে ফোনালাপ হয়েছে উল্লেখ করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘আমি বাদশাহ সালমানের আন্তিরকতা নিয়ে সন্দেহ করি না। বলা হচ্ছে, স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করা প্রয়োজন। এটা রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here