একুশে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকরের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিচার ও রায় যেহেতু হয়েছে, ইনশাল্লাহ একদিন তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে সেই বিচারের রায় কার্যকর করাও সম্ভব হবেই। শাস্তি যখন পেয়েছে, যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেন, আল্লাহর ওপর ভরসা ও মানুষের ওপর আমার বিশ্বাস আছে- একদিন না একদিন তাকে সাজা পেতেই হবে। সাজা ভোগও করতে হবে।

বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এদিন সংসদের বৈঠকে সরকারি ও বিরোধী দলের একাধিক সংসদ সদস্যের লিখিত ও সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী।

বিদেশে পলাতক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করা সংক্রান্ত সরকারি দলের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তারেক রহমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আমরা আলাপ আলোচনা করছি।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ যদি চায় এবং আগামী নির্বাচনে আবার আমরা ফিরে আসতে পারি অবশ্যই আমরা তাকে ফিরিয়ে আনতে পারব, শাস্তি দিতে পারবো- এই বিশ্বাস আমার আছে। এজন্য আমি দেশবাসীর কাছে দোয়াও চাই ভোটও চাই যেন আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় ফিরে এসে যেন এই অন্যায় অবিচারের বিচার করতে পারি। সাজাটা আমরা কার্যকর করতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে হত্যা করা এবং মানুষের ওপর অত্যাচার করা তাদের একটা স্বভাব। তার বাবা জিয়াউর রহমান যেমন ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, আবার তার মা (খালেদা জিয়া) এবং সে (তারেক রহমান) যে ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল এতে কোনো সন্দেহই নেই। নিশ্চয়ই একটা দিন আসবে যারা এত বড় জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে, যে গ্রেনেড ব্যবহার করা হয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রকাশ্য দিবালোকে সেই অস্ত্র রাজপথে ব্যবহার করে যারা আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল- তাদের বিচার যখন হয়েছে রায় যখন হয়েছে, একদিন না একদিন সাজা তাদের পেতেই হবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রসঙ্গে সংরক্ষিত মহিলা এমপি সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলবে। তবে রাজনৈতিকভাবে যারা জোট করেছে তাদের স্বাগতই জানাই। কারণ সবারই রাজনীতি করার অধিকার আছে। আজ যারা রাজনৈতিকভাবে বিভিন্ন দল ও জোট করে নির্বাচনে আসবেন- এতে গণতন্ত্রের ভিত্তিটা আরও মজবুত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, তবে এখানে (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) যারা যুক্ত হয়েছেন, তাদের যে কথাবার্তা ও যা কিছু এখন মানুষ জানতে পারছে শুনতে পারছেন- তাতে তাদের কেউ কেউ মানুষকে সন্মান রেখে কথা বলতে পারছেন না। বিশেষ করে একটা নারীবিদ্বেষী মনোভাব ও মেয়েদের প্রতি অশালীন কথা বলা থেকে শুরুকরে অনেক কিছুই শুনতে পাচ্ছি। জনগণের জন্য কাজ করতে হলে যে সহনশীল হতে হয়, যে ত্যাগ দরকার- সেই ত্যাগ কিংবা সহনশীলতা তাদের মধ্যে নেই। আশা করি, তারা সংযত হবেন। তারা যদি সত্যি রাজনীতির জন্য একটা জোট করেন, এগিয়ে যেতে চান- অবশ্যই তাদের সেভাবেই চলতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমৃদ্ধ ও উন্নত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় দুঃখী ও অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য। আর এ লক্ষ্য পূরণে নিরলসভাবে কাজ করতে আমি বেশি আনন্দ ও শান্তি পাই। টেকসই সামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নপূরণে ১৬ কোটি মানুষের উন্নয়নে কাজ করাই আমার আনন্দ ও প্রশান্তি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here