পাকিস্তানে ধর্মভিত্তিক দল তেহরিকে লাব্বাইকের (টিএলপি) বিরুদ্ধে দেশজুড়ে দমনপীড়ন চালাচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে এর নেতা খাদিম হুসেইন রিজভিকে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ উঠেছে। তবে সরকার বলছে, তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে তার দলের সব জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। আসিয়া বিবি ইস্যুতে আন্দোলনের সময় যারা মারা গিয়েছিলেন তাদেরকে শহীদ আখ্যায়িত দিয়ে রোববার রাজধানীর ফয়জাবাদে ওইসব শহীদের স্মরণে নেতাকর্মীদের সমবেত হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। এর প্রেক্ষিতে সরকার তাদেরকে বিকল্প প্রস্তাব দেয়। কিন্তু টিএলপি নেতা তা প্রত্যাখ্যান করেন।

এ কারণে শুক্রবার ওই ধরপাকড় শুরু হয়েছে।
শুক্রবার রাতে টিএলপি নেতা খাদিম হুসেইন রিজভিকে গ্রেপ্তার করে একটি রেস্ট হাউজে রাখা হয়েছে। তবে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, তাকে গ্রেপ্তার নয়। নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। রোববার দলটির পক্ষ থেকে যে বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছে, তা প্রত্যাহারে অসম্মতি জানানোয় এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মূলত সাধারণ মানুষের জীবন, স¤পদ এবং নিয়মশৃঙ্খলা রক্ষার খাতিরেই তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। মন্ত্রী আরো বলেন, এর সঙ্গে আসিয়া বিবি মামলার কোনো সংযোগ নেই। তবে রিজভীর ছেলে সাদ রিজভী জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে পুলিশ লাহোরে তার মাদ্রাসায় হানা দেয় এবং রিজভিকে গ্রেপ্তার করে।
পাকিস্তানের ডন পত্রিকার এক খবরে বলা হয়েছে, টিএলপি নেতা রিজভী ২৫শে নভেম্বর শহীদ দিবস পালন  করার জন্য তার দলের সদস্যদের ডাক দিয়েছেন। এ উপলক্ষে তারা রাজধানী ইসলামাবাদে র‌্যালি করবেন। এর আগে আসিয়া বিবির ইস্যুতে পাকিস্তানজুড়ে আন্দোলন করে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তোলে এ দলটি। এ দমনপীড়ন ইস্যুতে পাঞ্জাবের তথ্য ও আইন মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে তারা রিজভির বিরুদ্ধে গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে কিছুই জানে না। পুলিশি সূত্র মতে, বড় বড় শহরে টিএলপি নেতাদের বিরুদ্ধে বড় মাপের অভিযান শুরু হয়েছে। ভিডিও এক বার্তা প্রকাশ করেছেন টিএলপি নেতা পীর আফজাল কাদরি। তিনি তাতে বলেছেন, পুলিশ তাদের মসজিদগুলোতে ঘেরাও দিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছ কমপক্ষে ৩০ নেতাকর্মীকে। ফয়জাবাদের ক্রসিংয়ে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় এক শত পুলিশ। পুলিশ সূত্র বলেছে, রাওয়ালপিন্ডি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে টিএলপির ৩৩ নেতাকর্মীকে। অ্যাটোক থেকে ৯ জন, ঝেলাম থেকে ৯ জনকে, চকওয়াল থেকে ৮ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপরও অব্যাহত ছিল অভিযান। রাওয়ালপিন্ডি কর্তৃপক্ষ টিএলপির আঞ্চলিক নেতা ইনায়েতুল হককে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে। তাকে ১৫ দিন জেলে রাখা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here