পাকিস্তানের বন্দরনগরী করাচিতে চীনা কনস্যুলেটে গত ২৩ নভেম্বর সন্ত্রাসী হামলায় দুইজন নিরাপত্তারক্ষী নিহত হয়েছেন। সন্ত্রাসীদের ওই হামলা প্রতিরোধে কমান্ডোদের সঙ্গে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি ছোঁড়েন পাকিস্তানের নারী পুলিশ কর্মকর্তা সুহাই আজিজ তালপুর। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অসীম সাহসিকতা চারদিক থেকে প্রসংশায় ভাসছেন তিনি।

গত ২৩ নভেম্বর সকালে কাজে যাওয়ার সময় চীনা কনস্যুলেটে হামলার ঘটনা শোনেন সুহাই। সঙ্গে সঙ্গে রওনা হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে দুই সহকর্মীকে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং তিনজন সন্ত্রাসী কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পথ উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। ঠিক সেই মুহূর্তে নিজের অবস্থান ঠিক করে হামলাকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়তে শুরু করেন এবং ফোনে আরও ফোর্স পাঠানোর তাগিদ দেন। আরও পুলিশ সদস্য এলে দুই ঘণ্টার সংঘর্ষের পর তারা কনস্যুলেটের ভেতরে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে সুহাই জানান, আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি দু’পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হচ্ছে আর ঘন ঘন বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে, চারপাশ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। যখন কনস্যুলেটের ভেতর প্রবেশ করি তখন একজন চীনা নারী এবং চারজন পাকিস্তানি ছিলেন। নারীটি জড়িয়ে ধরেন।

সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কমান্ডোদের সঙ্গে পিস্তল উঁচিয়ে সুহাইয়ের গুলি ছোঁড়ার দৃশ্য মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। তার এমন সাহসিকতার জন্য পাকিস্তান পুলিশ কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ পুরস্কারে মনোনীত করা হয়েছে। ৩০ বছর বয়সি সুহাই এখন পাকিস্তানের নারীবাদী আইকনে পরিণত হয়েছেন।

দেশটিতে নারী পুলিশের সংখ্যা হাতে গোণা। তবে সুহাই মনে করেন, সেদিনের প্রকৃত বীর শহীদ দুই পুলিশ কর্মকর্তা, যারা দীর্ঘক্ষণ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন দিয়েছেন। শুক্রবারের (৩ নভেম্বর) ওই হামলায় দুইজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন।

সিন্ধ প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটা ছোট্ট গ্রামে সুহাইয়ের বেড়ে ওঠা। চার্টার্ড অ্যাকাউটেন্টে পড়ালেখা করলেও সিদ্ধান্ত বদলে পাকিস্তানের পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। বলা হচ্ছে, খুব শিগগিরই সুহাই পদোন্নতি পাবেন। আর তা হলে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে তিনি হবেন দ্বিতীয় নারী, যার পদমর্যাদা অ্যাসিসটেন্ট সুপারিটেন্ডেন্টের উপরে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here