ভারতের ওডিশায় ‘ডাইনি’ অপবাদ দিয়ে এক নারী ও তাঁর চার সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় পুলিশ ছয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত আরও কয়েকজনকে খোঁজা হচ্ছে। পুলিশের বিশ্বাস, ওই নারী ও তাঁর সন্তানদের হত্যার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত ছিল।

নিহত নারীর নাম মাংরি মুন্ডা। গত শনিবার সন্তানসহ এই নারীর লাশ একটি কুয়ার মধ্যে পাওয়া যায়। মাংরি মুন্ডার বাড়ির কাছেই কুয়াটির অবস্থান। ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে ‘ডাইনি’ অপবাদ দিয়ে নারীহত্যার ঘটনা ঘটে থাকে। ওডিশার স্থানীয় জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা কবিতা জালান বলেন, মাংরি মুন্ডা হত্যার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি নিজেকে ‘ডাইনি তাড়ানোর ওঝা’ বলে দাবি করেছে।

স্থানীয় কিছু মানুষের অভিযোগ, মাংরি মুন্ডা নাকি ‘জাদুটোনা’ করে গ্রামের কয়েকটি পরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছিলেন। সুন্দরঘর জেলার একটি গ্রামে থাকতেন মাংরি। ডাইনি অপবাদ দিয়ে গত শুক্রবার গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে একদল লোক আক্রমণ চালায়। ওই সময় মাংরির দুই ছেলে ও দুই মেয়ে ঘুমিয়ে ছিল। মা-সন্তানের ওপর লাঠিসোঁটা ও কুঠার নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে আক্রমণকারীরা। পরে মা ও সন্তানদের কুয়ায় ফেলে দেওয়া হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা কবিতা জালান বলেন, এ ধরনের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। তবে শুধু ওডিশা নয়, ভারতের আসাম ও ঝাড়খণ্ডেও ডাইনি অপবাদে নারীদের হত্যার ঘটনা ঘটে থাকে। ২০১৭ সালে শুধু ওডিশাতেই ডাইনি অপবাদে হত্যার অভিযোগে ৯৯টি মামলা নথিবদ্ধ হয়েছিল। এর আগের বছর নথিবদ্ধ হয়েছিল ৮৩টি মামলা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্ধবিশ্বাস‌‌ ও কুসংস্কারের কারণেই এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here