ভারতে নির্বাচনের জন্য আলাদা ‘কন্ট্রোল রুম’ খুলছে ফেসবুক। দিল্লিতে এই কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। সোমবার ফেসবুকের ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর শিবনাথ ঠাকরাল জানিয়েছেন, ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার, ফেক নিউজ, ভুয়া, মিথ্যে বা আপত্তিকর পোস্ট-সহ যাবতীয় বিষয় ২৪ ঘন্টা নিয়ন্ত্রণ করা হবে দিল্লির ওয়াচ রুম থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারতই হবে দ্বিতীয় দেশ, যেখানে নির্বাচনের আগে আলাদা করে এই রকম ‘কন্ট্রোল রুম’ খুলছে ফেসবুক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবারের নির্বাচনে জনসংযোগে প্রার্থীদের অন্যতম মাধ্যম হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া। দেখা গেছে, সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারও হয় সবচেয়ে বেশি। মিথ্যা, ভুয়া বা আপত্তিকর বার্তা ছড়ানোর চেষ্টা চলে।

ভোটের সময় সে সব বিষয়েই নজর রাখবে ফেসবুক।

তবে কবে চালু হবে বা কবে থেকে কাজ শুরু করবে এই কন্ট্রোল রুম, সে বিষয়ে সংস্থার তরফে সবিস্তারে কিছু জানানো হয়নি। ঠাকরাল শুধু জানিয়েছেন, ফেসবুকের ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্ক, আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন এবং সিঙ্গাপুরের অফিসের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা সমন্বয় রেখে দিল্লির এই কন্ট্রোল রুম কাজ করবে। পাশাপাশি ভারতের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ঠাকরালের কথা অনুযায়ী, কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কীভাবে ভোটে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার আটকানো যায়, তার চেষ্টা করবে ফেসবুক। ঠাকরালের দাবি, ভারতীয় নির্বাচন ব্যবস্থার উপর ইতিমধ্যেই ৪০টি দল কাজ করছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। এবার লোকসভা ভোটের আগে একটি কেন্দ্রীয় দল তৈরি করে দিল্লিতে কন্ট্রোল রুমে তারা কাজ করবে। ওই দলের সদস্যরা বিভিন্ন নির্বাচন সংক্রান্ত পোস্ট, মন্তব্য বারে বারে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করবেন। একটি দলের পরীক্ষার পর আবার অন্য দল সেটি পরীক্ষা করে দেখবে।

এভাবে একাধিকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে চলবে এই প্রক্রিয়া। পাশাপাশি স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিতেও চলবে নজরদারি। বিতর্কিত বা আপত্তিকর পোস্টের উৎস খুঁজে বের করা এবং আইন অনুযায়ী তার যৌক্তিকতা বিচার করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই সংক্রান্ত কমিশনের নিয়ম-কানুন দেখে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের দাবি,  ভুয়া প্রোফাইল, ছবি নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চলে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮-র অক্টোবর পর্যন্ত এই এক বছরে  ২০ কোটি ভুয়া প্রোফাইল নির্ধারণ করে সেগুলি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। ভোটের সময়ও এই বিষয়টির উপর বিশেষ নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ঠাকরাল জানিয়েছেন, আমেরিকা, ব্রাজিল এবং বৃটেনে সাফল্যের পর ভারতেও ‘অ্যাড ট্রান্সপারেন্সি টুল’ চালু করা হয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন কে দিয়েছেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং বিধিসম্মত ঘোষণা থাকে। এছাড়া সমস্ত রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন লাইব্রেরিতে জমা থাকে, যাতে প্রতিটি বিজ্ঞাপন সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য সংরক্ষিত থাকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here