‘জেএমসি ওয়ে’ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

0
181

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কে বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সামনের ১৬৮ স্ট্রীটের একাংশের নাম হলো ‘জেএমসি ওয়ে’। বিপুল উৎসাহে আনন্দঘন পরিবেশে শুক্রবার (১৫ মার্চ) অপরাহ্নে আনুষ্ঠানিকভাবে জেএমসি ওয়ের নামফলক উন্মোচন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিউজিল্যন্ডের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিউইয়কের মুসলিমদের আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন নিউইয়র্কের পুলিশ কমিশনার জেমস ও’নীল সহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ করে নিউইয়র্কে সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ সৌহার্দপুর্ণ পরিবেশে বসবাস করছেন উল্লেখ করে তারা যে কোনো মূল্যে এই সম্প্রীতি রক্ষা করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।


উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে নিউইয়র্কে দূর্বৃত্তদের হামলায় নিহত ফটো সাংবাদিক মিজানুর রহমানের নামে সিটির ওজনপার্কে ‘মিজানুর রহমান ওয়ে’ এবং ব্রঙ্কসে ‘বাংলা বাজার’ নামে সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। সিটি প্রশাসনে যা বাংলাদেশী কমিউনিটির স্বীকৃতি বলেই মনে করছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশীদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার জেএমসি) সিটির অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। জেএমসি একাধারে মসজিদ ছাড়াও ইসালামী শিক্ষা-সংস্কৃতির চর্চা ও জনকল্যানমুলক প্রতিষ্ঠান স্বীকৃত। এই জেএমসি ঘিরেই সিটির কুইন্স বরোর জ্যামাইকায় গড়ে উঠেছে বৃহৎ বাংলাদেশী কমিউনিটি। ‘জেএমসি’ মুসলিম কমিউনিটি সহ বাংলাদেশী কমিউনিটির কল্যাণে বিশেষ ভূমিকা রাখার কারণে সিটি প্রশাসন জেএমসির নামে সামনের রাস্তাটির নামকরণের সিদ্ধান্ত নেয়।
ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ইমাম শামসী আলী। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সিটি কমিশনার ররি ল্যান্সম্যান। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন নিউইর্য়কের ইউএস কংগ্রেসম্যান গ্রেগরী মেক্স, কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং, নিউইয়র্ক ষ্টেট অ্যাসেম্বীম্যান ডেভিট ওয়েপ্রীন ও ড্যানিয়েল রোজেনথাল, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট-এনওয়াইপিডি’র কমিশনার জেমস ও’নীল, সিটি কাউন্সিলম্যান কস্টা কন্সটানটিনিডিস ও ড্যানিক মিলার। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. সিদ্দিকুর রহমান, ট্রাষ্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোজাফফর হোসেন ও সাবেক সভাপতি খাজা মিজান হাসান। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন জেএমসি’র সেক্রেটারী মনজুর আহমেদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে জেএমসি পরিচালনা কমিটির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা সহ বিপুল সংখ্যক মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার জেমস ও’নীল তার বক্তব্যে নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হত্যাকান্ডের নিন্দা জানান, পাশাপাশি মুসলিমসহ সব ধর্মের লোকদের জন্য নিউইয়র্ক সিটিকে নিরাপদ রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে প্রত্যেকেই নিউইয়র্কে মুসলিমসহ সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্যমান সম্প্রতি ধরে রাখা ও সন্ত্রাস-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানের কথা পুনরুল্লেখ করেন। বক্তারা নিউইয়র্ক সিটিকে গড়ে তোলা ও এই মেগাসিটিকে আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসার পেছনে মুসলিম কমিউনিটির অবদানের কথাও উল্লেখ করেন।
এদিকে ‘জেএমসি ওয়ে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাত্র কয়েকঘন্টা আগে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ এলাকার মসজিদে বর্ণবাদী সন্ত্রাসীদের নির্বিচার গুলীতে অর্ধশতাধিক মুসলমানকে হত্যার ঘটনাটিই উঠে আসে অনুষ্ঠানের সব বক্তার বক্তব্যে। তারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
পরে সিটি কাউন্সিলম্যান ররি ল্যান্সম্যানের নেতৃত্বে জ্যামাইকার ১৬৮ ষ্ট্রীটের হাইল্যান্ড এভিনিউ থেকে গথিক ড্রাইভ পর্যন্ত ‘জেএমসি ওয়ে’র ফলক উন্মোচন করা হয়।
ইউএনএ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here