অনেকই মনে করে বাংলাদেশের কর্পোরট কর হার বেশি। আসলে এটা খুব বেশি না। পাশের দেশ ভারত আমাদের দেশের চেয়ে তাদের কর্পোরেট কর হার বেশি। এছাড়া উন্নত দেশগুলোতেও কর্পোরেট হার আমাদের দেশের চেয়েও বেশি।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর কার্যালয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, যারা ট্যাক্স দিচ্ছে তারাই দিয়ে যাচ্ছে। নতুন করে করদাতা তেমন পাচ্ছি না। জেলা পর্যায়ে ট্যাক্স অফিস হয়েছে। আগামীতে এটি উপজেলা পর্যায়ে করা হবে। এক্ষেত্রে বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উচ্চ হারে ট্যাক্স না নিলেও চলবে। আমাদের শিল্পায়নে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। নতুন ভ্যাট আইন এ বছর বাস্তবায়ন হবে। এছাড়া আগামী বাজেটে প্রডাকশন বাড়বে এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরো বলেন, বাহুল্য কম এ ধরনের বাজেট হলে ভালো হয়। অনেক সময় কনসেশন করতে হয়। আসলে সব বিষয় নিয়েই বাজেট হয়। আমরা গত বছরও করপোরেট ট্যাক্সের ওপর ছাড় দিয়েছি। এবছরও আপনারা করপোরেট ট্যাক্সের ওপর ছাড় চেয়েছেন। ভারতের চেয়ে আমাদের করপোরেট ট্যাক্স অনেক কম। তবে সরকারের পর‌্যায়ক্রমে ট্যাক্স কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। সেটি আমরা দেখবো। ডিভিডেন্টের উপরও ট্যাক্স কমানোর বিবেচনায় আছে। রেভিনিউ যাতে বেশি সেদিকে আমরা খেয়াল রাখবো।

বৈঠকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য ডিসিসিআই’র প্রস্তাবনাগুলো এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে পেশ করেন ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর। ঢাকা চেম্বার এ বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে মোট ২০টি প্রস্তাব পেশ করেছে।

ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা এবং মোট আয় ৫ লাখ টাকা হলে ৫ শতাংশ, ৭ লাখ টাকা হলে ১০ শতাংশ, ৯ লাখ টাকা হলে ১৫ শতাংশ ও ৩০ লাখ টাকা পর‌্যন্ত হলে ২০ শতাংশ হারে ধার্যের প্রস্তাব করেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি নীট সম্পদের মূল্য ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে শূন্য হারে সারচার্জ আরোপের পাশাপাশি ১৫ কোট টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে সারচার্জ নির্ধারণের আহ্বান জানান।

কোম্পানির করযোগ্য আয়ের ৫ শতাংশ পর্যন্ত গবেষণা ও উন্নয়ন এবং ব্যবসায়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) খাতের কার্যক্রমে বিনিয়োগ করলে আয়করমুক্ত ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তাব করেন। সামাজিক, আর্থিক ও অন্যান্য সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ট্যাক্স কার্ডধারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুবিধা দেওয়া এবং করদাতাদের কর দেওয়ার হারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ছয়টি শ্রেণিতে ট্যাক্স কার্ড প্রবর্তনের আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য কর-বান্ধব কর নীতিমালার কোনো বিকল্প নেই।
ডিসিসিআই’র সভাপতি উৎপাদানমুখী খাতে বিনিয়োগ, ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি এবং পুনঃবিনিয়োগে ব্যবহৃত অর্থ শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার আহ্বান জানান, যার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে এবং অর্থনীতির চাকা গতিশীল থাকবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি ওসামা তাসীর, সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি ইমরান আহমেদ, পরিচালক রাশেদুল করিম মুন্না, হোসেন এ সিকদার, এনামুল হক পাটোয়ারী, এস এস. জিল্লুর রহমান, আন্দালিব হাসান, দ্বীন মোহাম্মদ, আশরাফ আহমেদ, নূহের লতিফ খান প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here