কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি

0
97

সরকার কাঁচা চামড়া রফতানির অনুমতি দেওয়ায় চটেছেন ট্যানারি মালিকরা। কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্তের পর মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় ট্যানারি মালিকরা জরুরি বৈঠক করেছেন। তারা বলছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত দেশের চামড়া শিল্পকে বিপদে ফেলবে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) কাঁচা চামড়ার উপযুক্তমূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাঁচা চামড়া রফতানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা দিতে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত হবে অনেকটা আত্মঘাতী। কারণ, কোরবানি চামড়া দিয়েই মূলত আমাদের ব্যবসা করতে হয়। কোরবানির কাঁচা চামড়া যদি রফতানি হয়, তাহলে আমাদের শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো কি করবে? তিনি বলেন, আর আমরা তো এখনও চামড়া সংরক্ষণ করা শুরুই করিনি। আরও ৮ থেকে ১০ দিন পর আমরা চামড়া কেনা শুরু করবো। আর মধ্যস্বত্বভোগীদের তৈরি করা সমস্যা আমাদের ওপর কেন চাপানো হবে? আমরা তো সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই চামড়া কিনবো। আমরাতো কম দামে চামড়া নেবো না।

তিনি উল্লেখ করেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের চামড়া ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়বে। এ নিয়ে ট্যানারি মালিকরা জরুরি বৈঠক করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলেও জানান বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হয়েছে পশুর চামড়া।
মৌসুমী ব্যবসায়ীরা ৮০ হাজার টাকার গরুর চামড়ার দাম দিয়েছেন ২শ’ টাকারও কম। এক লাখ টাকার গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩শ’ টাকায়। চামড়ার দাম না পাওয়ায় কোরবানি দাতাদের অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে চামড়া মাটিতেও পুঁতে দিচ্ছেন।

তবে কাঁচা চামড়ার দাম কমে যাওয়ার জন্য ট্যানারি মালিকরা মধ্যস্বত্বভোগীদেরকে দায়ী করেছেন। ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মধ্যস্বত্বভোগীদের তৈরি করা কৃত্রিম সংকটের কারণে এবার কাঁচা চামড়ার দাম কমে গেছে।

কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কাছে যখন টাকা ছিল, তখন আমরা প্রতিযোগিতা করে চামড়া কিনেছি। ফলে তখন কাঁচা চামড়ার দাম বেশি হতো। এবার আমাদের কাছে টাকা নেই। ট্যানারি মালিকরা সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকার বেশি বকেয়া রেখেছেন। টাকা না থাকলে আমরা কিনবো কিভাবে?

তিনি বলেন, মৌসুমী ব্যবসায়ী ও অন্যান্য ব্যবসায়ীরা তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে টাকা ধার অথবা যে কোনোভাবেই হোক তারা এবার অল্প টাকায় কাঁচা চামড়া কিনেছেন। এবার প্রতিযোগিতা করার মতো লোক ছিল না। এ কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে। তাদের হাতে টাকা না থাকার কারণে এবছর ২৪৫ জন আড়তদারের মধ্যে মাত্র ২০ থেকে ৩০ জন আড়তদার চামড়া কিনতে পারছেন বলেও জানান তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here