বাংলা খবর ডেস্ক: বাংলাদেশ সোসাইটি এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও কার্যকরী কমিটি ট্রাষ্টি বোর্ডের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করছে না। বাংলাদেশ সোসাইটির কিছু সাধারণ সদস্য এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। গত বুধবার জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরাঁর এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সোসাইটির অন্যতম সদস্য আহসান হাবীব। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোঃ জহিরুল হক, আজহার আলী ভূইয়া, গীতিকার গাউস খান, আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি সৃষ্টির পর থেকে এখন সবচেয়ে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। নির্বাচনে দুইজন প্রার্থীর প্রার্থীতা নিয়ে মামলা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এরই মধ্যে পার হয়ে গেছে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত নির্বাচনের দিনক্ষণ। মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে কার্যকরী কমিটির। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যকরী কমিটি ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা থাকলেও গড়িমসি করছেন।
বক্তারা বলেন, বর্তমান কার্যকরী কমিটির বিরুদ্ধে গুরুতর কিছু অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে বন্যাদুর্গতদের জন্য দশ লাখ ডলার উত্তোলন করা হলেও দেশে পাঠানো টাকার হিসেব পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি এতো জটিল পর্যায়ে পৌছেছে যে, সোসাইটির জন্মের পর থেকে এতো বেশি মামলার সম্মুখীন আর কখনো হয়নি।
তারা বলেন, আমরা মনে করি কতিপয় ব্যক্তি হীন স্বার্থে কার্যকরী কমিটিকে কুক্ষিগত করে রাখছে। ফলে সোসাইটির সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
তারা বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আলম সিদ্দিকী আদালত কতৃক দুষী সাব্যস্ত হলেও ক্ষমতা ধরে রাখছেন। যা সোসাইটির গঠন্তন্ত্রের বিরোধী বলে তারা উল্লেখ করেন।
লিখিত বক্তব্যে আহসান হাবীব বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। একদিকে মেয়াদোর্ত্তীন্ন কার্যকরী কমিটি ক্ষমতা আখড়ে রেখেছে, অপরদিকে তাদের অদক্ষতা এবং সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের একগুয়েমি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সোসাইটি এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ২টি মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। পাশাপাশি ‘কোড ভায়োলেশনের’ কারণে বিল্ডিং ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক ইস্যুকৃত সমন সময়মত পদক্ষেপ না নেয়ায় তা আর একটি ‘বিষফোঁড়া’ হয়ে দাডিয়েছে। এছাড়া আর্থিক অনিয়মেরও অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সদস্যদের পক্ষ থেকে সকল সদস্যদের বিষয়গুলো অবহিত করতে আজকের এ সাংবাদ সম্মেলন।
তিনি বলেন, সোসাইটির নির্বাচনে সামান্য একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন ও সোসাইটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের একগুয়েমির কারণে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং এজন্য সোসাইটিকে চরম মুল্য দিতে হচ্ছে। বিনিময়ে আইনজীবির পকেট ভারী হচ্ছে। তাছাড়া সোসাইটি ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে দায়েরকৃত অপর একটি মামলাও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। যার জন্য বিশাল অংকের অর্থের ব্যয় সোসাইটিকে বহন করতে হচ্ছে। দুইটি মামলায় আদালতে বিচারধীন থাকায় এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাইনা। অনেকের ধারনা সোসাইটির সভাপতি, সাধারন সম্পাদক অনবরত সংবিধান লংঘন করে, একগুয়েমি মনোভাব দেখিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরীর মাধ্যমে মামলা করাটাকে অনিবার্য করে তুলেছে যাতে তারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে পারে। কিন্তু গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ৮ এর সেকশন ৬:২ ধারা মোতাবেক সোসাইটির কার্যকরী কমিটির মধ্যে সংকট (ক্রাইসিস) দেখা দিলে যদি স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয় কিংবা কার্যকরী কমিটির মেয়াদ উর্ত্তীন্ন হয়, সে ক্ষেত্রে বোর্ড অব ট্রাস্টি দায়িত্ব চালিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে বোর্ড অব ট্রাস্টির একটি সভা হয়, উক্ত সভায় বোর্ড অব ট্রাস্টির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে বলে সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ সহ সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় বলে জানা যায়। কিন্তু অদ্যবধি এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি।