টাঙ্গাইলের গোপালপুরে বেড়াতে আসা পাকিস্তানি এক কিশোরীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে মূল আসামি আল আমিন (২০)।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকালে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাপপুর আমলী আদালতে ওই যুবক ধর্ষণের কথা শিকার করে জবানবন্দি দেয়। পরে বিচারক আকরামুল ইসলাম তার জবানবন্দি রেকর্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আল-আমিনের ভাইকেও আদালতে হাজিরা করে কারাগারা পাঠানো হয়।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোপালপুর থানার এসআই সাদিকুর রহমান এ তথ্য জানান।
এসআই সাদিকুর রহমান বলেন, ‘গত ২৪ এপ্রিল আল-আমিন এবং তার ভাই সুমনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে রিমান্ডে এনে তাদের দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে আল আমিন ধর্ষণের কথা স্বীকার করে এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভিকটিমের পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। পরে রবিবার (২৮ এপ্রিল) এই দুইজনের রিমান্ডের সময় শেষ হওয়ায় তাদের আদালতে হাজির করা হয়। বিকালে আল আমিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে বিচারক তাদের দু’জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এছাড়াও অভিযুক্ত আল আমিনের বাবা আবুল হোসেন আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তাকেও কারাগারে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় একই পরিবারের চারজন কারাগারে রয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ভেঙ্গুলা গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ুন কবীর প্রায় ২০ বছর আগে পাকিস্তানের নিউ করাচিতে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। সেখানে পাকিস্তানি নাগরিককে বিয়ে করে গামের্ন্টস ব্যবসা শুরু করেন। তাদের মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে।
পাঁচ মাস আগে ছয় মাসের ভিসায় কিশোরী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তার মা গোপালপুরে আসেন। উঠেন উত্তর গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা ভাসুর আব্দুল ওয়াদুদের বাড়িতে। সেখানে তার মেয়েকে আরেক ভাসুর আবুল হোসেনের ছেলে আল আমিন উত্ত্যক্ত করতো। বেশ কয়েকবার শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করে। তখন পারিবারিকভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা হয়। এদিকে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় মা ও মেয়ের পাকিস্তানে ফেরত যাওয়ার খবর শুনে আল আমিন গত ১৬ এপ্রিল রাতে সন্ত্রাসীদের নিয়ে ওই কিশোরীকে অপহরণ করে। এরপর বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় গত ১৭ এপ্রিল আল আমীন, তার বাবা আবুল হোসেন ও মা আনোয়ার বেগমকে আসামি করে ওই কিশোরীর মা গোপালপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে গোপালপুর থানা পুলিশ গত ১৮ এপ্রিল ভোরে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার মহিষাকান্দি মোড়ের এক বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে। ওইদিন অভিযুক্ত আল আমিনের মা আনোয়ার বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে গত ২৩ এপ্রিল কুড়িগ্রাম থেকে আল আমিনকে গ্রেফতার করে র্যা ব সদস্যরা। একইদিনে তার ভাই সুমনকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় কিশোরীর দোভাষির মাধ্যমে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নওরিন মাহবুবের কাছে ২২ ধারার জবানবন্দি দেন।