কিশোরগঞ্জে কলেজছাত্রীর আত্মহত্যায় দুজন গ্রেপ্তার

0
108

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় কলেজছাত্রী তানিয়া বেগম আত্মহত্যার প্ররোচণার মামলায় দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই দুই যুবকের নাম মিজান মীর (৩০) ও সারোয়ার মীর (১৯)। তাঁরা দুজনই তানিয়ার নিকটাত্মীয়।

গত রোববার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা এলাকা থেকে মিজান মীরকে এবং ভৈরব উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের মধ্যেরচর এলাকা থেকে সারোয়ার মীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সোমবার দুপুরে মিজান ও সারোয়ারকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

নিহত তানিয়া উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের মধ্যেরচর এলাকার বাসিন্দা ও বাদাম বিক্রেতা মিলন মীরের মেয়ে। তিনি স্থানীয় জিল্লুর রহমান সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের দর্শন বিভাগের পরীক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ভৈরব পৌরশহরের স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার সাজেদা-আলাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করতেন তানিয়া।

তানিয়ার পরিবার জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে তানিয়ার সহকর্মী ও প্রেমিক শ্রীনগর গ্রামের মিজানুর রহমান বাবু দেখা করার জন্য তাদের বাড়িতে যান। বিষয়টি প্রতিবেশীদের নজরে পড়লে তারা মিজানকে আটকে রাখেন। পরদিন শুক্রবার সকালে মিজানের অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে সালিশে বসেন উভয় এলাকার নেতৃস্থানীয় লোকজন। তানিয়াকে বিয়ে করতে বললে মিজানসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিয়েতে অস্বীকৃতি জানান।

পরে বিয়ে না হওয়াকে কেন্দ্র করে তানিয়ার আত্মীয় ও এলাকার কিছু বখাটে নানাভাবে তাঁকে অপমান করতে থাকে। একপর্যায়ে তানিয়াকে তার মায়ের সামনেই ঘর থেকে তুলে নিতে চায় বখাটেরা। অপমান সহ্য করতে না পেরে গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না বেঁধে আত্মহত্যা করেন তানিয়া।

পরে গত রোববার সকালে তানিয়ার বাবা মিলন মীর বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ এনে মিজানুর রহমান বাবু, তার মা হেলেনা বেগম, বোন রূপালী বেগম, তানিয়াদের প্রতিবেশী শাহ আলম, নূর আলম সরকার, ফিরোজ মিয়া, চায়না বেগম, ফরিদা বেগমসহ আটজনের নামে একটি মামলা করেন। মামলায় আরো চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামি করা হয়।

পরে আত্মহত্যার প্ররোচণায় মিজান মীর ও সারোয়ার মীরের জড়িত থাকার সত্যতা মিললে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আমজাদ হোসেন।

এর আগে রোববার বিকেলে জিহাদ ও সানোয়ার হোসেন নামের দুই যুবককে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানায় পুলিশ।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান জানান, মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। এ ছাড়া অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান ওসি।

চট্টগ্রামে ফেরি করে বাদাম বিক্রি করা দরিদ্র মিলন মীরের মেয়ে তানিয়া। পড়াশোনার পাশাপাশি ভৈরব পৌরশহরের স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার সাজেদা-আলাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করতেন তিনি। সেখানকার ফার্মেসিতে চাকরি করতেন একই উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের মিজানুর রহমান বাবু। একই প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাদে তানিয়া ও মিজানের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here