গণধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা, ৩ উপজাতি যুবকের স্বীকারোক্তি

0
639

গণধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিল বান্দরবানের আলীকদমের উপজাতি প্রতিবন্ধী তরুণী লাকাচিং তঞ্চঙ্গ্যা (৩২) কে। ঘটনা ধামাচাপা ও বিষয়টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে ধর্ষকরা পরিকল্পিকভাবে মেয়েটিকে হত্যার পরে গলায় গামছা বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে দেয়।

এ ঘটনার ৬ মাস পর জড়িত ৩ ধর্ষক ত্রিমথীয় ত্রিপুরা (২৫), জয়কুমার তঞ্চঙ্গ্যা (৩৮) ও জন ত্রিপুরা (৪৩) কে গ্রেফতার করলে তারা চাঞ্চল্যকর এই সব তথ্য আদালতে স্বীকার করে। নিহত লাকাচিং তঞ্চঙ্গ্যা আলীকদম সদর ইউনিয়নের জলন্তমনি পাড়ার কিত্তমন তঞ্চঙ্গ্যা মেয়ে। আসামিরা একই এলাকার অধিবাসী।

শুক্রবার বিকেলে মামলার অগ্রগতি নিয়ে প্রেস বিফ্রিং করে আলীকদম থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিক উল্লাহ সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আলীকদম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী অফিসার কানন চৌধুরী, পুলিশের উপ-পরিদর্শক নুর ইসলাম।

ওসি রফিক উল্লাহ জানান, ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর বিকাল ৩টায় আলীকদমের আমতলী অসতি ত্রিপুরা পাড়ার পাশে জনমানবহীন পাহাড়ের ঢালে তরুণীর লাশ গাছে ঝুলতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। তাৎক্ষণিক আলীকদম থানার এসআই স্বপন বড়ুয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে মহিলার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। ঐ দিনই নিহতের বোনের ছেলে ক্যানুমং তঞ্চঙ্গ্যা বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। লাশ পাওয়ার পর গ্রামবাসী বিষয়টি আত্মহত্যা বলে লাশের শেষকার্য্য করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশের কাছে প্রাথমিক আলামত মতে বিষয়টি সন্দেহ লাগায় স্থানীয়দের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়।

পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে জানা যায়, লাকাচিং তঞ্চঙ্গ্যাকে যৌন নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। উক্ত ঘটনায় ধর্ষণ করে হত্যা সংক্রান্ত অজ্ঞাতনামা আসামি করে আলীকদম থানায় মামলা রুজু করা হয়। মামলার তদন্তভার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন চৌধুরীকে দেয়া হয়। তদন্তভার গ্রহণ করে তিনি বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। অবশেষে দীর্ঘ ছয়মাস পরে মূল রহস্য উদঘাটন করে ঘটনায় জড়িত আসামি থিমথীয় ত্রিপুরা, জয়কুমার তংচংগ্যা ও জন ত্রিপুরাকে গ্রেফতার করা হয়।

আসামী তিনজন ভিকটিমকে গণ-ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা ও লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখার বিষয় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এটি একটি লোমহষর্ক ও জঘন্য ঘটনা ছিল। যার কোন ক্লু বা তথ্য প্রমাণ ছিল না। পুলিশ তদন্তকালে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। আসামি তিনজন জেল হাজতে রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here