তিন সন্তান নীতি চালু করছে চীন

0
76

বাংলা খবর ডেস্ক: জনসংখ্যা বাড়াতে তিন সন্তান নীতি চালু করার পরিকল্পনা করছে চীন। এক সন্তান নীতি তুলে দেয়ার পরও জন্মহার লোপ পাওয়ায় নতুন এ পরিকল্পনা করছে দেশটির লিয়াওনিং প্রদেশ।

চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এ প্রদেশে পরিবার পরিকল্পনা নীতি আরও শিথিল করা এবং কিছু কিছু দম্পতিকে তিন সন্তান নেয়ার অনুমতি দেয়া হবে। দ্রুত জন্মহার কমে যাওয়া এবং কর্মক্ষেত্রে এর প্রভাব ঠেকাতে লিয়াওনিংয়ের স্থানীয় প্রশাসন জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষায় এ পরিকল্পনা করেছে। খবর শিনহুয়ার।

জনসংখ্যার বিস্ফোরণ রোধে ১৯৭৯ সালে চীন ‘এক সন্তান নীতি’ গ্রহণ করেছিল। শক্তহাতে ওই নীতি বাস্তবায়নের কারণে সরকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনতে সক্ষমও হয়েছিল। কিন্তু পরে জন্মহার বেশি কমে যেতে থাকায় চীন এ নীতি থেকে সরে আসে। বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ায় কর্মক্ষেত্রে এর প্রভাব ঠেকাতে জনভারসাম্য রক্ষায় ২০১৬ সালেই চীন সরকার দম্পতিদের দুই সন্তান নেয়ার অনুমতি দেয়। তারপরও চীনে বাড়েনি জন্মহার। ২০১৮ সালে সন্তান

জন্মের হার ছিল এ যাবৎকালের সর্বনিম্ন। দেশটিতে জন্মহার এখনও নিম্নমুখী। একই সঙ্গে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় বয়স্ক মানুষের সংখ্যা তরতর করে বাড়ছে। মঙ্গলবার লিয়াওনিং প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, জনসংখ্যা হ্রাস আটকাতে যেহেতু আগের নেয়া উদ্যোগগুলো ব্যর্থ হয়েছে তাই ২০১৯ সালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নেয়া প্রকল্পগুলোর একটি হবে পরিবার পরিকল্পনা নীতিতে সংশোধন।

লিয়াওনিং প্রদেশ এরই মধ্যে নতুন নিয়মের একটি খসড়া তৈরি করেছে। এর আওতায় দুই সন্তান থাকা পরিবারগুলোকে শিক্ষা, বাসস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা এবং আরও বেশি অর্থনৈতিক সহযোগিতা দেয়া হবে। তাছাড়া, সীমান্ত এলাকায় বাস করা দম্পতিদের তিনটি সন্তান নেয়ারও অনুমতি দেয়া হবে। চীনের কেন্দ্রীয় সরকার দেশজুড়ে পরিবার পরিকল্পনা চালু রাখলেও কিছু কিছু অঞ্চলে এ ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে। জাতিগত সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে সাধারণত সন্তান জন্মদানের ওপর কড়াকড়ি করা হয় না। তাছাড়া, পল্লী এলাকার পরিবারগুলোর ক্ষেত্রেও বেশি সন্তান নেয়ার অনুমতি আছে। প্রায় চার দশক পর দুই সন্তান নীতি গ্রহণ করার পর ২০১৭ সালে দেশটিতে জন্মহার বেড়ে হয়েছে ৭.৯ শতাংশ।

চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন বলছে, ২০২০ সাল নাগাদ শিশু জন্মের হার ১.৭ থেকে ২ কোটিতে পৌঁছাবে। ২০৫০ সাল নাগাদ ৩ কোটি তরুণ যোগ দেবে চীনের জনশক্তিতে। এক সন্তান নীতির ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকানো গেলেও একই সঙ্গে কমেছে তরুণ ও যুবকদের সংখ্যাও।

অন্যদিকে চীনের জনশক্তিতে বেড়েছে বয়স্কদের সংখ্যা। তবে দুই সন্তান নীতি চীনের এ সমস্যার দ্রুতই কোনো সমাধান আনতে পারছে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অস্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা বলছে, এক সন্তান নীতির পরিবর্তনে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে বার্ষিক ০.৫ শতাংশ। বয়স্কনির্ভরতা বাড়বে খুব বেশি হলে ০.০৩ শতাংশ।

অনেকেই এক সন্তান নীতিকে চীনের বয়স্কনির্ভরতার জন্য দায়ী করলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, গত তিন দশকে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি এ নীতি। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. ফ্যাং ওয়াং বলছেন, এ নীতির ফলে বাবা-মাকে সন্তানের পেছনে কম খরচ করতে হয়েছে, ফলে তাদের সঞ্চয় বেড়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here