ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার গলায় দা ধরে ১৫ আগস্টের চিঠি তৈরি

0
75

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের সেকেন্দারকাঠি এস কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে এবার বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রেনজুনা আক্তারকে জাতীয় শোক দিবসের (১৫ আগস্ট) চিঠি তৈরিতে অনিয়ম এবং আওয়ামী লীগের সদস্যদেরকে চিঠি না দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত আতিয়ার রহমান ও তার লোকজন দিয়ে শিক্ষিকা রেনজুনা আক্তারকে তার অফিস কক্ষে ডেকে গলায় দা ধরে জাতীয় শোক দিবসের চিঠি আওয়ামী লীগের সদস্যদেরকে বাদ দিয়ে জোরপূর্বক লিখে নিতে বাধ্য করে বলে জানা যায়। ওই শিক্ষিকাকে ঘটনাটি ফাঁস না করার শর্ত দিয়ে খুন করার হুমকি দেয় সভাপতি আতিয়ার ও তার লোকজন।

এ ঘটনা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আওয়ামী লীগ কর্মী আরাফাতসহ অন্যান্য সদস্যদের কাছে জানানো হলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি শিক্ষিকা রেনজুনা আক্তার জীবনের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে তাদের কাছে সাহায্য চান। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

এদিকে শিক্ষিকা তার নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিষয়টি ঝিকরগাছার স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলার চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন। পরে ঝিকরগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিদ্যালয়ের সভাপতিসহ তার হুকুমে কাজ করা সোহেল হোসেন এবং তোরাব আলী গাজীর নামে।

লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার সময় বিদ্যালয়ের সভাপতি আতিয়ার রহমান বিদ্যালয়ের দপ্তরি মেহেদী হাসান স্বপনকে দিয়ে ফোন করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রেনজুনা আক্তারকে বিদ্যালয়ে সকাল ৯টার মধ্যে আসতে বলে। যথা সময়ে তিনি চলে আসলে সভাপতি আতিয়ার রহমান ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আওয়ামী লীগ কর্মী আরাফাত রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক আদম শফিউল্লাহকে জাতীয় শোক দিবসের চিঠি দিতে নিষেধ করা হয়েছে বলে লিখিত দিতে বলেন। জঘন্য এ কাজটি করতে পারব না বললে রেনজুনা আক্তারকে নানাবিধ হুমকি ধামকি দিয়ে চাপ প্রয়োগ করে। তাতেও তিনি সম্মত না হওয়ায় এক পর্যায়ে সভাপতি আতিয়ার রহমান এবং তার সঙ্গে থাকা শরিফুল ও আদম সফিউল্লাহ অফিসের দরজা বন্ধ করে রেনজুনা আক্তারের গলায় দা ধরে আওয়ামী কর্মীদের নাম বাদ দিয়ে চিঠি ইস্যু করতে বাধ্য করে তারা। বিষয়টি কাউকে জানালে খুন করার হুমকি দেন রেনজুনা আক্তারকে। বিবেকের তাড়নায় শিক্ষিকা রেনজুনা আক্তার বিষয়টি কমিটির সদস্য আরাফাতসহ অন্যান্যদের জানান।

এ ব্যাপারে কমিটির সদস্য আরাফাত, শরিফুল ও আদম সফিউল্লাহ বলেন, আতিয়ার রহমান একজন বিএনপি কর্মী। সে কখনো চায় না ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী যথাযথভাবে পালিত হোক। আর তাই তিনি অনুষ্ঠান পন্ড করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করে এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে। এমন দেশদ্রোহী আতিয়ার রহমানের কঠিন শাস্তি দাবি করেন তারা।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সভাপতি আতিয়ার রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় এ ঘটনায় ফেঁসে যেতে পারে বলে সে ভয়ে ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছে।

ঝিকরগাছা থানার ওসি (তদন্ত) শেখ আবু হেনা মিলন জানান, বিদ্যালয়ের সভাপতি আতিয়ার ও তার সহযোগীদের নামে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here