চট্টগ্রাম টেস্টে আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশের হারের খবরটি যখন পত্রিকার পাতায় প্রকাশ হয়ে যাবে তখন একই সঙ্গে বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের ফুটবল ম্যাচের খবরটিও পাশাপাশি চোখে পড়বে। টেস্ট ক্রিকেট শেষ না হতেই আজ ফুটবল মাঠে বাংলাদেশ আফগানিস্তান মুখোমুখি হবে। তাজিকিস্তানের দুসানবের রিপাবলিকান সেন্ট্রাল ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। এই খেলাটি হওয়ার কথা ছিল আফগানিস্তানের মাঠে। কারণ তাদের হোম ম্যাচ এটি। কিন্তু আফগানিস্তানে অনিশ্চিত নিরাপত্তার কারণে আফগানরা তাদের ভেন্যু নির্ধারণ করেছে তাজিকিস্তানে। এই দুই দল যখন ফিরতি ম্যাচ খেলবে ঢাকায়। সেটি মার্চে।
কাতার বিশ্বকাপ এবং এশিয়ান কাপ ফুটবলের যৌথ বাছাইয়ে রাউন্ড টু পর্বের এশিয়া অঞ্চলের দ্বিতীয় পর্বের অন্যান্য গ্রুপের বাছাই এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। শুধু ‘ই’ গ্রুপে বাংলাদেশের খেলা আজ শুরু হতে যাচ্ছে। ই গ্রুপে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভারত, কাতার, ওমান লড়াই করছে। খেলা হচ্ছে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে।
আফগানিস্তান এখন ফুটবলে অনেক শক্তিশালী দেশ। আফগান ফুটবলাররা সবাই দেশে অবস্থান করেন না। বেশির ভাগই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে খেলে বেড়ান। অর্থ আয় হয় সঙ্গে নিরাপদেও থাকা যায়। জাতীয় দলের খেলা হলে তারা সরাসরি ক্যাম্পে যোগ দেয়। আফগানিস্তান ২০০৩ সালে (ফিফা র্যাংকিং ১৯৬) ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবার খেলতে আসে। গ্রুপে একটি ম্যাচও জিতেনি। শূন্য হাতে ফেরত গিয়েছিল। সেই আফগানিস্তান ২০১৩ সালে নেপালে হওয়া সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ২০১৩ সালে ফিফার র্যাংকিং ১৪০। এখন ১৪৯। তাদের মূল শক্তিটাই হচ্ছে ইউরাপে থাকা আফগান ফুটবলাররা জাতীয় দলের পার্থক্য গড়ে দিচ্ছেন।
গতকাল দুপুরে তাজিকিস্তানে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে রাখঢাক না করে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন ইরোপীয়ান ফুটবলাররা আফগানিস্তানের বড়ো অস্ত্র। তারাই মূলত ম্যাচের পার্থক্যটা বদলে দেবেন।
আফগানিস্তান তাদের প্রথম খেলায় কাতারের কাছে ৬-০ গোলে হেরেছে। তার মানে এই নয় যে, আফগানিস্তান দুর্বল। আফগানদের শক্তি সামর্থ্য দেখেছেন কাতারের ম্যাচে। ম্যাচ ভিডিও দেখিয়েছেন তার খেলোয়াড়দের। জামাল ভুঁইয়া, সোহেল রানা, জীবন, মতিন, রবিউল, সুফিল, রহমত, বিশ্বনাথ, সুশান্তদের ভিডিও দেখিয়ে যার যার কাজটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। ৯ দিন আগে তাজিকিস্তানে গিয়েছে ফুটবল দল। সেখানে মানিয়ে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো দলটাকে একটা ফ্রেমে আনার জন্য জেমি ডের প্রাণান্তর চেষ্টা। খেলোয়াড়রাও একমুঠো হয়েছেন দেশের জন্য কিছু একটা করবেন। ভালো করেই জানেন আফগানিস্তানের শক্তির ধারটা কেমন। বুঝে শুনে পা ফেলতে চান। কোথাও ভুল হলেই বাংলাদেশের গোল পোস্টে বল ঢুকবে। রক্ষণ আগলে খেলতে হবে।
অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া বলেছেন, ‘শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই লড়াই করব। আমি চাই পুরো পয়েন্ট তুলে নিতে।’ অধিনায়কের মতো পুরো পয়েন্টের কথা না বললেও কোচ জেমি ডে বলেছেন, ‘খুব কঠিন ম্যাচ হবে। তবে হার নয় আমরা একটা রেজাল্ট চাই।’
আফগানিস্তান প্রথম ম্যাচে হেরেছে কাতারের কাছে তাই তারাও আজ বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য মাঠে নামবে। কোচ অনাস দস্তগীর বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে আগেও খেলেছি। জয়-পরাজয় রয়েছে। তাই আমি বলতে পারি না আজ কে ফেভারিট। তবে এটা ঠিক আমাদের বড়ো সুবিধা হচ্ছে খেলোয়াড়রা শারীরিক এবং ট্যাকটিকেল দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।’ আফগান অধিনায়ক ফরসাদ নূর আরেকটু পরিষ্কার করে বললেন, ‘খুব ভালো ম্যাচ হবে। আমাদের আক্রমণভাগ শক্তিশালী। আমরা সেরাটা দিয়ে ম্যাচ জিতব।’