বাংলা খবর ডেস্ক: গত শুক্রবার দেশের ৪২টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে গোলাম সোহরাব দোদুল পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘সাপলুডু’। আরেফিন শুভ ও বিদ্যা সিনহা মিম জুটির দ্বিতীয় চলচ্চিত্র এটি। শুক্রবার এক এক করে রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স, বলাকা, মধুমিতা ও শ্যামলীর প্রেক্ষাগৃহে হাজির হন সিনেমার শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
খবর নিয়ে জানা গেছে, সিনেমাটি এরই মধ্যে সব শ্রেণির দর্শক পছন্দ করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সমালোচকরা সিনেমা নিয়ে ইতিবাচক রিভিউ দিয়েছেন। আর সাধারণ দর্শকের উপচেপড়া ভিড়ের স্থিরচিত্র চোখে পড়ছে সিনেমা সংশ্লিষ্ট অনেকের ফেইসবুক পেইজে।
নিজের সিনেমার এই সাফল্যে খুব খুশি নায়িকা মিম। তিনি বলেন, ‘সুন্দর গল্পের সিনেমা এটি। দর্শকরাও বেশ পছন্দ করছে ছবিটি। প্রতিটি হলেই হাউজফুল চলছে ছবিটি। বিশেষ করে, বিভিন্ন সিনেমা হলে যাওয়ার পর একটা বিষয় উপলব্ধি করলাম। যখন দর্শকরা ছবিতে আমার অভিনয় নিয়ে প্রশংসা করছিল তখন মনে হচ্ছিল দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল আমার। দর্শকরা ছবি দেখার পর সেলফি তুলেছেন, ভালোমন্দ জানতেও চেয়েছেন। দর্শকদের ভালোবাসায় সিক্ত আমি। আজ অনেকে শোর টিকিট পাননি। যারা ছবিটি এখনো দেখেননি তাদেরও দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে চাই। থ্রিলার ঘরানার ছবি এটি।’
ছবিতে শুভ-মিম ছাড়া জাহিদ হাসান, তারিক আনাম খান, সালাহউদ্দিন লাভলু, সুষমা সরকার, মৌসুমী হামিদ, শতাব্দী ওয়াদুদ ও রুনা খানদের উপস্থিতি সবার মধ্যে আলাদা আগ্রহী তৈরি করেছে।
এদিকে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টারে শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের জন্য বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। সিনেমা দেখে অনেক তারকাই তাদের মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন। তারিক আনাম খান সাপলুডু ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্র অভিনয় করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বাস্তব জীবনে তো আমি নেতা নই, অভিনেতা। তবে এই ছবিতে নেতার চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার এই ধরনের চরিত্র সম্পর্কে আগে থেকেই জানা। আমার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড আছে। এখানে মূল কৃতিত্ব পরিচালক ও কলাকুশলীদের। সিনেমার প্রাণ হচ্ছেন দর্শকরা। এই মুহূর্তে দর্শকদের হলে আসতে হবে। আমাদের জন্য ভালো সময় অপেক্ষা করছে।’
সিনেমার আরেক অভিনেতা সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘দর্শকদের দারুণ সাড়া পাচ্ছি। আসলেই এটি টিকিট কেটে দেখার মতো সিনেমা। এক নিঃশ্বাসে দেখার মতো ছবি এটা। একটি পরিপূর্ণ ছবি। যারা বলছেন বাংলাদেশের ছবি কেন ভালো হয় না তারা হলে এসে ছবিটি দেখবেন।’
অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু বলেন, ‘এক কথায় দোদুলের ছবি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এই ছবির মাধ্যমে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যে প্রশংসা না করলেই নয়। সবার অভিনয়ই ভালো হয়েছে। আমি দর্শকদের বলব এরকম ছবি দেখতে হলে আসবেন। আমি এই ছবির সাফল্য কামনা করি।’
অভিনেত্রী মাসুমা রহমান নাবিলা বলেন, ‘সাপলুডু ছবিতে একটা কৌতূহল ছিল। এরপর কী হবে জানার আগ্রহ ছিল। আমার কাছে বেশ মজা লেগেছে। শেষটা দারুণ ছিল। সবার অভিনয়ই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে রুনা খানের অভিনয়টা অসাধারণ হয়েছে। আমি তাকে বলেছি অতিথি চরিত্রেও ফাটিয়ে দিয়েছেন। ছবির গানগুলো অনেক ভালো হয়েছে।’
নিজের সিনেমা নিয়ে রুনা খান বলেন, ‘নিজের সিনেমা বলেই বলছি না, আসলেই আমার খুব ভালো লেগেছে সিনেমাটি।’
সবাই কেন সিনেমাটি পছন্দ করছে জানতে চাইলে রুনা বলেন, ‘প্রথমত, গল্পের গাঁথুনি খুব ভালো। থ্রিলার গল্প দেখতে সবাই ভালোবাসে। দর্শককে ভালো একটি গল্পের মধ্যে ফেলা গেলে শেষ পর্যন্ত দর্শককে সহজেই ধরে রাখা যায়। এমন কাজটি করতে পেরেছেন নির্মাতা গোলাম সোহরাব দোদুল। তিনি অতিরঞ্জিত কোনো গল্প দেখাননি। সমাজের বাস্তব গল্পই দেখিয়েছেন। আমাদের সমাজে অনেকে ভালো মানুষের মুখোশ পরে থাকলেও আসলে তাদের চরিত্র কতটা খারাপ তা গল্পের শেষাংশে ফুটে উঠেছে। দ্বিতীয়ত চরিত্রগুলোর বিন্যাস খুব সুন্দর হয়েছে। আর তৃতীয়ত সবাই যার যার জায়গায় প্রাণবন্ত অভিনয় করেছেন।’
অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া বলেন, ‘ছবিটা অনেক ভালো লেগেছে। পর্দার সামনে যতটুকু সময় ছিলাম, পুরোটা সময় উপভোগ করেছি। সাপলুডু খুব সহজ খেলা, আটকে গেলে নিচে পড়ে যায়। নামের সঙ্গে ছবির বেশ মিল আছে।’