যেভাবে চলতো সেলিমের অনলাইন ক্যাসিনো

0
88

বাংলা খবর ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে ক্যাসিনো ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার সেলিম প্রধান। কিভাবে তিনি এই অনলাইন ক্যাসিনো চালাতেন, আর কিভাবে খেলা চলতো সেই তথ্য এবার উঠে এসেছে।

জানা গেছে, সেলিমের অনলাইন ক্যাসিনো খেলতে হলে একজন জুয়াড়িকে প্রথমে টি-২১ ও পি-২৪ নামের দুটি অ্যাপস ডাউনলোড করতে হতো। পরে অ্যাপস থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী গেম বাছাই করে খেলতে হতো। খেলায় জিতলে জুয়াড়ির দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হতো, আর হারলে টাকা কাটা যেতো।

মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) বিকেলে র‍্যাব-১–এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, অনলাইনে ক্যাসিনো খেলায় অংশগ্রহণ করতে হলে জুয়াড়িকে আগে নির্দিষ্ট ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হতো। অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা রাখতে হতো। খেলায় জিতলে বা হারলে ওই অ্যাকাউন্টে টাকা যোগ হতো বা কাটা যেত। এখন পর্যন্ত র‍্যাব এমন তিনটি ব্যাংকের নাম জানতে পেরেছে যেগুলো হলো যমুনা ব্যাংক, কমার্শিয়াল ব্যাংক ও সিলং ব্যাংক। এই টাকা লেনদেন হওয়ার একটি গেটওয়ের সন্ধান পেয়েছে র‍্যাব। যা দিয়ে মাত্র এক মাসেই প্রায় নয় কোটি টাকা জমা হয়েছে বলে জেনেছি। লেনদেনের এই টাকা পরবর্তীতে সেলিমের দুই সহযোগী আখতারুজ্জামান ও রোকন উত্তোলন করতেন অথবা বিদেশে পাচার করতেন।

র‍্যাব জানিয়েছে, সেলিম প্রধানের অনলাইনে ক্যাসিনো ব্যবসার একজন ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন মি. দো নামের উত্তর কোরিয়ার এক নাগরিক। ক্যাসিনো থেকে যেই টাকা আয় হতো, তা দুজনে সমানভাবে ভাগ করে নিতেন।

১৯৭৩ সালে ঢাকায় জন্ম নেওয়া সেলিম প্রধান তার ভাইয়ের মাধ্যমে একসময়ে জাপানে গিয়ে গাড়ির ব্যবসা শুরু করেন। এরপর সেখান থেকে চলে যান থাইল্যান্ডে। সেই দেশে গিয়ে শিপ ব্রেকিংয়ের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন সেলিম। সেখানেই কোরিয়ান মি. দোর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। দো-ই সেলিমকে অনলাইন ক্যাসিনো খোলার পরামর্শ দেন।

সারওয়ার বিন কাশেম আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে কারাগারে থাকা ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের ক্লোজ ফ্রেন্ড (ঘনিষ্ঠ) ছিলেন সেলিম। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন মামুনকে একটি বিএমডব্লিউ গাড়িও উপহার দিয়েছিলেন। সেলিম বিভিন্ন সময় লন্ডনে টাকা পাঠিয়েছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

এর আগে সোমবার দুপুরে ব্যাংককে পালিয়ে যাওয়ার সময় থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট থেকে সেলিম প্রধানকে আটক করে র‍্যাব। এরপর তার গুলশান ও বনানীর দুটি বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নগদ ২৯ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা, ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সমপরিমাণ ২৩টি দেশের মুদ্রা, ১২টি পাসপোর্ট, ১৩টি ব্যাংকের ৩২টি চেক, ৪৮ বোতল বিদেশি মদ, একটি বড় সার্ভার, চারটি ল্যাপটপ ও দুটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়। এছাড়া সেলিমের দুই সহযোগী আখতারুজ্জামান ও রোকনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here