বন্যায় প্লাবিত দেশের বিভিন্ন এলাকা

0
670

বাংলা খবর ডেস্ক: বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আকস্মিক এই বন্যায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, কুষ্টিয়া, দিনাজপুরসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলের আরও বেশ কিছু গ্রাম বন্যা কবলিত হওয়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ৪২ হাজার মানুষ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মায় পানি বেড়েছে ১১ সেন্টিমিটার। বুধবার দুপুর ১২টায় পদ্মা ২২ দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তা বিপদ সীমার ২৭ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পদ্মা তীরবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর, আলাতুলি, দেবীনগর, চরবাগডাঙ্গা ও শাহজাহানপুর ইউনিয়ন এবং শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা, উজিরপুর, মনাকষা, দুর্লভপুর ও ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নের আরও বেশ কিছু গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে চরমোহনপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলেও বুধবার পানি ঢুকেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান ফৌজদার জানান, চাঁপাইনাববগঞ্জ ও শিবগঞ্জ উপজেলা ১০টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার পরিবারের ৪২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তিনি জানান, বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে, পদ্মার সঙ্গে মহানন্দা নদীতেও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দু’ নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার ব্যাপক পরিমাণ ফসলি জমিও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্যা কবলিত এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।

নাটোরের লালপুর উপজেলার পদ্মা নদীর চরাঞ্চলের কয়েক হাজার একর জমির ফসল ডুবে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় তিন হাজার পরিবার। বুধবার বিকেল পর্যন্ত নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের পদ্মার চরে বসবাসকারী সব মানুষকে সরিয়ে নিতে খুলে দেওয়া হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র গুলি।

স্থানীরা জানান, সোমবার রাতে হঠাৎ করে পদ্মা নদীতে ২/৩ ফুট পানি বেড়ে যায়। ফলে নওসারা সুলতানপুর, দিয়াড়শঙ্করপুর, চাকলা বিনোদপুর, আরাজি বাকনাই, রসুলপুর, বাকনাই, বন্দোবস্ত গোবিন্দপুর, কাগমারি ও লালপুর চরের বসত বাড়িতে পানি উঠেছে। প্রতিনিয়তই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি জানান, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিলমাড়ীয়া, লালপুর এবং ঈশ্বরদী এই তিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ অধিদপ্তরের কাছে ত্রাণ চেয়ে চিঠি দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, চরে বসবাসকারী মানুষরা অন্যত্র সরে গেছে। কেউ কেউ চরের মধ্যেই অবস্থান করছে। আমরা তিনটি ইউনিয়নে আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছি, সেখানে তাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, আকস্মিক বন্যায় ধসের মুখে হুমকিতে পড়েছে শিলাইদহের কুঠিবাড়ি। স্থানীয় এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, নির্মাণকালে গোড়ায় গলদ রেখে কাজ সম্পন্ন করায় গত বছরের ন্যায় একই স্থানে আবারও ধসে গেছে শিলাইদহ কুঠিবাড়ী রক্ষা বাঁধ। বুধবার সকালে শুরু হওয়া ধসে কুমারখালী উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের পূর্বাংশে বাঁধের ৩০ মিটার এলাকা জুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here