সোনাইছড়িতে হচ্ছে ১০ শয্যার হাসপাতাল

0
368

বাংলা খবর ডেস্ক: সীতাকুণ্ডে নির্মিত হচ্ছে ১০ শয্যার আধুনিক একটি সরকারি হাসপাতাল। মা ও শিশুসহ সকলের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হবে এই হাসপাতালে। হাসপাতালের জন্য তিন কোটি টাকা মূল্যের ৫১ শতক জমি দান করেছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শিপব্রেকার্স মাস্টার আবুল কাসেম। সবুজে ঘেরা পাহাড়ের পাদদেশে এই জমির উপর প্রায় ৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে দুইটি বহুতল ভবন।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এই ভবনটি নির্মাণ করছে। উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকায় গত ডিসেম্বর মাস থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতাল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। চলতি মাসে প্রথম তলার ছাদ দেওয়া হবে। আগামী ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে চালু হতে পারে এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। হাসপাতালটি নাম দেওয়া হয়েছে বানু-মোনাফ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র।

২০১৭ সালে জুন মাসে অজ্ঞাত রোগে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ত্রিপুরা পাড়ায় মারা যায় ১১ শিশু। আক্রান্ত হন আরও শতাধিক শিশু। পরবর্তী অজ্ঞাত রোগটি ‘হাম’ বলে নিশ্চিত হন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ওই সময় উঠে আসে ত্রিপুরা পল্লীর বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য না নেওয়ার এবং পাহাড়ে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠির এই মানুষগুলোর আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা না নিয়ে ঝাড়ফুঁক ও কবিরাজি চিকিৎসায় প্রতি ঝুঁকে পড়ার বিষয়টি।

শিশু মৃত্যুর ঘটনার পর সরকারিভাবে ত্রিপুরা পল্লীর পাশে ওই সময় অস্থায়ীভাবে স্থাপিত হয় কমিউনিটি ক্লিনিক। পাহাড়ে নৃ-গোষ্ঠিসহ স্থানীয় বাসিন্দারা চিকিৎসা নিচ্ছেন ওই ক্লিনিক থেকে। প্রতিদিন দেড়শ থেকে দুইশ রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের। তবে সেবা প্রার্থীরা বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এরইমধ্যে সরকারিভাবে মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্ত হয় ওই এলাকায় যদি কেহ জমি দান করেন তা হলে ১০ শয্যার একটি হাসপাতাল করবে সরকার।

বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহমেদ জমি সন্ধান করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। অনেক দানশীল ও ব্যবসায়ীর কাছে ধর্না দিয়েও কোন কাজে হয়নি। পরবর্তীতে চেয়ারম্যানের অনুরোধে জমি দান করতে এগিয়ে আসেন শিল্পপতি মাস্টার মোহাম্মদ আবুল কাসেম। তিনি সরকারি নিয়ম মোতাবেক ৫১শতক জমি রেজিস্টারি করে দেন হাসপাতালের জন্য। রেজিস্টারি খরচও বহন করেন তিনি।

সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহমেদ বলেন, সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্বে পাহাড়ে বসবাস করে চার শতাধিক নৃ-গোষ্ঠি পরিবার। তারা অধুনিক চিকিৎসা সেবা কী জানতো না। কখনো ঠিকাও নেয়নি তারা। ফলে ২০১৭ সালের জুনে ‘হাম’ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ত্রিপুরা পল্লীর ১১ শিশু। সরকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে একটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র করার উদ্যোগ নেন। এতে পাহাড়ে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠিসহ স্থানীয় গর্ভবতী মা, কিশোর কিশোরীসহ শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হবে। থাকবে ঠিকা কার্যক্রমও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here