টাকার দাম কমাতে শুরু করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

0
104

বাংলা খবর ডেস্ক: দীর্ঘদিন বিনিময়মূল্য ধরে রাখার পর মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়াতে টাকার অবমূল্যায়নের এ উদ্যোগ নিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিশ্ব অর্থনীতির ধীরগতির কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশের রপ্তানি খাত কিছুটা হোঁচট খায়। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আগের বছরের তুলনায় রপ্তানি আয় প্রায় ৩ শতাংশ কমে যায়। এছাড়া বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী বিশে^র বিভিন্ন দেশ তাদের স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন করায় চাপের মুখে রয়েছে দেশের রপ্তানি খাত। দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও টাকার অবমূল্যায়নের দাবি জানিয়ে আসছিল। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ডলারের জোগানে রাশ টানা হয়েছে। এ কারণে গত কয়েক দিনে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৮৪ টাকা ৭০ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। যদিও কার্ব মার্কেটে এ হার ৮৬ টাকা ৬০ পয়সা ছাড়িয়ে গেছে। গত ৩ মে থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ডলারের বিনিময় হার ৮৪ টাকা ৫০ পয়সায় আটকে ছিল। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ডলারের বিনিময় হার ছিল ৭৮ টাকা ৭০ পয়সা। ওই সময় থেকে গতকাল পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে টাকা। ২০১৫ সালের অক্টোবরে ডলারের বিনিময়মূল্য ছিল ৭৭ টাকা ৮০ পয়সা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, চলতি প্রথম প্রান্তিকে রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার পর থেকে ব্যাংকগুলো ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমাতে অনুরোধ জানিয়ে আসছে।

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধরে রাখতে বাজারে ৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে চলতি মাসে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ৩ কোটি ডলার বাজারে ছাড়া হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গড়ে প্রতি মাসে ১৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার জোগান দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। টাকার মান ধরে রাখতে গত অর্থবছরে মোট ২৩৪ কোটি ডলার জোগান দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে গত ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির জানান, প্রবাসী আয়ে দুই শতাংশ প্রণোদনার সুফল ইতিমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। রপ্তানি খাতেও প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে টাকার অবমূল্যায়নের প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন গভর্নর।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীন, ভারত, পাকিস্তানসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশ যে হারে তাদের স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন করেছে, তার তুলনায় টাকার শূন্য দশমিক ২ শতাংশ অবমূল্যায়ন কোনো প্রভাবই ফেলবে না। পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া টাকার অবমূল্যায়ন হলে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here